প্রচ্ছদ / জায়েজ নাজায়েজ / কোয়ান্টাম মেথডে মেডিটেশন করার হুকুম কি?

কোয়ান্টাম মেথডে মেডিটেশন করার হুকুম কি?

প্রশ্ন:

আসসালামু আলাইকুম।

প্রথমে আপনাদের কে ধন্যবাদ জানাই একটি মহতী উদ্যোগ গ্রহনের জন্য। আল্লাহ তা’লা আপনাদের উত্তম প্রতিদান দিন, আমীন।

প্রশ্ন : আমি বেশ কয়েক বছর আগে কুয়ান্টাম মেডিতেসন কোর্স করেছি। এর পরে আমি নিজের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন পেয়েছি।আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে এখন দ্বীনি জীবন যাপনের চেষ্টা করছি এবং মেডিতেসন করিনা। এখন আমার কাছে মনে হয়কুয়ান্টাম মেডিতেসন টা কত টা ইসলামী শরীয়ত সম্মত, কেননা এতে কুরআনের কথা বলা যেমন বলে হয় তেমনি মনোযোগ এরজন্য সঙ্গীত বাবহার করা হয়, নারী-পুরুষ এক সাথে ক্লাস করে। আমি জানতে চাই, এটা করা গুনাহের কাজ কি না আর শরীয়তেরদৃষ্টি ভঙ্গী কি এই বাপারে?

আল্লাহ হাফেজ

সুজন,রামপুরা, ঢাকা।

জবাব:

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

মেডিটেশনের পদ্ধতিটি ইসলাম সম্মত নয়। তাই এটা পরিত্যাজ্য।

ইসলামে নামায রোযা যেমন ফরয, ঠিক একই মানের ফরয হল পর্দা করা। তাই যেখানে নারী পুরুষের পর্দা করা সম্ভব নয়, সেসব স্থানে নিরূপায় অব্স্থা ছাড়া যাওয়া জায়েজ নয়। সে হিসেবেও এসব কোর্সের ক্লাসে ভর্তি হওয়া বৈধ নয়।

বাজনাসহ গান-বাদ্য সম্পূর্ণ হারাম। তাই মেডিটেশন করতে গিয়ে এসব করা কিছুতেই জায়েজ হবে না। আল্লাহ তাআলা আমাদের সঠিকভাবে আমল করে তার প্রিয় বান্দা হওয়ার তৌফিক দান করুন।

قُلْ لِلْمُؤْمِنِينَ يَغُضُّوا مِنْ أَبْصَارِهِمْ وَيَحْفَظُوا فُرُوجَهُمْ ۚ ذَٰلِكَ أَزْكَىٰ لَهُمْ ۗ إِنَّ اللَّهَ خَبِيرٌ بِمَا يَصْنَعُونَ [٢٤:٣٠

وَقُلْ لِلْمُؤْمِنَاتِ يَغْضُضْنَ مِنْ أَبْصَارِهِنَّ وَيَحْفَظْنَ فُرُوجَهُنَّ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا مَا ظَهَرَ مِنْهَا ۖ وَلْيَضْرِبْنَ بِخُمُرِهِنَّ عَلَىٰ جُيُوبِهِنَّ ۖ وَلَا يُبْدِينَ زِينَتَهُنَّ إِلَّا لِبُعُولَتِهِنَّ أَوْ آبَائِهِنَّ أَوْ آبَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ أَبْنَائِهِنَّ أَوْ أَبْنَاءِ بُعُولَتِهِنَّ أَوْ إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي إِخْوَانِهِنَّ أَوْ بَنِي أَخَوَاتِهِنَّ أَوْ نِسَائِهِنَّ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُهُنَّ أَوِ التَّابِعِينَ غَيْرِ أُولِي الْإِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ أَوِ الطِّفْلِ الَّذِينَ لَمْ يَظْهَرُوا عَلَىٰ عَوْرَاتِ النِّسَاءِ ۖ وَلَا يَضْرِبْنَ بِأَرْجُلِهِنَّ لِيُعْلَمَ مَا يُخْفِينَ مِنْ زِينَتِهِنَّ ۚ وَتُوبُوا إِلَى اللَّهِ جَمِيعًا أَيُّهَ الْمُؤْمِنُونَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٢٤:٣١]

মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন।

ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো আছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও। {সূরা নূর-৩০-৩১}

        وأبو حنيفة أشد الأئمة قولا فيه ومذهبه فيه أغلظ المذاهب وقد صرح أصحابه بتحريم سماع الملاهي كلها المزمار والدف حتى الضرب بالقضيب وأنه معصية يوجب الفسق وترد به الشهادة بل قالوا التلذذ به كفر(عون المعبود –كتاب الأدب باب كراهية الغناء والزمر 13/186(

অর্থাৎ আর আবু হানিফা রাহ. এ ব্যপারে সবচে’ কঠোর। তার মাযহাব হলো সবচে’ কঠিন , তার সঙ্গীরা একথা সুস্পষ্ট করেছেন যে, সকল প্রমোদ সামগ্রি হারাম , সর্ব প্রকার বাঁশি এবং “দফ” ও। এমন কি লাঠি দিয়ে বাড়ি মারাও, আর এটা গোনাহ যা ফাসেক হওয়াকে ওয়াজিব করে, যার ফলে তার স্বাক্ষ্যও গ্রহণযোগ্য নয়, বরঞ্চ ফুকাহারা বলেন-এসব দ্বারা আনন্দ নেয়া কুফরী। (নাউজুবিল্লাহ) {আউনুল মাবুদ-১৩/১৮৬}

 

     وَاسْتِمَاعُ ضَرْبِ الدُّفِّ وَالْمِزْمَارِ وَغَيْرِ ذَلِكَ حَرَامٌ وَإِنْ سَمِعَ بَغْتَةً يَكُونُ مَعْذُورًا وَيَجِبُ أَنْ يَجْتَهِدَ أَنْ لَا يَسْمَعَ قُهُسْتَانِيٌّ )رد المحتاركِتَابُ الْحَظْرِ وَالْإِبَاحَةفَصْلٌ فِي الْبَيْعِ

 অর্থাৎ দফের বাজনা ও বাঁশির আওয়াজ এবং এ জাতীয় বিষয় শোনা হারাম, আর যদি আচমকা শোনে ফেলে তবে তাকে মাজুর ধরা হবে। আর চেষ্টা করবে যেন তা না শুনতে পায়। {ফাতওয়ায়ে শামী}

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

আরও জানুন

নামাযে মধ্যে ‘আল্লাহু আকবার’ বলার সময় যদি ‘আকবার’ এর ‘বা’ উচ্চারণের সময় টেনে পড়ে, তাহলে নামায হবে কি?

প্রশ্ন নামাযে মধ্যে ‘আল্লাহু আকবার’ বলার সময় যদি ‘আকবার’ এর ‘বা’ উচ্চারণের সময় টেনে পড়ে, …

No comments

  1. Muhammad Tanvir Zawad

    বিস্তারিত মাসিক আল-আবরার এর ফেব্রুয়ারি ‘১২ থেকে ডিসেম্বর ‘১৩ পর্যন্ত।

    http://monthlyalabrar.wordpress.com/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস