প্রচ্ছদ / কুরবানী/জবেহ/আকীকা / কুরবানীর নিয়তে পশু ক্রয় করার পর তা কুরবানী না দিয়ে অন্য পশু দিতে পারবে কি?

কুরবানীর নিয়তে পশু ক্রয় করার পর তা কুরবানী না দিয়ে অন্য পশু দিতে পারবে কি?

প্রশ্ন

যদি কোন ব্যক্তি কুরবানীর উদ্দেশ্যে কেনা পশুটা রেখে নিজের জন্য পালতে চায়,# অথবা আগামী বছর এটাকে কুরবানী করবে এই নিয়ত করে, এবং নতুন একটা পশু কিনে কুরবানী দিতে চায়, তাহলে তার
হুকুম কি??
# ক্রয় কৃত যেই পশুটা পালনের জন্য অথবা আগামী বছর কুরবানীর জন্য রেখে দিতে চাইছে, তার থেকে কোন বাচ্চা হলে তার হুকুম কি হবে?

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

যার উপর কুরবানী ওয়াজিব এমন ব্যক্তি যদি কুরবানীর পশু ক্রয় করে সেটি নিজের জন্য রেখে দিতে চায়, কিংবা পরের বছর কুরবানী দেবার নিয়ত করে। আর এ বছর অন্য আরেকটি পশু ক্রয় করে কুরবানী দেয়।

তাহলে এটি তার জন্য জায়েজ আছে।

যেহেতু পশুটি নিজের জন্য রাখা জায়েজ। তাই এর থেকে উপকার অর্জন যেমন দুধ খাওয়া এবং প্রসব হওয়া বাচ্চা রাখা ইত্যাদি সবই জায়েজ।

তবে এক্ষেত্রে অবশ্য এ বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে যে, যেন কুরবানীর জন্য ক্রয়কৃত দ্বিতীয় পশুটি প্রথম পশুর সমমানের, বা তার চেয়ে উত্তম হতে হবে।

যদি তার চেয়ে কমমূল্যের হয়, তাহলে প্রথমটির চেয়ে যত টাকা কম, তত টাকা দান করে দিতে হবে।

কিন্তু যার উপর কুরবানী ওয়াজিব ছিল না, এমন ব্যক্তি কুরবানী পশু ক্রয় করার দ্বারা এটি “নজর” এর হুকুমে চলে আসে। তাই হুবহু উক্ত পশুটি কুরবানী করা তার উপর আবশ্যক। সেই পশুটি রেখে দেয়া তার জন্য জায়েজ নয়।

এ বছর কুরবানী না দিলে কুরবানীর দিন চলে গেলে উক্ত পশুটিকে দান করে দেয়া আবশ্যক।

তার থেকে কোন প্রকার উপকার গ্রহণ জায়েজ নয়।

وأما الذى يجب على الفقير دون الغنى فالمشترى للأضحية إذا كان المشترى فقيرا، بأن اشترى فقير شاة ينوى أن يضحى بها……. وإن كان غنيا لا يجب عليه بالشراء شيء بالاتفاق، (بدائع الصنائع، كتاب الأضحية-4/192، هندية-5/291، جديد-5/336)

إذا اشترى أضحية وباعها حتى جاز البيع فى ظاهر رواية أصحابنا: ثم قال اشترى مثلها وضحى بها فإن كانت الثانية مثل الأولى أو خيرا منها جاز ولا يلزمه شيء آخر وإن كانت الثانية شرا من الأولى فعليه أن يتصدق بفضل القيمتين (الفتاوى التاتارخانية-17/414، رقم-27687، المحيط البرهانى-8/460، رقم-10792)

وَإِذَا اشْتَرَى أُضْحِيَّةً، ثُمَّ بَاعَهَا فَاشْتَرَى مِثْلَهَا فَلَا بَأْسَ بِذَلِكَ)؛……. وَالْأَصْلُ فِيهِ مَا رُوِيَ أَنَّ «النَّبِيَّ – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ – دَفَعَ دِينَارًا إلَى حَكِيمِ بْنِ حِزَامٍ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ – لِيَشْتَرِيَ لَهُ شَاةً لِلْأُضْحِيَّةِ فَاشْتَرَى شَاةً، ثُمَّ بَاعَهَا بِدِينَارَيْنِ، ثُمَّ اشْتَرَى شَاةً بِدِينَارٍ وَجَاءَ بِالشَّاةِ وَالدِّينَارِ إلَى رَسُولِ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – فَأَخْبَرَهُ بِذَلِكَ. فَقَالَ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – بَارَكَ اللَّهُ فِي صَفْقَتِك أَمَّا الشَّاةُ فَضَحِّ بِهَا وَأَمَّا الدِّينَارُ فَتَصَدَّقْ بِهِ» فَقَدْ جَوَّزَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – بَيْعَهُ بَعْدَ مَا اشْتَرَاهَا لِلْأُضْحِيَّةِ، وَإِنْ كَانَتْ الثَّانِيَةُ شَرًّا مِنْ الْأُولَى، وَقَدْ كَانَ أَوْجَبَ الْأُولَى فَتَصَدَّقَ بِالْفَضْلِ فِيمَا بَيْنَ الْقِيمَتَيْنِ (المبسوط للسرخسى-12/13)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

0Shares

আরও জানুন

‘সুন্দর সম্পর্ক কেন নষ্ট করে দিলা’ বলার দ্বারা কি স্ত্রী তালাক হয়ে যায়?

প্রশ্ন আস্সালামুআলাইকুম মুফতি সাহেব, এই প্রশ্ন কয়েকটা আগেও করেছিলাম, উত্তর না পেয়ে আবার করছি| ওয়াসওয়াসা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *