প্রচ্ছদ / অপরাধ ও গোনাহ / কুরআন ছুঁয়ে মিথ্যা কথা বলা ও অসৎ বন্ধু থাকা প্রসঙ্গে

কুরআন ছুঁয়ে মিথ্যা কথা বলা ও অসৎ বন্ধু থাকা প্রসঙ্গে

প্রশ্ন

আমার এক বন্ধু তার এক বন্ধুর সাথে ভালো সম্পর্ক। হঠাৎ একদিন আমার বন্ধু জানতে পারে যে, তার ঐ বন্ধু বেশ কিছু মেয়ের সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্ক আছে। তার ঐ বন্ধু নতুন করে আরো একটি মেয়ের সাথে ঐ একই কাজ করার জন্যে সম্পর্ক গড়ে। তখন আমার বন্ধু এই মেয়েটির সাথে গোপনে  দেখা করে ওর সম্পর্কে সব বলে দেয় এবং মেয়েটিকে সে যা বলল তা গোপন রাখতে বলে। মেয়েটি যখন তার প্রেমিককে তার সব অপকর্মের সব কথা জানায়, তখন ঐ ছেলেটির আমার বন্ধুর উপর সন্দেহ জাগে তখন আমার বন্ধুটি মেয়েটিকে কিছু জানায়নি বলে জানায়। কিন্তু ছেলেটি তার কথা বিশ্বাস না করে তাকে কোরআন ছুঁয়ে বলতে বলে। আমার বন্ধু কোরআন ছুঁয়ে বলে যে, সে ঐ মেয়েকে কিছু বলেনি। আর আমার বন্ধুর উদ্দেশ্য ছিলো তার হাত থেকে ঐ মেয়েটির যে ক্ষতি হতে চলছিলো তা থেকে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা।এখন আমার বন্ধু যে কোরআন ছুঁয়ে মিথ্যা কথা বলল তার জন্য শরীয়তের বিধান কি? দয়া করে উত্তর দিয়ে বাধিত করবেন।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

মিথ্যা বলা এমনিতেই নাজায়েজ। সেই সাথে কুরআন ছুঁয়ে মিথ্যা বলা আরো জঘন্য অপরাধ। আপনার বন্ধুকে বলুন। খাস দিলে আল্লাহর কাছে ক্ষমা  চাইতে। এবং তওবা করতে। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তাআলা তাকে ক্ষমা করে দিবেন। আর এরকম নোংরা চরিত্রের ব্যক্তিদের সাথে বন্ধুত্ব ও সম্পর্ক ত্যাগ করে।

কারণ নোংরা চরিত্রের ব্যক্তিদের সাথে চলাফেরা করলে তার  খারাবী নিজের মাঝে চলে আসার প্রবল সম্ভাবনা থাকে। যেমন ভাল মানুষের সাথে উঠাবসায় ভাল গুণ লাভের জন্য সহায়ক হয়।

أَبَا بُرْدَةَ بْنَ أَبِي مُوسَى، عَنْ أَبِيهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَثَلُ الجَلِيسِ الصَّالِحِ وَالجَلِيسِ السَّوْءِ، كَمَثَلِ صَاحِبِ المِسْكِ وَكِيرِ الحَدَّادِ، لاَ يَعْدَمُكَ مِنْ صَاحِبِ المِسْكِ إِمَّا تَشْتَرِيهِ، أَوْ تَجِدُ رِيحَهُ، وَكِيرُ الحَدَّادِ يُحْرِقُ بَدَنَكَ، أَوْ ثَوْبَكَ، أَوْ تَجِدُ مِنْهُ رِيحًا خَبِيثَةً

২১০১. আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর উদাহরণ মিশক বিক্রেতা ও কর্মকারের হাপরের ন্যায়। আতর বিক্রেতাদের থেকে শূন্য হাতে ফিরে আসবে না। হয় তুমি আতর খরিদ করবে, না হয় তার সুঘ্রাণ পাবে। আর কর্মকারের হাপর হয় তোমার ঘর অথবা তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে, না হয় তুমি তার দুর্গন্ধ পাবে। (৫৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ১৯৫৬ , ইসলামী ফাউন্ডেশনঃ ১৯৭১)

نْ عَبْدِ اللَّهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «إِنَّ الصِّدْقَ يَهْدِي إِلَى البِرِّ، وَإِنَّ البِرَّ يَهْدِي إِلَى الجَنَّةِ، وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَصْدُقُ حَتَّى يَكُونَ صِدِّيقًا. وَإِنَّ الكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الفُجُورِ، وَإِنَّ الفُجُورَ يَهْدِي إِلَى النَّارِ، وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَكْذِبُ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللَّهِ كَذَّابًا

৬০৯৪. ‘আবদুল্লাহ রাঃ হতে বর্ণিত। নাবী  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সত্য নেকীর দিকে পরিচালিত করে আর নেকী জান্নাতে পৌঁছায়। আর মানুষ সত্যের উপর কায়িম থেকে অবশেষে সিদ্দীক-এর দরজা লাভ করে। আর মিথ্যা মানুষকে পাপের দিকে নিয়ে যায়, পাপ তাকে জাহান্নামে নিয়ে যায়। আর মানুষ মিথ্যা কথা বলতে বলতে অবশেষে আল্লাহর কাছে মহামিথ্যাচারী প্রতিপন্ন হয়ে যায়। আধুনিক প্রকাশনী- ৫৬৫৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫৫৫১)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *