প্রচ্ছদ / অপরাধ ও গোনাহ / বিয়ের পূর্বে প্রেম করার হুকুম কী?

বিয়ের পূর্বে প্রেম করার হুকুম কী?

প্রশ্ন

From: আরিফুল রহমান
বিষয়ঃ প্রেম নিয়ে জিজ্ঞাশা।

প্রশ্নঃ
আসসালামুয়ালায়কুম…
আমি চার বছর ধরে একটা মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পরকে আবদ্ধ,
শুরু থেকে আমরা হাদিস সম্পরকে খুব একটা অবগত ছিলাম না…
আমাদের সম্পর্ক টা  খুব না হলেও কিছুটা গভীর হয়ে পড়েছে এই কয়েকটা বছরে।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে কিছু কুরআন হাদিস সম্পর্কে জেনে আমরা একটু দিশাহিন হয়ে পরলাম কোন সমাধান খুজে পাইতেছিনা।
বলে রাখি আমার পরিবার আমাদের সম্পর্কে জানলেও মেয়েটির পরিবার এখন ও জানেনা, আর এই সময় এ জানানো টা মেয়েটির পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না, তার বড় বোন থাকায়।
এই পর্যায়ে মেয়েটিকে ভুলে যাওয়া ও বিবেক থেকে ভাল মনে হয় না।
আমরা এখন কি করতে পারি?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

বিয়ের আগে বেগানা নারীর সাথে প্রেম করা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও নাজায়েজ।

তাই দ্রুত এ হারাম সম্পর্ক থেকে নিজেকে মুক্ত করা আবশ্যক।

যদি বিয়ে করতে ইচ্ছে হয়, তাহলে পারিবারিকভাবে বিয়ে করে নিন। নতুবা অপেক্ষা করুন। কিন্তু বিয়ের আগে যোগাযোগ, কথা ও সাক্ষাৎ সবই হারাম।

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُزِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২]


فَقَالَ عَبْدُ اللَّهِ: كُنَّا مَعَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَبَابًا لاَ نَجِدُ شَيْئًا، فَقَالَ لَنَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ، مَنِ اسْتَطَاعَ البَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ، فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ، وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা রাসূল সাঃ এর সাথে কয়েকজন যুবক ছিলাম। তখন রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে যুবক সম্প্রদায়! তোমাদের মাঝে যে বিবাহের সামর্থ রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা, তা চক্ষুকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে হিফাযত করে। আর যে ব্যক্তি তাতে অক্ষম, সে যেন রোযা রাখে, কেননা, তা যৌন শক্তিকে হ্রাস করে। {বুখারী, হাদীস নং-৫০৬৬,৪৭৭৯}

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com 

আরও জানুন

নামাযে মধ্যে ‘আল্লাহু আকবার’ বলার সময় যদি ‘আকবার’ এর ‘বা’ উচ্চারণের সময় টেনে পড়ে, তাহলে নামায হবে কি?

প্রশ্ন নামাযে মধ্যে ‘আল্লাহু আকবার’ বলার সময় যদি ‘আকবার’ এর ‘বা’ উচ্চারণের সময় টেনে পড়ে, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস