প্রচ্ছদ / আহলে হাদীস / বুখারী মুসলিমে তারাবীহ নামায আট রাকাতের কোন প্রমাণ নেই!

বুখারী মুসলিমে তারাবীহ নামায আট রাকাতের কোন প্রমাণ নেই!

প্রশ্ন

From: ফরিদ
বিষয়ঃ তারাবি

প্রশ্নঃ
তারাবির সালাত 20 রাকাতের সহিহ দলিল আপনারা পেশ করলেন। বেশ ভালো কথা । কিন্তু লা মাযাহাবীরাও তো সহিহ হাদিস থেকে দলিল দেয়। তারা দলিল দেয় বোখারী, মুসলিম, তিরিমিযি, আবু দাউদ, নাসায়ী থেকে । আপনারা যে দলিল গুলো উল্লেখ করেছেন তাতে বোখারী, মুসলিম নেই। কিন্তু অনেক মুহাদ্দিস আছেন যারা বোখারী ও মুসলিম কে কুরআনের পক্ষে মত দিয়েছেন।  বোখারী মুসলিম আগে না আপনাদের পেশকৃত [তারীখে জুরজান-২৭}{মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা-২/২৯৩},{সুনানে সুগরা লিল বায়হাকী, হাদীস নং-৮৩৩, মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৪৪৩},{মারিফাতুস সুনান ওয়াল আসার, হাদীস নং-১৪৪৩, মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৩৮০, সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-৪৩৯৪}।

তাহলে আমরা সাধারন মুসলমান কোনটি মানব।  দয়া করে উত্তর দিলে খুশি হব।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

কুরআন ও হাদীস সম্পর্কে আপনাদের অজ্ঞতাই লা-মাযহাবীদের মূল অস্ত্র। আপনি সম্ভবত আমাদের প্রকাশিত লেখাগুলো ভাল করে পড়েননি। পড়লে এ দাবী করতেন না যে, আট রাকাত দাবীদারদের দলীল বুখারী মুসলিমে আছে। আমরা আমাদের লেখায় আট রাকাত দাবীদারদের বুখারী মুসলিম থেকে দেয়া হাদীসের উপর পর্যালোচনাও পেশ করেছি। তা ভাল করে পড়লে আপনার কাছে পরিস্কার হয়ে যেতো যে, দলীল দিলাম বললেই দলীল হয়ে যায় না। বরং দলীল হবার জন্য দাবী ও দলীলের মাঝে সমন্বয় হতে হয়। এছাড়া দলীল দিলাম, দলীল দিলাম বলে চিৎকার করলেই একে দলীল বলা হয় না।

আমরা পরিস্কার শব্দে বলি বুখারী মুসলিমের কোথাও তারাবীহ নামায আট রাকাতের কথা নেই।

বুখারী মুসলিমে আছে তাহাজ্জুদ নামাযের কথা। যা রমজানেও পড়া হয়, আবার রমজান ছাড়া অন্য মাসেও পড়া হয়।

আর তারাবীহ একটি স্বতন্ত্র নামায। যা শুধু রমজানে পড়া হয়।

তারাবীহ নামাযের দলীল দিতে গিয়ে তাহাজ্জুদ নামাযের হাদীস পেশ করা কত বড় ধোঁকাবাজী কল্পনা করা যায়?

বুখারী মুসলিমে বর্ণিত তাহাজ্জুদ সম্পর্কিত হাদীসটিকে তারাবীহ বলিয়ে চালিয়ে সরল মুসলিমদের উল্লু বানাচ্ছে এসব লা-মাযহাবী শায়েখরা।

আপনার যদি সামান্য বিবেক বুদ্ধি থাকে, তাহলে আপনি নিজেই তাদের তাহাজ্জুদের হাদীস দিয়ে তারাবীহ প্রমাণের লা-মাযহাবী ধোঁকা ধরে ফেলতে পারবেন।

সেই সাথে বুঝে যাবেন যে, আসলে লা-মাযহাবীরা তারাবীহ নামাযকেই মানে না। তারা মানে শুধু তাহাজ্জুদ নামাযকে। আর তাহাজ্জুদ নামায যেহেতু আট রাকাত পড়ার কথা এসেছে, তাই তারা আট রাকাত পড়ে।

মূলত লা-মাযহাবীদের সাথে তারাবীহ নামাযের রাকাত সংখ্যা নিয়ে কোন মতভেদ নেই। মতভেদ হল তারাবীহ আছে কি নেই?

আমরা বলি তারাবীহ আছে, আর লা-মাযহাবীরা বলে তারাবীহ বলে আলাদা কোন নামাযই নেই। বরং সারা বছর যা তাহাজ্জুদ, সেই তাহাজ্জুদ নামাযই রমজানে তারাবীহ হয়ে যায়।

তাহলে কি বুঝলেন? লা-মাযহাবীরা তারাবীহ মানে? মানে না। মানুষকে ধোঁকা দেবার জন্য তারাবীহ শব্দ উচ্চারণ করে থাকে। আসলে তারা শুধু তাহাজ্জুদকে মানে।

আর তাই বুখারী মুসলিমের তাহাজ্জুদের হাদীস দ্বারা তারাবীহ নামাযের দলীল দেয়া একটি ধুর্ততা ছাড়া আর কিছু নয়। সেই সাথে সাধারণ মুসলমানকে বোকা বানানোর একটি ঘৃণ্য কর্ম।

এ বিষয়ে পরিস্কার জানতে হলে আমাদের লেখাগুলো আপনার ভাল করে পড়তে হবে। যেখানে আমাদের দলীল প্রমাণ পেশ করার সাথে সাথে লা-মাযহাবী বন্ধুদের আট রাকাতের নামে প্রতারণাও তুলে ধরা হয়েছে।

লা-মাযহাবীদের দলীলের পোষ্টমর্টেম জানতে হলে পড়ুন-

তারাবীহ তাহাজ্জুদ এক নামায নয়

তারাবীহ নামায বিশ রাকাতঃ একটি দলীল ভিত্তিক পর্যালোচনা

এ বিষয়ে আরো জানতে হলে দেখুন-

তারাবীহ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ ও ভিডিও লিংকসমূহ

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *