১৪ জন মিলে দুই গরু কুরবানী দেয়া সংক্রান্ত আমাদের ফাতওয়া কি ভুল?

প্রশ্ন

আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ

বিনীত নিবেদন এই যে আমি আরাফাত আশরাফ ঢালকানগর, গেন্ডারিয়া, ঢাকা৷

কুরবানী সংক্রান্ত একটা মাসালা নিয়ে হযরতের খেদমতে উপস্থিত হয়েছি৷

মাসআলা হলো:  আমাদের এলাকায় 14 জন লোক মিলে সমান টাকা দিয়ে কুরবানী করার জন্য মান মূল্যের দুটি গরু কিনেছে৷ তবে একটা গরু সাইজ একটু বড়৷

ফলে সবাই সেটার মধ্যে নিজের ভাগ নেওয়ার চেষ্টা করেছে৷  পর্যন্ত কোন নিরসন না হওয়ায় 14 জনের মধ্যে যারা মুরুব্বী ধরনের ছিল তারা এভাবেই সিদ্ধান্ত দিয়েছে যে, গরু উভয়টাকে জবাই করে গোশত মিশিয়ে 14 ভাগ করা হোক, অতঃপর একেক জন একেক ভাগ করে নিয়ে নেবে এতে সকলের সমান হয়ে যাবে৷

জানার বিষয় হল এভাবে করায় তাদের কোরবানি হয়েছে কিনা ? জানিয়ে বাধিত করবেন৷

নোট : দুই গরুতে 14 ভাগ সংক্রান্ত একটা ফতুয়া গুগোল এ পাওয়া গেছে যেটা হযরতের লেখা ৷  হযরত সেখানে বলেছেন যে কুরবানী হয়ে যাবে৷

তবে নিম্নোক্ত দুইটা ইবারত সেটার বিপরীত মনে হচ্ছে৷

 

وَلَوْ اشْتَرَكَ سَبْعَةٌ فِي خَمْسِ بَقَرَاتٍ أَوْ أَكْثَرَ صَحَّ لِأَنَّ لِكُلٍّ مِنْهُمْ فِي بَقَرَةٍ سُبُعُهَا لَا ثَمَانِيَةُ فِي سَبْعِ بَقَرَاتِ أَوْ أَكْثَرَ، لِأَنَّ كُلَّ بَقَرَةٍ عَلَى ثَمَانِيَةِ أَسْهُمٍ فَلِكُلٍّ مِنْهُمْ أَقَلُّ مِنْ السَّبْعِ وَلَا رِوَايَةَ فِي هَذِهِ الْفُصُولِ وَلَوْ اشْتَرَكَ سَبْعَةٌ فِي سَبْعِ شِيَاهٍ لَا يُجْزِيهِمْ قِيَاسًا لِأَنَّ كُلَّ شَاةٍ بَيْنَهُمْ عَلَى سَبْعَةِ أَسْهُمٍ. وَفِي الِاسْتِحْسَانِ يُجْزِيهِمْ وَكَذَا اثْنَانِ فِي شَاتَيْنِ، وَعَلَيْهِ فَيَنْبَغِي أَنْ يَكُونَ فِي الْأَوَّلِ قِيَاسٌ وَاسْتِحْسَانٌ، وَالْمَذْكُورُ فِيهِ جَوَابُ الْقِيَاسِ بَدَائِعُ 

الفتاوى الشامية – كتاب الأضحية

وَلَوْ اشْتَرَكَ سَبْعَةٌ فِي خَمْسِ بَقَرَاتٍ أَوْ فِي أَكْثَرَ فَذَبَحُوهَا أَجْزَأَهُمْ؛ لِأَنَّ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ فِي كُلِّ بَقَرَةٍ سُبُعَهَا، وَلَوْ ضَحَّوْا بِبَقَرَةٍ وَاحِدَةٍ أَجْزَأَهُمْ فَالْأَكْثَرُ أَوْلَى وَلَوْ اشْتَرَكَ ثَمَانِيَةٌ فِي سَبْعِ بَقَرَاتٍ لَمْ يُجْزِهِمْ؛ لِأَنَّ كُلَّ بَقَرَةٍ بَيْنَهُمْ عَلَى ثَمَانِيَةِ أَسْهُمٍ فَيَكُونُ لِكُلِّ وَاحِدٍ مِنْهُمْ أَنْقَصُ مِنْ السُّبْعِ، وَكَذَلِكَ إذَا كَانُوا عَشَرَةً أَوْ أَكْثَرَ فَهُوَ عَلَى هَذَا.

وَلَوْ اشْتَرَكَ ثَمَانِيَةٌ فِي ثَمَانِيَةٍ مِنْ الْبَقَرِ فَضَحَّوْا بِهَا لَمْ تُجْزِهِمْ؛ لِأَنَّ كُلَّ بَقَرَةٍ تَكُونُ بَيْنَهُمْ عَلَى ثَمَانِيَةِ أَسْهُمٍ، وَكَذَلِكَ إذَا كَانَ الْبَقَرُ أَكْثَرَ لَمْ تُجْزِهِمْ، وَلَا رِوَايَةَ فِي هَذِهِ الْفُصُولِ وَإِنَّمَا قِيلَ إنَّهُ لَا يَجُوزُ بِالْقِيَاسِ.

وَلَوْ اشْتَرَكَ سَبْعَةٌ فِي سَبْعِ شِيَاهٍ بَيْنَهُمْ فَضَحَّوْا بِهَا – الْقِيَاسُ أَنْ لَا تُجْزِئَهُمْ؛ لِأَنَّ كُلَّ شَاةٍ تَكُونُ بَيْنَهُمْ عَلَى سَبْعَةِ أَسْهُمٍ وَفِي الِاسْتِحْسَانِ يُجْزِيهِمْ.

وَكَذَلِكَ لَوْ اشْتَرَى اثْنَانِ شَاتَيْنِ لِلتَّضْحِيَةِ فَضَحَّيَا بِهِمَا بِخِلَافِ عَبْدَيْنِ بَيْنَ اثْنَيْنِ عَلَيْهِمَا كَفَّارَتَانِ فَأَعْتَقَاهُمَا عَنْ كَفَّارَتَيْهِمَا أَنَّهُ لَا يَجُوزُ؛ لِأَنَّ الْأَنْصِبَاءَ تَجْتَمِعُ فِي الشَّاتَيْنِ وَلَا تَجْتَمِعُ فِي الرَّقِيقِ بِدَلِيلِ أَنَّهُ يُجْبَرُ عَلَى الْقِسْمَةِ فِي الشَّاةِ وَلَا يُجْبَرُ فِي الرَّقِيقِ، أَلَا تَرَى أَنَّهَا لَا تُقْسَمُ قِسْمَةَ جَمْعٍ فِي قَوْلِ أَبِي حَنِيفَةَ؟ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – وَعَلَى هَذَا يَنْبَغِي أَنْ يَكُونَ فِي الْأَوَّلِ قِيَاسٌ وَاسْتِحْسَانٌ، وَالْمَذْكُورُ جَوَابُ الْقِيَاسِ.

بدائع الصنائع كتاب الأضحية.

সম্ভবত এই এবারতগুলোর সহি মর্ম বুঝতে পারেনি৷ তাই হযরতের কাছে আবেদন উল্লেখিত মতন দুইটার সহি ব্যাখ্যা শেষ করে কৃতজ্ঞ করবেন৷

হযরতের আগের লেখা ফতওয়া:

১৪ জনে মিলে দুই গরু কুরবানী দিলে কুরবানী হবে কি?

প্রশ্ন

রিদওয়ান

বাখরাবাদ গ্যাস ফিল্ড,

মুরাদনগর, কুমিল্লা।

উস্তাদজি, আল্লাহ্‌ তা’য়ালা আপনাকে ইলমে আমলে বরকত দান করুক। হায়াতে তাইয়্যেবাহ

দান করুক। আপনাদের দ্বারা পরিচালিত ওয়েব সাইটের মাধ্যমে শুধু আমি না বরং আমার পরিবার, আত্মীয়, বন্ধু-বান্ধব সকল-ই অনেক উপকৃত হচ্ছে আলহামদুলিল্লাহ্‌।

আপনার জন্য মন থেকে দোয়া করে থাকি সবাই।

উস্তাদজি, একটা বিষয় খুব ইমারজিন্সি জানা প্রয়োজন, সেটার সূরত হচ্ছে ৮ জন মিলে ২ টা গরু কোরবানি দিবে কিন্তু ভাগ হবে ১৪টা অর্থাৎ কেউ দুই নাম কেউ এক নাম এভাবে ১৪ নাম (১৪ ভাগ) এবং গরু কোরবানির পর দুই গরুর গোশত একসাথে মিক্সড করে তারপর ১৪ ভাগে বণ্টন করা হবে।

এইভাবে দুই গরুতে ১৪ জনের কোরবানি জায়জে হবে কিনা?

(এখানে সকল-ই সমানভাবে টাকা দিবে, যেমন এক ভাগ ১০ হাজার, দুইভাগ ২০ হাজার এইভাবে ১৪ ভাগ)

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

হ্যাঁ, কুরবানী শুদ্ধ হয়ে যাবে। নাজায়েজ হবার কোন কারণ নেই।

 

ذبح المشتراة لها بلا نية الأضحية جازت اكتفاء بالنية عند الشراء (الفتاوى الهندية، كتاب الاضحية، الباب الثانى فى وجوب الأضحية بالنذر وما هو فى معناه-5\294، جديد-5\340، مجمع الأنهر-4\175، دار الكتب بيروت، مصرى قديم-2\522)

وأما الضحايا فلا بد فيها من النية لكن عند الشراء لا عند الذبح (الأشباه والنظائر-40)

والبقر والبعير يجزى عن سبعة إذا كانوا يردون وجه الله، والتقدير يمنع الزيادة، ولا يمنع النقصان (الفتاوى الهندية-5\304)

تذبح بقرة أو بدنة عن سبعة، والقياس أن لا تجوز إلا عن واحد، لأن الإراقة واحدة وهى القربة إلا إنا تركناه بالأثر، وهو ما روى عن جابر رضى الله عنه أنه قال: نحرنا مع رسول الله صلى الله عليه وسلم البقرة عن سبعة والبدنة عن سبعة (مجمع الأنهر، كتاب الأضحية-4\168)

 

দ্বীনের জন্য এ মোহাব্বত আল্লাহ তাআলা আমাদের জান্নাতে যাবার জরিয়া হিসেবে কবুল করুন। আমীন।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উপরোক্ত পদ্ধতিতে কুরবানী করা কিয়াস অনুপাতে জায়েজ নয়। কিন্তু ইস্তিহসান হিসেবে জায়েজ। [জামেউল ফাতাওয়া-৮/১৮৫, ইমদাদুল আহকাম-৪/২৭৩]

আপনার উল্লেখিত ইবারতসমূহে একথাই বলা হয়েছে যে, এ পদ্ধতিতে কিয়াস অনুপাতে কুরবানী শুদ্ধ হয় না। কিন্তু ইস্তিহসানান কুরবানী শুদ্ধ হয়ে যায়।

সুতরাং আমাদের দেয়া ফাতাওয়ার উপর কোন প্রশ্ন বাকি থাকে না। আমাদের ফাতওয়া যথার্থ ও সঠিক।

اشترى سبعة نفر شياه بينهم ولم يسم لكل واحد منهم شاة بعينها فضحوا بها كذلك، فالقياس أن لا يجوز وفى الاستحسان يجوز (الفتاوى الهندية-5\306، جديد-5\353)

لو اختلطت الغنم فضحى كل واحد واحدة ورضوا بذلك جاز (الفتاوى الهندية-5\306، جديد-5\353، رد المحتار-9\477، بدائع الصنائع، زكريا-4\201، كرتاشى-5\67)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী, নরসিংদী।

ইমেইল– [email protected]