প্রশ্নঃ
মুহতারাম, আমার বিয়ে হয়েছে তিন বৎসর হলো, কিন্তু আল্লাহ তা’আলা আমাকে কোন সন্তান দান করেন নি। শুনেছি দত্তক নেওয়া যায়। জানার বিষয় হলো,ইসলামি শরীয়তে দত্তক নেওয়ার বিধান কি? এবং তার সাথে শরয়ী পর্দা ওয়াজিব কী না? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।
ওয়াস সালামু আলাইকুম।
নিবেদক
জান্নাতুল ফেরদৌস
এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা।
ওয়াআলাইকুমুস সালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا ومصليا ومسلما
উত্তরঃ
হ্যাঁ, দত্তক নেয়া জায়েজ আছে। ছেলে মেয়ে আল্লাহর বিশেষ এক নেআমত। তিনি যাকে ইচ্ছে দান করেন। যাকে ইচ্ছে বন্ধা রাখেন।
আল্লাহ তাআলা বলেন, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যা চান সৃষ্টি করেন। যাকে চান কন্যা দেন এবং যাকে চান পুত্র দেন। অথবা পুত্র ও কন্যা উভয় মিলিয়ে দেন। আবার যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।
(আশ্-শূরা -৪৯- ৫০)
সুতরাং যাকে আল্লাহ তা’আলা ছেলে মেয়ে দান করেনি তার জন্য দত্তক নেয়া জায়েজ আছে।
তবে এক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবেঃ
১- বাচ্চার সম্পর্কঃ
দত্তক বাচ্চা আসল বাচ্চার মতো নয়। কারণ উভয়ের জন্য অনেক ক্ষেত্রে শরয়ী হুকুম আহকাম ভিন্ন। এজন্য শর্ত হলো, দত্তক সন্তানের আসল পিতা-মাতার দিকে তার বংশ সম্পর্ক বহাল রাখা। এবং তার জন্ম সনদ, পরিচয় পত্র, ভোটার আইডি, শিক্ষা সনদ, বিবাহ নামা ইত্যাদিতে তার আসল মা-বাবার দিকে সম্পর্ক উল্লেখ করাও আবশ্যক।
২- মাহরামদের সাথে পর্দাঃ
যদি দত্তক লালনকারী মা-বাবার সাথে দত্তকের মাহরামের সম্পর্ক না থাকে, তথা বাচ্চা থাকাকালীন নির্দিষ্ট সময়ে দুধ পান না করিয়ে থাকে, তাহলে দত্তক প্রাপ্ত বয়স্ক হলে তার সাথে উক্ত মা-বাবার পর্দা করা ফরজ।
শুধু লালনপালনের দ্বারা পর্দার বিধান রহিত হবে না। অবশ্যই যদি দত্তক লালনকারী হোক সে নিজে অথবা তার বোন বা মেয়ে ইত্যাদি তাকে দুধপানের নির্দিষ্ট সময়ে দুধ পান করিয়ে থাকে, তাহলে তাদের সাথে পর্দার বিধান রহিত হয়ে যাবে।
৩- মিরাসের বিধানঃ
মানুষের মৃত্যুর পর তার রেখে যাওয়া সম্পদ শরয়ী নিয়ম-কানুনের ভিত্তিতে তার মূল উত্তরাধিকারদের মাঝে বন্টন হয়। দত্তকের এতে কোন অংশ থাকবেনা। অবশ্যই লালনপালনকারী মাতা-পিতা চাইলে তার জন্য এক তৃতীয়াংশ সম্পদ ওসিয়ত করতে পারে। অথবা জীবিত অবস্থায় কিছু দিতে চাইলেও পারবে।
:المستندات الشرعية
قال الله تعالى في سورة( الشورى، رقم الآية ٤٩–٥٠): لِلَّهِ مُلْكُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ يَخْلُقُ مَا يَشَاءُ يَهَبُ لِمَنْ يَشَاءُ إِنَاثًا وَيَهَبُ لِمَنْ يَشَاءُ الذُّكُورَ * أَوْ يُزَوِّجُهُمْ ذُكْرَانًا وَإِنَاثًا وَيَجْعَلُ مَنْ يَشَاءُ عَقِيمًا إِنَّهُ عَلِيمٌ قَدِير
وقال تعالى في سورة ( الأحزاب ، رقم الآية ٤)
مَّا جَعَلَ اللَّهُ لِرَجُلٍ مِّن قَلْبَيْنِ فِي جَوْفِهِ ۚ وَمَا جَعَلَ أَزْوَاجَكُمُ اللَّائِي تُظَاهِرُونَ مِنْهُنَّ أُمَّهَاتِكُمْ ۚ وَمَا جَعَلَ أَدْعِيَاءَكُمْ أَبْنَاءَكُمْ ۚ ذَٰلِكُمْ قَوْلُكُم بِأَفْوَاهِكُمْ ۖ وَاللَّهُ يَقُولُ الْحَقَّ وَهُوَ يَهْدِي السَّبِيل
وقال تعالى في (سورة الأحزاب، رقم الایة:٥)
اُدْعُوْهُمْ لِاٰبَآىٕهِمْ هُوَ اَقْسَطُ عِنْدَ اللّٰهِۚ-فَاِنْ لَّمْ تَعْلَمُوْۤا اٰبَآءَهُمْ فَاِخْوَانُكُمْ فِی الدِّیْنِ وَ مَوَالِیْكُمْؕ-وَ لَیْسَ عَلَیْكُمْ جُنَاحٌ فِیْمَاۤ اَخْطَاْتُمْ بِهٖۙ-وَ لٰكِنْ مَّا تَعَمَّدَتْ قُلُوْبُكُمْؕ-وَ كَانَ اللّٰهُ غَفُوْرًا رَّحِیْمًا
جاء في “الدر المختار “مع “رد المحتار”: باب الرضاع، ٢١٣/٣(ط: دار الفكر) (فيحرم منه) أي بسببه (ما يحرم من النسب) رواه الشيخان۔۔۔الخ
(قوله أي بسببه) أشار إلى أن من بمعنى باء السببية ط (قوله ما يحرم من النسب) معناه أن الحرمة بسبب الرضاع معتبرة بحرمة النسب، فشمل زوجة الابن والأب من الرضاع لأنها حرام بسبب النسب فكذا بسبب الرضاع، وهو قول أكثر أهل العلم، كذا في المبسوط بحر.
وقد استشكل في الفتح الاستدلال على تحريمها بالحديث لأن رسمتها بسبب الصهرية لاالنسب. انتهى
وفي “الفتاوی الھندیة” ٩٠/٦ (ط: دار الفکر): تصح الوصية لأجنبي من غير إجازة الورثة، كذا في التبيي ولا تجوز بما زاد على الثلث إلا أن يجيزه الورثة بعد موته وهم كبار ولا معتبر بإجازتهم في حال حياته، كذا في الهداية. انتهى
والله أعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
মুহা. শাহাদাত হুসাইন
সাবেক শিক্ষার্থী: ইফতা বিভাগ
তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
সত্যায়নে
মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী।
পরিচালক – তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।