প্রচ্ছদ / আহলে হাদীস / ঈদের দিন জুমআর নামায পড়তে হয় না?

ঈদের দিন জুমআর নামায পড়তে হয় না?

প্রশ্ন

আচ্ছালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।

মুহতারাম, নিচের প্রশ্নের কুরআন ও হাদীসের দলীল-সূত্র সহ দিলে একটি ফেতনা থেকে রেহাই পাওয়া যেত।

কোন এক শুক্রবার ঈদের দিন ছিল ঈদের নামাজের পর খুতবায় নবীজি (দঃ) বলেছেন, “তোমাদের যাদের ইচ্ছা হয় জুমা নামাজ পরতে পার ইচ্ছা না হলে ছেড়ে দিতে পার” অর্থাৎ ঐ  ঈদের নামাজের কারণে জুমা পড়তে হবে না – এ রকম কোন হাদীস আছে কিনা, থাকলে উহার হুকুম সহ জানাতে বিশেষ অনুরোধ করছি।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আবু দাউদসহ কিছু হাদীসের কিতাবে একথা আছে যে, রাসূল সাঃ ঈদের নামাযের পর জুমআর নামায পড়াকে ইচ্ছাধীন হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু তিনি নিজে ঈদের নামাযের পর জুমআর নামায পড়েননি একথা কোন হাদীসে আসেনি।

ফুক্বাহায়ে কেরাম রাসূল সাঃ এর ঈদের দিন জুমআর নামায ইচ্ছাধীন হওয়ার সুযোগ দেয়ার ব্যাখ্যায় বলেন যে, মূলত ঈদের দিন গ্রামাঞ্চল থেকে লোকজন মদীনায় এসে রাসূল সাঃ এর সাথে ঈদের নামাযে শরীক হতো, রাসূল সাঃ মূলত তাদের বলেছেন যে, তোমাদের ইচ্ছে, জুমআর নামায পড়েও গ্রামে ফিরতে পার, কিংবা এর আগেও ফিরতে পার। কারণ গ্রামে জুমআর নামায পড়া জায়েজ নেই। এ কারণে রাসূল সাঃ এ সুযোগ তাদের জন্য দিয়েছেন। এটা সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। যদি সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হতো, তাহলে রাসূল সাঃ নিজে জুমআ পড়তেন না। অথচ জুমআর নামায আবশ্যক হবার পর থেকে জুমআর দিন রাসূল সাঃ জুমআর নামায পড়েননি এমন কোন বর্ণনা কোথাও নেই। তাই ঈদের দিনও জুমআর নামায পড়া আবশ্যক।

তাহলে বুঝা গেল, উক্ত হাদীস দ্বারা উদ্দেশ্য হল, এমন গ্রামের মুসল্লি যে গ্রামে জুমআর নামায আবশ্যক নয়। কিন্তু তারা ঈদের নামায পড়ার জন্য শহরে এল। তাদের জন্য রাসূল সাঃ উক্ত নির্দেশনাটি দিয়েছেন। শহরবাসী তথা যেখানে জুমআ পড়া আবশ্যক সে এলাকার জন্য উক্ত নির্দেশনা প্রযোজ্য নয়।

দ্রষ্টব্য

ফাতওয়া শামী-২/১৬৬

বাদায়েউস সানায়ে-১/২৭৫

মুশকিলুল আসার লিত তাহাবী-২/৫২

জুমআর নামায আদায় করা ফরজ। পবিত্র কুরআনের সুষ্পষ্ট নির্দেশের মাধ্যমে তা প্রমাণিত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِيَ لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَىٰ ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ۚ ذَٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ [٦٢:٩

মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর, এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ। {সূরা জুমআ-৯)

তাই ঈদের দিনও তা আদায় করতে হবে। কোন সহীহ হাদীস দিয়ে একথাটি প্রমাণিত নয় যে, রাসূল সাঃ ঈদের দিন জুমআর নামায পড়েন নি।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *