প্রচ্ছদ / ইলম/জ্ঞান/শব্দার্থ / আরব ছাড়া বিশ্বের কোথাও না যাবার পরও মুহাম্মদ সাঃ বিশ্বনবী হন কিভাবে?

আরব ছাড়া বিশ্বের কোথাও না যাবার পরও মুহাম্মদ সাঃ বিশ্বনবী হন কিভাবে?

প্রশ্ন

From: K.M.Shamem Ahmed
বিষয়ঃ মাসয়ালা

প্রশ্নঃ
এক ভাই আমাকে প্রশ্ন করেছে যে – তোমাদের নবী কে তোমরা বিশ্ব নবী বল তবে কেন ইসলাম প্রচার করতে আরব(মক্কা অ মদিনার) বাহিরে যান নাই (ইউরোপ, আমরিকা,আফ্রিকা , এশিয়া) অথচ সে বিশ্ব নবী কি করে ?
আমি সে ভাবে তাকে উত্তর দিতে পারিনি তাই এই বিষয়ের উপরে যদি বিস্তারিত লিখেন তবে খুব ভাল হত ।

এক নাস্তিক মার্কা লোকের জিজ্ঞাসা ছিল আমার কাছে ।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

বৈশ্বিক সূর্যের জন্য বিশ্বের প্রতিটি স্থানে সূর্যের নেমে আসা যেমন আবশ্যক নয়। যেমন বৈশ্বিক চাঁদের জন্য প্রতিটি রাষ্ট্রে প্রতিটি স্থানে যাওয়া যেমন আবশ্যক নয়, বরং তার কিরণ, তার রশ্মী, আলো গমণ করার দ্বারাই সূর্য ও চাঁদ বৈশ্বিকতার স্বীকৃতি পায়। তেমনি আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সারা বিশ্বের সর্বত্র সফর না করলেও তার আনীত দ্বীন, হিদায়াতের বাণী সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার মাধ্যমেই তার বৈশ্বিক নবীত্বকে প্রমাণ করে।

বৈশ্বিকতার জন্য সর্বত্র গমণের প্রয়োজন হয় না। বরং তার উপর আধিপত্বের বিস্তৃতিই যথেষ্ট। যেমন রাষ্ট্রপ্রধানগণ রাষ্ট্রের সর্ব স্থানে পরিভ্রমণ করেন না, তিনি রাজধানীতেই বসবাস করেন। কিন্তু তার রাজত্ব হয় পুরো রাষ্ট্রব্যাপী।

তেমনি আমাদের নবী বিশ্বনবী। তার জন্য বিশ্বের সর্বত্র ভ্রমণ করা আবশ্যক নয়। বরং তার ধর্মের প্রভাব সর্বত্র ছড়িয়ে পড়াই বিশ্ব নবী হবার জন্য যথেষ্ট।

বিশ্বজনীন হবার জন্য আবশ্যক হল, বিশ্বজনীন বিধানাবলীর ধারক হওয়া। যা সর্বযুগে, সর্ব স্থানে, সর্বদাই ফলপ্রসু ও উপকারী হিসেবে কার্যকরী হবার ক্ষমতা রাখে।

একমাত্র মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মাধ্যমে পাওয়া ঐশী জীবন বিধানই এমন সার্বজনীন যে, তা গোটা বিশ্বের সকল মানুষের জন্যই সমানভাবে প্রযোজ্য ও কার্যকরী।

যিনি তাকে নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন, সেই মহান স্রষ্টাই তার গ্রন্থে তাকে সারা বিশ্বের নবী হিসেবে ঘোষণা করেছেন।

وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ [٢١:١٠٧

আমি আপনাকে সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি। [সূরা আম্বিয়া, ২১: ১০৭]

وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِّلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَٰكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ [٣٤:٢٨

আমি আপনাকে সমগ্র মানবজাতির জন্যে সুসংবাদাতা ও সতর্ককারী রূপে পাঠিয়েছি;কিন্তু অধিকাংশ মানুষ তা জানে না। [সূরা সাবা, ৩৪:২৮]

তাছাড়া নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও সমগ্র বিশ্বের জন্য প্রেরিত হয়েছেন মর্মে ঘোষণা দিয়েছেন। আর কোন নবী এমন ঘোষণা দেননি। যেমন-

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেনঃ-

وَأُرْسِلْتُ إِلَى الْخَلْقِ كَافَّةً

আমি সমগ্র সৃষ্টিজগতের জন্য প্রেরিত হয়েছি। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫২৩, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১৫৫৩]

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী – মা’হাদুত তালীম ওয়াল  বুহুসিল ইসলামী ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম আমীনবাজার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ফারূকিয়া দক্ষিণ বনশ্রী ঢাকা।

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …