প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / “মোবাইল কেটে দিলে তুমি তালাক” এ শব্দ বলার পর স্ত্রী মোবাইল কেটে দিল হুকুম কী?

“মোবাইল কেটে দিলে তুমি তালাক” এ শব্দ বলার পর স্ত্রী মোবাইল কেটে দিল হুকুম কী?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম।
আ: রহিম তার স্ত্রীর সাথে মোবাইলে কথা বলছিলো।তার স্ত্রী রাগ করে বার বার কল কেটে দিচ্ছিলো(এই রাগ সাময়িক রাগ)
এমতাবস্থায় আ: রহিমও রাগ হয়ে গেল,এবং সে তার স্ত্রীকে বলল,এখন যদি আর একবার কল কেটে দাও তাহলে তুমি তালাক(আ: রহিম শুধু তার স্ত্রীকে ভয় দেখানোর জন্য বলেছিলো)।তার মনে আসলে এক,দুই বা তিন এইসব তালাকের নিয়ত ছিল না।মোটকথা কোন তালাক দেয়ার ই কোন ইচ্ছা ছিল না।এমনেই সে ওই কথাটা বলছে যেন তার স্ত্রী ভয় পেয়ে আর কল না কাটে।

কিন্তু তার স্ত্রীও তখন রাগ করে কল কেটে দিলো।।
এখন কি তার স্ত্রী তালাক হয়ে গেলো???

আর যদি তালাক হয়েই থাকে তাহলে তারা যদি আবার দুইজনে সংসার করতে চায় তাহলে কি করতে হবে?

উত্তর জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

তালাক এটি কোন হাসি ঠাট্টা বা দুষ্টামী করার জিনিস নয়। এটি খুবই মারাত্মক বিষয়। হাদীসে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: ” ثَلَاثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: الطَّلَاقُ، وَالنِّكَاحُ، وَالرَّجْعَةُ “

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, তিনি বিষয় এমন যে, ইচ্ছেকৃত করলে ইচ্ছেকৃত এবং ঠাট্টা করে করলেও ইচ্ছেকৃত বলে ধর্তব্য হয়। তা হল, তালাক, বিবাহ এবং তালাকে রেজয়ীপ্রাপ্তা স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২০৩৯, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২১৯৪}

তাই এমন খামখিয়ালি করে তালাক দেয়া কিছুতেই উচিত নয়। যেহেতু আপনি মোবাইল কেটে দিলে তালাকের কথা বলেছেন স্পষ্ট শব্দে। তাই এর দ্বারা আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাক পতিত হয়ে গেছে। এটাকে তালাকে সরীহ বলা হয়।

এক্ষেত্রে আব্দুর রহীম তার স্ত্রীর তিন হায়েজ শেষ হবার আগেই যদি মুখে বলে দেয় যে, সে তার স্ত্রীকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে নিয়েছে, বা স্ত্রীর সাথে স্ত্রীসূলব কোন আচরণ করে, তাহলেই তার স্ত্রী তার হয়ে যাবে। বাকি পরবর্তীতে আর দুই তালাকের মালিক থাকবে।

আর যদি তিন হায়েজ শেষ হবার আগে মুখে বলে বা আচরণের মাধ্যমে স্ত্রীকে ফিরিয়ে না নেয়, তাহলে আবার নতুন মোহর ধার্য করে বিয়ে করে নিতে হবে। এক্ষেত্রেও দুই তালাকের মালিক থাকবে আব্দুর রহীম।

 

উভয় ক্ষেত্রেই অন্য কারো সাথে বিবাহ হবার প্রয়োজন নেই। বরং প্রথম সুরতে স্ত্রীকে মুখে বা আচরণে ফিরিয়ে নিলেই হবে, আর দ্বিতীয় সূরতে নতুন করে বিবাহ করে নিলেই হবে।

فى الفتاوى الهندية- وَإِذَا طَلَّقَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ تَطْلِيقَةً رَجْعِيَّةً أَوْ تَطْلِيقَتَيْنِ فَلَهُ أَنْ يُرَاجِعَهَا فِي عِدَّتِهَا رَضِيَتْ بِذَلِكَ أَوْ لَمْ تَرْضَ كَذَا فِي الْهِدَايَةِ (الفتاوى الهندية-1/470، هداية-2/394)

واذا اضافه إلى الشرط، وقع عقيب الشرط اتفاقا، مثل أن يقول لامرأته: إن دخلت الدار فأنت طالق، (الفتاوى الهندية، الفصل الثالث فى تعليق الطلاق-1/420، الهداية، كتاب الطلاق، باب الأيمان فى الطلاق-2/385، تبيين الحقائق، باب التعليق-3/109)

فى الفتاوى الهندية-إذا كان الطلاق بائنا دون الثلاث فله أن يتزوجها في العدة وبعد انقضائها وإن كان الطلاق ثلاثا في الحرة وثنتين في الأمة لم تحل له حتى تنكح زوجا غيره نكاحا صحيحا (الفتاوى الهندية-1/472-473

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *