প্রচ্ছদ / নফল ইবাদত / নফল নামাযের সূচনা কখন থেকে?

নফল নামাযের সূচনা কখন থেকে?

প্রশ্ন

আসসালামুআলাইকুম,
ভাই  আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন
১. নফল নামাজ পড়ার হুকুম কি আল্লাহ্পাকের? যদি আল্লাহর হুকুম হয় তাহলে  কোথায় বলা আছে এবং কখন থেকে পড়া  আরম্ভ হয় ?
২. আমাদের নবীজি কি নফল নামাজ পড়তেন (ফরজ নামাজের পর )?
ভাই, আমি নিয়মিত নফল নামাজ পড়ার চেষ্টা করি। আশা করি আমার প্রশ্ন ২ টার উত্তর দিবেন ইনশাআল্লাহ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

নফল ইবাদত করার নির্দেশ কুরআনে আছে। যেমন কুরআনে ইরশাদ হয়েছে:

فَمَن تَطَوَّعَ خَيْرًا فَهُوَ خَيْرٌ لَّهُ 

এছাড়া কেউ যদি স্বতৎস্ফুর্তভাবে কোন পূণ্যের কাজ (নফল) করে, তবে তার জন্য তা কল্যাণকর। [সূরা বাকারা-১৮৪]

৫ ওয়াক্ত নামায ফরজ হবার আগে থেকেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং সাহাবায়ে কেরামগণ রাজিআল্লাহু আনহুম নফল নামায পড়তেন।

أَنَّ الصَّلَاةَ فُرِضَتْ بِمَكَّةَ لَيْلَةَ الْإِسْرَاءِ، بَلْ فِي الْمَوَاهِبِ عَنْ فَتْحِ الْبَارِي أَنَّهُ كَانَ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – قَبْلَ الْإِسْرَاءِ يُصَلِّي قَطْعًا وَكَذَلِكَ أَصْحَابُهُ، وَلَكِنْ اُخْتُلِفَ هَلْ اُفْتُرِضَ قَبْلَ الْخَمْسِ شَيْءٌ مِنْ الصَّلَاةِ أَمْ لَا؟ فَقِيلَ إنَّ الْفَرْضَ كَانَ صَلَاةً قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا – {وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ قَبْلَ طُلُوعِ الشَّمْسِ وَقَبْلَ غُرُوبِهَا} [طه: 130]-. اهـ (رد المحتار، كتاب الطهارة، كرتاشى-1/90)

ফিক্বহে ইসলামী ও হাদীসের মাঝে ফরজ এবং ওয়াজিব ব্যতিত যত নামায আছে সব নামাযকেই নফল নামায বলে।

তবে এ নফল নামায আবার তিন প্রকার। যথা-

১ সুন্নাতে মুআক্কাদা। এটি মোট বার রাকাআত। ফজরের পর দুই রাকাত। যোহরের পর এবং জুমআর পূর্বে চার রাকআত। যোহরের পর দুই রাকাআত। মাগরিবের পর দুই রাকাআত এবং ইশার নামাযের পর দুই রাকাআত।

এর মাঝে কোন সুন্নাতকেই উজর ছাড়া গোনাহের কাজ।

২ সুন্নাতে গায়রে মুআক্কাদা। এর মাঝে রয়েছে যোহরের পর দুই রাকাআত। আসরের পূর্বে চার রাকাআত। ইশার পূর্বে চার রাকাআত এবং ইশার পর দুই বা চার রাকাআত। এগুলোকে উজর ছাড়া ছেড়ে দেয়া অনুত্তম।

৩ মুস্তাহাব বা মানদূবাত।

যেমন ইশরাক, চাশত, আওয়াবীন, তাহাজ্জুদ এছাড়া যতখুশি পড়া নফল নামায। এসব পড়া সওয়াবের কাজ। না পড়লে কোন সমস্যা নেই।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরজ নামাযের আগে ও পরে সুন্নাতে মুআক্কাদা যেমন পড়তেন, তেমনি গায়রে মুআক্কাদা এবং মুস্তাহাব নামাযও পড়তেন।

সুতরাং আপনিও বেশি বেশি নফল পড়ুন। এটা খুবই উত্তম আমল।

الحاصل أن السنة إن كانت مؤكدة قوية لا يبعد كون تركها مكروها تحريما، وإن كانت غير مؤكدة فتركها مكروة تنزيها، وأما المستحب أو المندوب فينبغى أن لا يكره تركه أصلا ……….. والظاهر أن خلاف الأولى أعم فكل مكروه تنزيها خلاف الأولى ولا عكس، لأن خلاف الأولى قد لا يكون مكروها، حيث لا يكون دليل خاص كترك صلاة الضحى الخ (رد المحتار، زكريا-2/367، كرتاشى-1/653)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com 

আরও জানুন

ইশার নামাযে কিছারে মুফাসসাল পড়লে কি নামাযে কোন সমস্যা আছে?

প্রশ্ন ইশার নামাজে সুন্নাত কিরাত না পড়ে যদি কিছারে  মুফাসসাল থেকে নামাজ পড়ানো হয় তাহলে কি কোনো …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস