প্রশ্ন
আমি ইয়াছিন শরিফ,আমার বয়স ১৮।
ভাই আমার একটা সম্পর্ক আছে,সেও সম বয়স এর।
এখন আমার বিয়ে করার দরকার,শরীয়ত অনুযায়ী আমি তারে সহজে বিয়ে করতে চাই।তবে এই সম্পর্কে এখন আমারা পরিবার কে জানাতে পারবো না।
এখন আমি কী করি?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
বিয়ের পূর্বে বেগানা ছেলে মেয়ের পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ, অপ্রয়োজনীয় কথা বলার সবই হারাম। তাই এসব থেকে বিরত থাকতে হবে।
বিয়ের প্রয়োজন বোধ করলে পারিবারিকভাবে বিয়ে করাই সবচে’ উত্তম। যাতে করে পরবর্তীতে কোন প্রকার সমস্যা না হয়। সেই সাথে সম্পর্কটি ভেঙ্গে না যায়।
আপনাদের বয়স কম হওয়ায় নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিতে গেলে হয়তো সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারবেন না। অভিজ্ঞতা না থাকায় ভুল সিদ্ধান্তও গ্রহণ করতে পারেন। যা আপনার বাকি জীবনের জন্য শুধু আফসোসেরই কারণ হয়ে থাকবে। তাই চিন্তা ভাবনা করে, মুরুব্বীদের সাথে আলোচনা করে এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত।
তবে যদি এমতাবস্থায়ও আপনারা পরিবারকে না জানিয়ে লুকিয়ে বিয়ে করতে ফেলতে চান, তাহলে অবশ্যই তা কাজী অফিসে করবেন। সেই সাথে রেজিষ্ট্রার করিয়ে রাখবেন। এটি শরীয়তে আবশ্যক নয়। কিন্তু সামাজিক হিসেবে এটি জরুরী। কারণ যেন, দু’দিন পর স্ত্রীকে ভাল না লাগলে বিয়ে রেজিষ্টার হয়নি বলে ছেড়ে দেবার ছুতো না বের করা যায়। যদিও দুইজন স্বাক্ষীর সামনে প্রস্তাব ও কবুল বলার দ্বারাই বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। কিন্তু পারিপার্শিক খারাবী থেকে বিয়েকে রক্ষা করার জন্য বর্তমানে রেজিষ্টার করিয়ে নেয়া জরুরী।
বাকি সিদ্ধান্ত আপনার হাতে। জাযাকাল্লাহ।
فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)
অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}
قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ذَلِكَ أَزْكَى لَهُمْ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ (30) وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ الخ
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে-“মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের চক্ষুকে অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। এটাই তাদের জন্য পবিত্রতম পন্থা। তারা যা করে নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে সম্যক অবহিত। আর মুমিন নারীদের বলুন তারা যেন তাদের চক্ষুকে অবনত রাখে ও তাদের লজ্জাস্থানকে হিফাযত করে। {সূরা নূর-৩০,৩১}
يَا نِسَاءَ النَّبِيِّ لَسْتُنَّ كَأَحَدٍ مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى
হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে বিনম্র হয়ে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে পৌরষত্ব আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে। {সূরা আহযাব-৩২}
عن عقبة بن عامر أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال ( إياكم والدخول على النساء ) . فقال رجل من الأنصار يا رسول الله أفرأيت الحمو ؟ قال ( الحمو الموت )
হযরত ওকবা বিন আমের রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-“তোমরা মহিলাদের নিকট [একাকি] প্রবেশ করা থেকে বিরত থাক। আনসারদের মধ্যে এক ব্যক্তি বলল-‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! দেবরের ব্যাপারে কি নির্দেশ?’ তিনি বললেন-‘দেবরতো মৃত্যুতুল্য’”। {সহীহ বুখারী, হাদিস নং-৪৯৩৪, সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-৫৮০৩, আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৭৩৬, সুনানে বায়হাকী, হাদীস নং-১৩২৯৬, সুনানে তিরমিযী, হাদীস নং-১১৭১, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৬৪২, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৯২১৬, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৫৫৮৮, মুসনাদে আবি আওয়ানা, হাদীস নং-৪০৩২, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৭৩৯৬, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-১৭৯৫৪}
عن ابن عمر قال : خطبنا عمر بالجابية الخ ألا لا يخلون رجل بامرأة إلا كان ثالثهما الشيطان
হযরত ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-যখনই কোন পুরুষ পর নারীর সাথে নির্জনে দেখা করে তখনই শয়তান সেখানে তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত হয়। {সুনানে তিরমিযী, হাদিস নং-২১৬৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদিস নং-৫৫৮৬}
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
Islam is the best
amar proshner jobab din,,, khubi proyujon.