প্রচ্ছদ / ইলম/জ্ঞান/শব্দার্থ / নফসের জিহাদকারীকে মুজাহিদ ও তাদের আমীরকে ‘আমীরুল মুজাহিদীন’ বলা যাবে কি?

নফসের জিহাদকারীকে মুজাহিদ ও তাদের আমীরকে ‘আমীরুল মুজাহিদীন’ বলা যাবে কি?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম।

আমার প্রশ্ন হল, হাদীসের মাঝে আসছে যে, المجاهد من جاهد نفسه فى طاعة الله অর্থাৎ যিনি আল্লাহর আনুগত্যে নিজের নফসের সাথে জিহাদ করে তিনি মুজাহিদ।

সুতরাং আত্মার পরিশুদ্ধায়নের জন্য যারা কোন হক্কানী পীর সাহেবের মুরীদ হন, তাদেরকে মুজাহিদ এবং তাদের পীর সাহেবকে আমীরুল মুজাহিদীন বলা যাবে না কেন?

প্রশ্নকর্তা: নাম ও ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

যে হাদীসটি দিয়ে দলীল দেয়া হচ্ছে সেটি দিয়ে এভাবে দলীল দেয়া সঠিক নয়। কারণ, উক্ত হাদীসের মাঝে আরো আসছে যে,

والمهاجر من هجر الخطايا والذنوب তথা ‘মুহাজির’ ঐ ব্যক্তি, যিনি গোনাহ ও পাপ থেকে দূরে থাকে।

একথাতো সকলেরই জানা যে, গোনাহ ছেড়ে দেয়াকে পরিভাষায় ‘হিজরত’ এবং গোনাহ বর্জনকারীকে ‘মুহাজির’ বলা হয় না।

সুতরাং এ হাদীসের দ্বারা এভাবে দলীল দেয়া সঠিক নয়।

‘জিহাদ’, ‘মুজাহিদ’ এবং ‘আমীরুল মুজাহিদীন’ ইত্যাদি শব্দগুলো শরীয়তের বিশেষ পরিভাষা।

যখন আমভাবে ‘জিহাদ’ শব্দ বলা হয়, তখন এর দ্বারা উরফে আম তথা সাধারণভাবে ‘জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ’ তথা আল্লাহর রাস্তায় সশস্ত্র সংগ্রামকেই বুঝায়।

যেহেতু উরফে আমে ‘জিহাদ, মুজাহিদ বা আমীরুল মুজাহিদীন’ শব্দ বলার, বা লেখার এবং শোনার দ্বারা সাধারণভাবে জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ বা আল্লাহর রাস্তায় সশস্ত্র সংগ্রামের দিকেই দৃষ্টি যায়, এ কারণে এ শব্দগুলোকে অন্য অর্থে ব্যবহারে সাধারণ মুসলমানদের মাঝে ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হওয়ার শংকা রয়েছে।

তাই এ পরিভাষা আমভাবে ‘জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ’ ছাড়া অন্য অর্থের জন্য ব্যবহার পরিহার করা উচিত।

তবে যদি সাধারণ মুসলমানদের মাঝে এমন শংকা না থাকে।  সকলেই এ বিষয়ে বুঝতে পারে যে, জিহাদ, মুজাহিদ এবং আমীরুল মুজাহিদীন বলতে এখানে এর হাকীকী অর্থে জিহাদ উদ্দেশ্য নয়। বরং পরবর্তী বা দ্বিতীয় অর্থ বুঝাতে তারা ব্যবহার করছেন। তাহলে ব্যবহারের সুযোগ আছে।

فَضَالَةُ بْنُ عُبَيْدٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ: ” أَلَا أُخْبِرُكُمْ بِالْمُؤْمِنِ؟ مَنْ أَمِنَهُ النَّاسُ عَلَى أَمْوَالِهِمْ وَأَنْفُسِهِمْ، وَالْمُسْلِمُ مَنْ سَلِمَ النَّاسُ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ، وَالْمُجَاهِدُ مَنْ جَاهَدَ نَفْسَهُ فِي طَاعَةِ اللهِ، وَالْمُهَاجِرُ مَنْ هَجَرَ الْخَطَايَا وَالذَّنُوبَ ” (مسند احمد، رقم- 23958، صحيح ابن حبان، رقم- 4862، المعجم الكبير للطبرانى، رقم- 796، مستدرك على الصحيحين، رقم- 24، شعب الإيمان للبيهقى، رقم- 10611)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *