প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / আইয়ুব আলাইহিস সালাম অসুস্থ্যতার কারণে মানুষ তাকে নির্বাসনে পাঠানোর কাহিনী কি সত্য?

আইয়ুব আলাইহিস সালাম অসুস্থ্যতার কারণে মানুষ তাকে নির্বাসনে পাঠানোর কাহিনী কি সত্য?

প্রশ্ন

বক্তাদের মুখে প্রায়ই হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালামের বিষয়ে একটি বয়ান করতে দেখা যায় যে, হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালামের মারাত্মক অসুখ হয়েছিল। তার শরীরে রোগের কারণে পচন ধরে গিয়েছিল। ফলে সেখানে পোকারা কামড়াতো। পোকার কামড়ে তার চামড়া ও গোস্ত খসে খসে পড়ে যেতো। কোন পোকা ক্ষত থেকে পড়ে গেলে আইয়ুব আলাইহিস সালাম সেই পোকা ধরে আবার স্বস্থানে রেখে দিতেন। কেননা, ওসব পোকা তাসবীহ পাঠ করতো।

লোকেরা এমন রোগের কারণে হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালামকে এক পুটলিতে ভরে অনেক দূরে জঙ্গলে ফেলে রেখে আসে।

এমন ঘটনা খুবই আবেগ মিশিয়ে বক্তাদের ওয়াজের মাহফিলে বলতে শোনা যায়, আমার জানার বিষয় হলো: এ ঘটনার সত্যতা কতটুকু? দয়া করে বিস্তারিত জানাবেন।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

নবীদের বিষয়ে একটি মূলনীতি সর্বদা মনে রাখবেন যে, নবী আলাইহিস সালামগণের অসুস্থতাসহ নানাবিধ রোগ ব্যাধি ও বিপদ আপদ এসেছে একথা সত্য। কিন্তু আল্লাহ তাআলা নবীগণকে এমন সব রোগ থেকে মাহফূজ রাখেন, যার কারণে মানুষ তাদেরকে ঘৃণা করে তাচ্ছিল্য করে দূরে সরে যায়।

কারণ, নবীদের দুনিয়াতে পাঠানোর মাকসাদ হলো, মানুষকে দ্বীনের পথে আহবান করা। যদি ঘৃণা করে মানুষ দূরেই সরে যায়, তাহলে তাদেরকে দ্বীনের পথে ডাকবেন কিভাবে? সুতরাং এমন রোগ যা মানুষের স্বভাব ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে এমন রোগব্যাধি কখনোই কোন নবীগণের হয় না। হতে পারে না। এটা নবুওয়াতের শানের খেলাফ।

সুতরাং কিছু মারাত্মক পর্যায়ের মুনকার বর্ণনায় হযরত আইয়ুব আলাইহিস সালামের রোগের কারণে গোস্ত ও চামড়া খসে পড়ার কথা আসলেও তা অগ্রহণযোগ্য। তা বিশ্বাস করা ও বর্ণনা করা জায়েজ নয়। তবে একথা ঠিক যে, হযরত আইয়ুব আলইহিস সালাম অসুস্থ্য হয়েছিলেন। কিন্তু এ অসুস্থ্যতা এমন ছিল না, যার কারণে মানুষ ঘৃণাভরে তার থেকে দূরে গিয়েছিল। [মাআরেফুল কুরআন, উর্দু, মুফতী শফীকৃত-৭/৫২২, ফাতহুল বারী-৬/২২৬, রূহুল মাআনী-২৩/২০৮, ইসরাঈলিয়্যাত ও আছররহু ফী কুতুবিল হাদীস-৩৩৩-৩৩৪, ফাতাওয়া হাক্কানিয়া-২/১৫৩]

তাই আইয়ুব আলাইহিস সালাম অসুস্থ্য ছিলেন একথা বলা যায়। কিন্তু বয়ানের মাঝে মানুষকে মিথ্যা আবেগী করে তুলতে এমন বানোয়াট গল্প বানিয়ে বলা নবীদের শানে গোস্তাখীর শামিল। যা থেকে বিরত থাকা আবশ্যক।

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com 

আরও জানুন

মহিলাদের এনআইডি কার্ড করার জন্য পর পুরুষের সামনে ছবি তুলতে মুখ খোলার হুকুম কী?

প্রশ্ন আসসালামুআলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ৷ আহলে হক্ব মিডিয়া কর্তৃৃৃপক্ষ কে আসন্ন রমজানের শুভাচ্ছে রইল ৷ আমার প্রশ্নটা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *