প্রশ্ন
শ্রদ্ধেয় মুফতি সাব হুজুর
আসসালামু আলইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ।
আমি একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করি। সরকারি প্রায় সব প্রতিষ্ঠানে সেখানে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণকে গৃহ নির্মাণ/জমি ক্রয়/ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য সুদভিত্তিক ঋণ দেয়ার প্রচলন রয়েছে। আমাদের প্রতিষ্ঠান কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণকে বেতন হিসেবে ৬০ লাখ বা এর কিছু কম বিভিন্ন শর্তসহকারে অগ্রিম ঋণ প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে, অফিস ঋন গ্রহিতার নিকট থেকে তার মাসের বেতন হতে নির্দিষ্ট কিস্তিতে মূল ঋনের টাকার সাথে সাথে ৪% হারে অতিরিক্ত টাকা্ও মাসিক বেতন থেকে কর্তন করে থাকে। আমরা অফিসের কয়েকজন নামাজি কলিগ মিলে আমাদের প্রতিষ্ঠানে গৃহ নির্মাণ/জমি ক্রয়/ফ্ল্যাট ক্রয়ের জন্য সুদমুক্ত লোন/ঋণ চালু করার জন্য চেষ্টা শুরু করেছি। এ জন্য গৃহ নির্মাণ/জমি ক্রয়/ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে শরয়ি কি কি পদ্ধতিতে লোন/ঋণ গ্রহণের সুযোগ রয়েছে তা জানা প্রয়োজন।
অতএব, উপরোল্লিখিত বিষয়টি বিস্তারিতভাবে জানানোর জন্য মুফতি সাব হুজুরের নিকট বিনীত অনুরোধ করছি।
বিনীত নিবেদক
মোঃ ছাদেকুর রহমান
মিরপুর, ঢাকা।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যারা যারা গৃহ নির্মাণ করতে চায়, তাদের কী কী জিনিস লাগবে, তার একটি লিষ্ট নিয়ে সেই পণ্যগুলো কোম্পানীর পক্ষ থেকে প্রতিনিধি গিয়ে নিজেরা ক্রয় করবে, তারপর সেটি গ্রাহকের কাছে ক্রয়মূল্য থেকে বেশি দামে বিক্রি করে দিবেন। যে মূল্য মাসিক কিস্তি আকারে গ্রাহক পরিশোধ করবেন বা তার বেতন থেকে কর্তন করে রাখা হবে।
আর জমি ও ফ্ল্যাট ক্রয়ের ক্ষেত্রে যে জমি বা ফ্ল্যাট গ্রাহক ক্রয় করতে চায়, সেটি প্রথমে কোম্পানী নগদ অর্থে ক্রয় করবে, তারপর সেটিকে বেশিমূল্যে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে দিবেন। যে মূল্য কিস্তিতে গ্রাহক পরিশোধ করবেন, বা তার বেতন থেকে কর্তন করা হবে।
এ পদ্ধতি অনুসরণ করলে তা জায়েজ হবে।
যেমন একশ টন রড লাগবে, বিশ গাড়ি ইট লাগবে, একশত বস্তা সিমেন্ট লাগবে, দশ গাড়ি বালু লাগবে ইত্যাদি গ্রাহকের চাহিদা অনুপাতে অর্ডারকৃত বস্তু প্রথমে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান নিজের নামে ক্রয় করবে, তারপর তা বেশি মূল্যে বাকিতে পরিশোধের শর্তে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করবে।
ঠিক একইভাবে জমি ও ও ফ্ল্যাট প্রথমে প্রতিষ্ঠান নিজ লোক দিয়ে নিজের টাকা দিয়ে ক্রয় করবে, তারপর তা বেশি মূল্যে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করবে।
এভাবে হলে জায়েজ হবে।
البيع مع تأجيل الثمن وتقسيطه صحيح (شرح المجلة لسليم رستم باز-1/124، رقم المادة-245)
البيع لأجل أو بالتقسيط أجاز الشافعية والحنفية والمالكية والحنابلة والجمهور بيع الشيء فى الحال لأجل أو بالتقسيط بأكثر من ثمنه النقدى إذا كان العقد مستقلا بهذا النحو، ولم يكن فيه جهالة بصفقة أو بيعة من صفقتين أو بيعتين… جاز البيع، وإن ذكر فى المساومة سعران سعر للنقد وسعر للتقسيط، ثم تم البيع فى نهاية المساومة تقسيطا (الفقه الإسلامى وأدلته-4/242، دار الفكر-5/3461)
وأما الأئمة الأربعة وجمهور الفقهاء والمحدثين فقد أجازوا البيع، والبيع المؤجل بأكثر من سعر النقد (بحوث فى قضايا فقهية معاصرة-5/7)
ويجوز البيع بثمن حال ومؤجل إن كان الأجل معلوما (هداية، كتاب البيع-3/21، مختصر القدورى-71، رد المحتار-7/52، مجمع الأنهر، دار الكتب العلمية-3/13، مصرى قديم-2/8)
وإن شرط الأجل فى الثمن، والثمن دين، فإن كان الأجل معلوما جاز البيع (الفتاوى الهندية-3/142)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
ইমেইল– [email protected]
আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস Ahle Haq Media
