প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / বরকে না জানিয়ে কাবিননামায় তালাকের অধিকার প্রদান ও একজনের বিয়েতে থাকা অবস্থায় আরেক বিয়ে সম্পর্কিত

বরকে না জানিয়ে কাবিননামায় তালাকের অধিকার প্রদান ও একজনের বিয়েতে থাকা অবস্থায় আরেক বিয়ে সম্পর্কিত

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহ।

হযরত দয়া করে নীচের ঘটনাটির সমাধান দিন।

আয়শা বেগমের সাথে আলীমের বিবাহ হয় ১৯৮৫ । তাদের দুঢি কণ্যা আছে। স্বামীর আমল আখলাখ মুআমালাত মুআশারাত ভাল না থাকার কারনে সংসারে শান্তি ছিল না। ভোরনপোষন ঠিকমত না দেয়ার আয়শা মাতৃলয় অবস্থান করতে থাকে ।আয়শা বেগম ২৭।০৮।২০০১ইং তারিখে কাজী অফিসে গিয়ে তালাক  পাওয়ার সাহায্য কামনা করে । কাজী তার কাবিন নামা উঠিয়ে ১৮নং কলাম বলে তাফউইজ তালাক নোটিশ স্বামী বরাবর প্রদান করে ।স্বামী তাফউইজ তালাক নোটিশ গ্রহন না করে  বলে আমি স্ত্রীকে তালাকের অনুমতি দেই নি ।১৮নং কলাম সম্পর্কে কিছুই জানি না ।কাজী কাবিন করার সময় আমাকে কিছুই বলে নি ।সম্ভবত ১৮নং কলাম সে  কিছুই লিখে নি ।কাবিন নামা উঠানোর সময় কাজী নিজের মনমত লিখে তালাক প্রদানের  ক্ষমতা স্ত্রীকে দেয় ।স্বামী স্ত্রীর এ বিষয়টি অমিমাংসিত ভাবে এভাবে চলতে  থাকে ।আয়শা বেগম এরপর ১৮।০৭।২০০৮ইং তারিখে নিকট আত্মীয়র সাথে দ্বিতীয়বার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ব হয়, এতে প্রথম স্বামী ক্ষীপ্ত হয়ে নানা রকম ভয়ভীতি লাণ্ছণা করতে থাকে। অবশেষে লোকলজ্জার ভয়ে দ্বিতীয় স্বামী তালাক দাতে বাধ্য হয় ।প্রথম স্বামীকে আখিরাত ও আল্লাহর ভয় দেখিয়ে ১০।০৮।২০০১৫ ইং তালাক নেয়া হয় ।

প্রশ্নঃ আয়শা বেগম দ্বিতীয় স্বামীর সাথে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ব হতে পারবে কি ?

অব্দুল্লাহ

সানারপাড় ঢাকা

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

উপরোক্ত বর্ণনা অনুপাতে যেহেতু আলীম সাহেব তার স্ত্রীকে তালাক প্রদান করেছেন। তাই এখন ইদ্দত তথা তিন হায়েজ শেষ হবার পর আয়শা বেগম যে কারো সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এমনকি কথিত দ্বিতীয় স্বামীর সাথেও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে।

কথিত স্বামী এজন্য বলা হয়েছে যে, যেহেতু প্রথম স্বামী তালাক না দেয়ায়, দ্বিতীয় বিবাহ শুদ্ধ হয়নি। তাই শরয়ী নীতিমালা অনুপাতে দ্বিতীয়বার বিয়েকৃত পুরুষটি স্বামীর মর্যাদা পায়নি।

وَإِذَا طَلَّقْتُمُ النِّسَاءَ فَبَلَغْنَ أَجَلَهُنَّ فَلَا تَعْضُلُوهُنَّ أَن يَنكِحْنَ أَزْوَاجَهُنَّ إِذَا تَرَاضَوْا بَيْنَهُم بِالْمَعْرُوفِ  [٢:٢٣٢]

আর যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দিয়ে দাও এবং তারপর তারাও নির্ধারিত ইদ্দত পূর্ন করতে থাকে,তখন তাদেরকে পূর্ব স্বামীদের সাথে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে নিয়মানুযায়ী বিয়ে করতে বাঁধাদান করো না। [সূরা বাকারা-২৩২]

وَالْمُطَلَّقَاتُ يَتَرَبَّصْنَ بِأَنفُسِهِنَّ ثَلَاثَةَ قُرُوءٍ ۚ [٢:٢٢٨]

আর তালাকপ্রাপ্তা নারী নিজেকে অপেক্ষায় রাখবে তিন হায়েয পর্যন্ত। [সূরা বাকারা-২২৮]

كُلُّ كِتَابٍ لَمْ يَكْتُبْهُ بِخَطِّهِ وَلَمْ يُمِلَّهُ بِنَفْسِهِ لَا يَقَعُ بِهِ الطَّلَاقُ إذَا لَمْ يُقِرَّ أَنَّهُ كِتَابُهُ كَذَا فِي الْمُحِيطِ (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

মুহাদ্দিস-জামিয়া উবাদা ইবনুল জাররাহ, ভাটারা ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *