প্রশ্ন
আসসালামোয়ালাইকুম,
মুফতি সাহেব আমি জানতে চাই মসজিদে নামাজ পড়তে আসা ছোট বাচ্চাদের কোলাহলের সমাধান কি? আমাদের গ্রামে প্রতি জুম্মা তে ৫০-৬০টা ছোট্ট বাচ্চারা সালাত আদায় করতে আসে। ওরা সালাতের থেকে সিন্নি খাওয়ার লোভে বেশি আসে। আর ওদের বয়স এতো কম যে পুরা সময় মসজিদে হোই হট্টগোল করে। কিভাবে এর সমাধান পাওয়া যাই ।
প্রশ্নকর্তা-আশিক ইকবাল
বিরভুম,পশ্চিম বাংলা,ভারত
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এত বাচ্চারা মসজিদে আসে এটি খুবই আনন্দের খবর। শিশু বয়সেই মনন তৈরীর সময়। এ সময় যদি ধর্মীয় অনুভূতি জাগরিত হয়,তাহলে সেটি মনে গেঁথে যায়। তাই বাচ্চাদেরকে মসজিদে আসতে অনুৎসাহিত করতে নেই। তবে মসজিদে এসে যেন হট্টগোল না করে এরও ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
শিশুরা অনেক সময় বুঝালে বুঝ মেনে থাকে। তাই তাদের প্রথমে মসজিদে আসার আদব শিখাতে হবে। তাদের বুঝাতে হবে- এটি আল্লাহর ঘর। এখানে এসে অযথা কথা বললে মারাত্মক গোনাহ হয়। এর কারণে মৃত্যুর পর কঠিন আজাব হবে ইত্যাদি বলে শিশুদের বুঝানো উচিত। কিন্তু তাদের ধমক দিয়ে মসজিদ থেকে বের করে দেয়া কিছুতেই উচিত নয়। এতে তাদের মন ভেঙ্গে যায়। মসজিদে আসার প্রতি অনিহা সৃষ্টি হয়। এভাবে শিশুদের মন খারাপ করে মসজিদে আসতে বাঁধা দেয়া কিছুতেই উচিত হবে না।
তবে কোলাহল করার সমাধান যদি বুঝিয়ে না হয়, তাহলে বাচ্চাদের বড়দের কাতারের মাঝখানে মাঝখানে বসানো যেতে পারে। যেন সব শিশুই আলাদা আলাদাভাবে বড়দের সাথে কাতারে বসে যায়। একসাথে বসলে দুষ্টুমি করবে। তাই বড়দের কাতারে শামিল করে নিলে দুষ্টুমি করার সাহস পাবে না।
এভাবে এ বিষয়টির সমাধান খুব সহজেই করা যাবে বলে মনে হয়।
যদিও ফিক্বহে হানাফীতে কাতারের ক্রমান্বয়িক অনুপাতে শিশুরা পিছনে থাকার কথা। কিন্তু কোলাহল ও বড়দের নামাযে বিঘ্ন সৃষ্টি থেকে বাঁচতে বড়দের কাতারে শিশুদের শামিল করে নেয়ার পক্ষে বিজ্ঞ ফক্বীহগণ মত দিয়েছেন।
فى رد المحتار- ويصح الرجل ثم الصبيان ظاهرة تعددهم فلو واحد دخل الصف (ردالمحتار-2/312-313
وفى تقريرات الرافعى- قال الرحمتى ربما يتعين فى زماننا ادخال الصبيان فى صفوف الرجال لأن المعهود منهم اذا اجتمع صبيان فاكثر فيبطل صلاة بعضهم ببعض وربما بعدى ضررهم الى افساد صلاة الرجال (رد المحتار-2/73)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।