প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / বর কনে ও একজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে কাজী বিবাহ পড়ালে বিয়ে হবে কি?

বর কনে ও একজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে কাজী বিবাহ পড়ালে বিয়ে হবে কি?

প্রশ্ন

আসসালমুআলাইকুম হুজুর।

আমি ও আমার স্ত্রী সম্পর্কে ছিলাম। আমাদের মনে হতো যে আমরা গুনাহ করছি।  তাই আমরা একে অপরের সঙ্গে পরামর্শ করে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেই।

তবে বিয়েটা শরীয়ত সম্মতভাবে করতে চাই এবং এই বিষয়ে আমরা আমাদের উভয় ফ্যামিলির কাউকেই জানাতে চাইনি। আমাদের ইচ্ছা ছিল আমরা পড়া লেখা শেষ করে তাদের জানাবো।

অতঃপর আমি আমার একজন বন্ধুকে জানাই, সে কওমী মাদ্রাসায় তখন দাওরায়ে হাদীস পড়ছিলো।

সে বলে ঠিক আছে আমাদের হানাফী মাযহাব এ করা যায়।

অতঃপর তাকে আমাদের বিবাহ পরিয়ে দিতে বলি।

সে রাজি হয় সে বলে ২ জন পুরুষ সাক্ষী লাগবে। আর মোহরানা কত হবে?

তখন আমি বলি আমার কাছে টাকা নাই। কেননা আমি তখনও ছাত্র।

পরে কাজী বলে টাকা বাকি থাকলেও হবে। কিন্তু কিছু দিতে হয়।

পরে আমি এক লক্ষ টাকা কাবিন করার প্রস্তাব দেই। তার মধ্যে একশত টাকা নগদ দেয়ার কথা বলি, আর বাকি টাকা পরে দিবো বলি।

আর এতে কনেও রাজি হয়।

তাই আমি , কনে , একজন পুরুষ সাক্ষী ও কাজী সাহেব এই চার জন বিবাহের উদ্দেশ্যে একটা নির্জন জায়গায় যাই।

অতঃপর সাক্ষী একজন হওয়ায় আমদের বিবাহ এর জন্য এক জন পুরুষ সাক্ষীর সাথে কাজী সাহেব যিনি বিবাহ পরাইছেন তিনি নিজে দ্বিতীয় সাক্ষী হইছেন।

অতঃপর আমরা বিবাহ করতে রাজি কিনা আমাদের উভয়কেই জিজ্ঞেস করা হয়, আমরা রাজি আছি বলি।

অতঃপর এইভাবে আমাদের বিয়ে পড়ায় যে,

(আমার  নাম ও আমার স্ত্রীর নাম উহ্য রেখেছি ।

উদাহণস্বরূপ  অন্য দুই টা  নাম লিখলাম যা দ্বারা  আমি ও আমর স্ত্রী ওই বুঝালম এখানে। ) তিনি বলেন, আমির হোসেন এর ছেলে সফিউল্লাহ এর সাথে   সাখওয়াত হোসেন এর মেয়ে জান্নাত এর  ১ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে নগদ একশত টাকা দিয়ে প্রথম সাক্ষী ওয়াহিদ এবং দ্বিতীয় সাক্ষী মাহফুজ ( কাজী নিজেই তার নাম বলে)  হয়ে  বিবাহের প্রস্তাব দেয়া হইলো ।

পরে কনে কে জিজ্ঞেস করা হয় তুমি কি রাজি? কনে বলে জ্বি আলহামদুলিল্লাহ।

এই বলে কাজী বলে বিবাহ হয়ে গেছে। এখন আমরা স্বামী স্ত্রী।

কিন্তু বিবাহ শেষে সে খুৎবা দেই নি। তার মুখস্ত না থাকায় এবং সাথে কোনো বই না থাকায়।

 

কিছুদিন পর আমাকে আমার স্ত্রী বলে যে, বিবাহের আগে তার অজু ছিল না। তাই তিনি বলে যে বিবাহ হইছে কিনা?

অতঃপর আমরা একে অপরকে স্বামী-স্ত্রী জেনে আমার স্ত্রী তার ফ্যামিলি এর সাথে আমি আমার ফ্যামিলির সাথে থাকতে থাকি।

কিন্তু আমাদের বিয়ের বিষয় এ আমাদের উভয় ফ্যামিলির কেউ এখনও জানে না।

তাই আমাদের ইচ্ছা, আমরা পড়ালেখা শেষ করে আমাদের উভয় ফ্যামিলিকে রাজি করিয়ে আবার নতুন করে আমরা বিয়ে করবো।

আর এতে আমাদের উভয় ফ্যামিলির সকলে উপস্থিত থাকবে।

এমতাবস্থায় কি আমাদের নতুন করে মোহরানা দিতে হবে? নাকি শুধু আমাদের বিবাহের খবর তাদের জানিয়ে দিবো?

 

এখন‌ আমার প্রশ্ন:

১) আমাদের বিয়েটা কি হয়েছে?

২) যদি বিয়ে হয় আমরা কি আবার ফ্যামিলির মত নিয়ে  বিবাহ করতে পারবো তাদের উপস্থিতিতে ?

আর এতে কি নতুন কাবিন লাগবে? নাকি আর বিবাহ করতে হবে না শুধু জানিয়ে দিলেই হবে?

৩) দয়া করে সম্পূর্ণ বিষয়টি পড়ে, এর সবগুলো মাসআলা দেয়ার জন্য হুজুর কে সবিনয় অনুরোধ করছি।

হুজুর এর কাছে আমার আকুল আবেদন এই যে আমার এই বিষয় টি খুব দ্রুত সমাধান দিয়ে আমাকে বাধিত করবেন । আল্লাহ্ আপনাকে উত্তম বিনিময় দেক আমিন।

আসসালমুআলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উপরোক্ত বিবরণ অনুপাতে আপনাদের বিবাহ শুদ্ধ হয়ে গেছে।

সুতরাং দ্বিতীয়বার বিবাহ করার প্রয়োজন নেই।

ومن امر رجلا بأن يزوج ابنته الصغيرة، فزوجها والأب حاضر بشهادة رجل واحد سواهما جاز النكاح (هداية، كتاب النكاح-2\3-7، الدر المختار مع الشامى-4\94، هندية-1\268)

 ويشترط العدد فلا ينعقد النكاح بشاهد واحد (هندية-1\267)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia201[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *