প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / ‘তোমাকে আমার জন্য হারাম করলাম’ বলার দ্বারা কি তালাক পতিত হয়?

‘তোমাকে আমার জন্য হারাম করলাম’ বলার দ্বারা কি তালাক পতিত হয়?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহ মাতুল্লাহ!

আমার খুব জরুরি একটা প্রশ্নের উত্তর প্রয়োজন; আমরা গোপনে বিয়ে করি কাজী অফিসে, এখনো কোন পরিবার জানে না বিয়ের কথা।

বিয়েতে আমাদের পরিচিত কোন সাক্ষী ছিলনা কিন্তু কাজী তার অফিসের ২জন লোককে সাক্ষী হিসেবে দিয়েছে।

স্বামীর সাথে ২ মাস ধরে ঝামেলা চলছে।

এতে স্বামী রেগে আমাকে মেসেজে লিখে দিয়েছে যে “তোমাকে আমার জন্য হারাম করলাম” এবং মুখেও বলেছে, আমার প্রশ্ন আমার এখন কি করা উচিত? আমি বিচ্ছেদ চাই না কিন্তু স্বামী বার বার বলছে তোমার সাথে সব হারাম হয়ে গেছে।

দয়া করে একটু দ্রুত জানাবেন কারন স্বামী কিছু দিনের মধ্যে ডির্ভোস পেপার সাইন করতে চায়।

 

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

মেসেজ ও মুখে বলার দ্বারা আপনার উপর দুই তালাকে বাইন পতিত হয়ে গেছে।

এখন আপনার সাথে তার বৈবাহিক সম্পর্ক নেই। তার সাথে ঘর সংসার করতে হলে আপনাকে তার সাথে আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। এছাড়া কোন উপায় নেই।

যদি আপনারা শরয়ী নিয়মে তথা দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মুসলিম সাক্ষীর সামনে ইজাব ও কবুলের মাধ্যমে বিয়ে করে নেন, তাহলে পরবর্তীতে আপনার স্বামী আর মাত্র এক তালাকের মালিক থাকবেন।

যদি পরবর্তীতে এক তালাকও প্রদান করেন, তাহলে তিন তালাকে মুগাল্লাজা হিসেবে আপনি তার উপর হারাম হয়ে যাবেন। তখন আর বিয়ে করলেও বিবাহ বৈধ হবে না।

উপদেশ:

এভাবে পিতা মাতাকে না জানিয়ে পালিয়ে ও লুকিয়ে বিয়ে করা ভালো নয়। এসব সংসার অধিকাংশই টেকশই হয় না। যে বিয়েতে বাবা মা ও মুরব্বীদের দুআ থাকে না। সেখানে রব্বে কারীমের অনুগ্রহ ও রহমাত থাকে না। এ কারণে এসব আবেগের বিয়ে বেশিরভাগই অল্প সময়ে ভেঙ্গে যায়।

আপনার স্বামী যেহেতু বলছেন আপনি হারাম হয়ে গেছেন। আর আসলেই হারাম হয়ে গেছেন। তাই যদি সম্ভব হয়, তাহলে তার সাথে আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।

এবার অন্তত পরিবারকে জানিয়ে বিয়ে করুন। যাতে করে অহেতুক যেন স্বামী আপনাকে তালাক দেবার হুমকি দিতে না পারে।

أنت على حرام، والفتاوى أنه يقع به البائن، وإن لم ينو لغلبة الاستعمال فى هذه البلاد (تاتارخانية-4\448، رقم: 6637)

لو قال لها: أنت على حرام، والحرام عنده طلاق وقع إن لم ينو (البحر الرائق، زكريا-3\523، كويته-3\300)

أفتى المتأخرون فى “انت على حرام” بأنه طلاق بائن للعرف بلا نية (رد المحتار، زكريا-4\466، كرتاشى-3\253)

الصريح يلحق الصريح، ويلحق البائن بشرط العدة (الدر المختار مع رد المحتار، زكريا-4\540، كرتاشى-3\306)

فإذا أبان امرأته ثم طلقها ثلاثا فى العدة وقع (رد المحتار، زكريا-4\541، كرتاشى-3\307، البحر الرائق، زكريا-3\531)

والصريح يلحق البائن… قال للمبانة: أنت طالق بائن يقع أخرى (الفتاوى البزازية-1\113، الفتاوى التاتارخانية-4\523، رقم-6822)

ينكح مباينته بما دون الثلاث فى العدة وبعدها بالإجماع (تنوير الأبصار مع رد المحتار-3\409)

أذا كان الطلاق بائنا دون الثلاث فله أن يتزوجها فى العدة وبعد انقضائها (الفتاوى الهندية-1\472)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

ভুলে আপন ভাগ্নির মেয়েকে বিয়ে করে সন্তান হয়ে গেলে করণীয় কী?

প্রশ্ন আসসালামুওয়ালাইকুম উস্তাজ, আমার আত্নীয় ২০১৮ সালে বিয়ে করেন। অজ্ঞতা বসত আপন ভাগ্নির মেয়েকে বিয়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *