প্রচ্ছদ / আধুনিক মাসায়েল / অনলাইনে আম লিচু বিক্রি করে উপার্জন করা কি জায়েজ?

অনলাইনে আম লিচু বিক্রি করে উপার্জন করা কি জায়েজ?

প্রশ্ন

মুফতী সাহেবের কাছে আমার জানার বিষয় হলো: আম ও লিচুর মৌসুমে আমি অনলাইনে বিভিন্ন প্রকার আম ও লিচুর ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন দেই।

তারপর গ্রাহক যখন নির্দিষ্ট প্রকারের আমের অর্ডার করে তখন তাদের কাছে আমি নির্ধারিত দরে তা বিক্রি করি। তারপর রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং দিনাজপুরের বাগান থেকে সেই আম ও লিচু গ্রাহকের কাছে বিক্রি করার মূল্যের চেয়ে কমমূল্যে ক্রয় করে তা গ্রাহকের কাছে পাঠাই।

এর মাঝে যে অতিরিক্ত টাকাটা থাকে, সেটি আমার লাভ। এভাবে ব্যবসা করা কি শরীয়তসম্মত?

যদি শরীয়তসম্মত না হয়, তাহলে কিভাবে করলে তা শরীয়তসম্মত হবে দয়া করে জানালে কৃতার্থ হবো।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

যে পণ্য নিজের হস্তগত নেই, বা মালিকানায় নেই, সে পণ্য বিক্রি করা জায়েজ নয়। সেই হিসেবে আপনারা উপরোক্ত পদ্ধতির ব্যবসা ও লেনদেন জায়েজ নয়।

ব্যবসাটি জায়েজ হবার পদ্ধতি হলো:

গ্রাহক বা ক্রেতাকে বলবে যে, আমার কাছে উক্ত পণ্যটি নেই। আমি উক্ত পণ্যটি সংগ্রহ করে আপনার কাছে এতো টাকায় বিক্রি করতে পারবো। এভাবে কথা বলে, বাগান থেকে উক্ত আম বা লিচু ক্রয় করে গ্রাহকের কাছে বাগানের মালিক থেকে কেনা মূল্যের চেয়ে বেশি দামে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করলে তা জায়েজ হবে।

ক্রয় বিক্রয় চুক্তি নয়, বরং এভাবে কথা বলবে যে, উক্ত পণ্যটি বাগান মালিক থেকে গ্রহণ করে আপনার কাছে প্রেরণ করতে পারবো।

উক্ত পণ্যের মূল্যের অতিরিক্ত প্রতি কেজির বিনিময়ে আমাকে নির্ধারিত হারে পারিশ্রমিক প্রদান করতে হবে।

এভাবে চুক্তি করে উপার্জন করাও জায়েজ আছে।

 

عن حكيم بن حزام رضى الله عنه قال: نهانى رسول الله صلى الله عليه وسلم أن أبيع ماليس عندى (سنن الترمذى، كتاب البيوع، باب ماجاء فى كراهية بيع ماليس عندك، النسخة الهندية-1/233، دار السلام، رقم-1233)

فى الدر المختار: وبيع ماليس فى ملكه لبطلان بيع المعدوم وماله خطر العدم

وفى رد المحتار: قوله لبطلان بيع المعدوم: إذ من شرط المعقود عليه أن يكون موجودا مالا متقوما مملوكا فى نفسه، وأن يكون ملك البائع فيما يبيعه لنفسه، وأن يكون مقدور التسليم (رد المحتار، زكريا-7/246، كرتاشى-5/58-59، البحر الرائق، زكريا-5/435، كويته-5/260، بدائع الصنائع، زكريا-4/339، كرتاشى-5/46، الموسوعة الفقهية الكويتيه-9/159)

 

قال في التتارخانية: وفي الدلال والسمسار يجب أجر المثل، وما تواضعوا عليه أن في كل عشرة دنانير كذا فذاك حرام عليهم. وفي الحاوي: سئل محمد بن سلمة عن أجرة السمسار، فقال: أرجو أنه لا بأس به وإن كان في الأصل فاسدا لكثرة التعامل وكثير من هذا غير جائز، فجوزوه لحاجة الناس إليه كدخول الحمام (رد المحتار، كتاب الإجارة، باب ضمان الأجير، مطلب فى أجرة الدلال-9/87، زكريا)

 

وَلَمْ يَرَ ابْنُ سِيرِينَ، وَعَطَاءٌ، وَإِبْرَاهِيمُ، وَالحَسَنُ بِأَجْرِ السِّمْسَارِ بَأْسًا وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ: ” لاَ بَأْسَ أَنْ يَقُولَ: بِعْ هَذَا الثَّوْبَ، فَمَا زَادَ عَلَى كَذَا وَكَذَا، فَهُوَ لَكَ ” وَقَالَ ابْنُ سِيرِينَ: ” إِذَا قَالَ: بِعْهُ بِكَذَا، فَمَا كَانَ مِنْ رِبْحٍ فَهُوَ لَكَ، أَوْ بَيْنِي وَبَيْنَكَ، فَلاَ بَأْسَ بِهِ ” وَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: المُسْلِمُونَ عِنْدَ شُرُوطِهِمْ (صحيح البخارى-1/303)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com 

আরও জানুন

মহিলাদের এনআইডি কার্ড করার জন্য পর পুরুষের সামনে ছবি তুলতে মুখ খোলার হুকুম কী?

প্রশ্ন আসসালামুআলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ৷ আহলে হক্ব মিডিয়া কর্তৃৃৃপক্ষ কে আসন্ন রমজানের শুভাচ্ছে রইল ৷ আমার প্রশ্নটা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *