প্রশ্নঃ
আসসালামু আলাইকুম। আমি প্রায় ২৫ বছর আগে এক অমুসলিমের সাথে কাজ করার সময় সময় বিক্রিত পন্যর টাকা চুরি করেছিলাম।
আমি এখন অনুতপ্ত। তাকে খুজে পাওয়া প্রায় অসম্ভব।সে বেচে আছে কিনা তা জানি না।কারন সেই সময়ই সে ছিল বয়স্ক। এখন আমি কিভাবে সেই দায় থেকে মুক্তি পাব? কি করলে আল্লাহ আমাকে মাফ করবেন?
From: sujon islam
[email protected]
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
উত্তর:
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে উক্ত টাকা আদায়ের পদ্ধতি হলো, যার হক নষ্ট হয়েছে যদি তাকে শনাক্ত করা যায়, তবে তাকে সেই টাকা ফেরত দেওয়া জরুরি। আর যদি প্রকৃত মালিক মারা গিয়ে থাকে, তাহলে তার উত্তরাধিকারীদের টাকা দেওয়া জরুরি।
কিন্তু যদি এমন হয় যে ওই টাকার মালিকই অজানা যেমন প্রশ্ন থেকেও এমনটাই বোঝা যাচ্ছে এবং টাকার সঠিক পরিমাণও জানা না থাকে, তাহলে একটি সতর্ক ও সম্ভাব্য হিসাব করে তার চেয়ে কিছু বেশি পরিমাণ টাকা আপনার পক্ষ থেকে গরিবদের মধ্যে সদকা করে দিতে হবে। ইনশাআল্লাহ এভাবে সদকা করলে আল্লাহ তাআলার দরবারে দায়িত্ব থেকে মুক্ত হয়ে যাবেন।
ইনশাআল্লাহ।
সূরা আল বাকারা, আয়াত নং ১৮৮
وَلَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ وَتُدۡلُوۡا بِہَاۤ اِلَی الۡحُکَّامِ لِتَاۡکُلُوۡا فَرِیۡقًا مِّنۡ اَمۡوَالِ النَّاسِ بِالۡاِثۡمِ وَاَنۡتُمۡ تَعۡلَمُوۡنَ
তোমরা পরস্পরে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভোগ করো না এবং বিচারকের কাছে সে সম্পর্কে এই উদ্দেশ্যে মামলা রুজু করো না যে, মানুষের সম্পদ থেকে কোনও অংশ জেনে শুনে পাপের পথে গ্রাস করবে।
তাফসীরে কুরতুবী:
الثانية : الخطاب بهذه الآية يتضمن جميع أمة محمد صلى الله عليه وسلم ، والمعنى : لا يأكل بعضكم مال بعض بغير حق ، فيدخل في هذا : القمار والخداع والغصوب وجحد الحقوق ، وما لا تطيب به نفس مالكه ، أو حرمته الشريعة وإن طابت به نفس مالكه ، كمهر البغي وحلوان الكاهن وأثمان الخمور والخنازير وغير ذلك ، ولا يدخل فيه الغبن في البيع مع معرفة البائع بحقيقة ما باع لأن الغبن كأنه هبة ، على ما يأتي بيانه في سورة ” النساء ” ، وأضيفت الأموال إلى ضمير المنهي لما كان كل واحد منهما منهيا ومنهيا عنه ، كما قال : ولا تقتلوا أنفسكم . وقال قوم : المراد بالآية ولا تأكلوا أموالكم بينكم بالباطل أي في الملاهي والقيان والشرب والبطالة ، فيجيء على هذا إضافة المال إلى ضمير المالكين . من تفسير القرطبي
উল্লেখিত আয়াত ও তাফসীর দ্বারা বুঝা যায়, অন্যায়ভাবে কারো সম্পদ ইত্যাদী দখল করার অনুমোদন ইসলাম দেয়না। চাই তা অমুসলিমের সম্পদ হোক না কেন।
عَنْ آبَائِهِمْ دِنْيَةً عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” أَلاَ مَنْ ظَلَمَ مُعَاهِدًا أَوِ انْتَقَصَهُ أَوْ كَلَّفَهُ فَوْقَ طَاقَتِهِ أَوْ أَخَذَ مِنْهُ شَيْئًا بِغَيْرِ طِيبِ نَفْسٍ فَأَنَا حَجِيجُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ” .
সুলাইমান ইবনে দাউদ মোহরী (রাহঃ) …. রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাহাবীদের কিছু ছেলে তাদের পিতা থেকে বর্ণনা করেছেন, যারা পরস্পর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। তাঁরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সূত্রে বর্ণনা করেন যে, তোমাদের যে কেউ কোন যিম্মীর উপর অত্যাচার করবে, বা তার হক নষ্ট করবে, কিংবা তার সামর্থের বাইরে তাকে কষ্ট দিবে, অথবা ইচ্ছার বিরুদ্ধে (জোরপূর্বক) তার কোন জিনিস নিবে, আমি কিয়ামতের দিন তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করব।
কিতাবুস সুনান, হাদিস নংঃ ৩০৪১ অন্তর্জাতিক হাদিস নংঃ ৩০৫২
معارف السنن : “قال شیخنا: ویستفاد من کتب فقهائنا کالهدایة و غیرها: أن من ملك بملك خبیث، و لم یمكنه الرد إلى المالك، فسبیله التصدقُ علی الفقراء … قال: و الظاهر أنّ المتصدق بمثله ینبغي أن ینوي به فراغ ذمته، ولایرجو به المثوبة.”
(أبواب الطهارة، باب ما جاء: لاتقبل صلاة بغیر طهور، ج:1، ص:34، ط: المکتبة الأشرفیة)
والله أعلم بالصواب
উত্তর লিখনে,
মুহা. শাহাদাত হুসাইন , ছাগলনাইয়া, ফেনী।
সাবেক শিক্ষার্থী: ইফতা বিভাগ
তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
সত্যায়নে
মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী দা.বা.
পরিচালক– তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস Ahle Haq Media
