প্রচ্ছদ / অপরাধ ও গোনাহ / আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে মনে সন্দেহ রেখে ইবাদতকারী কি কাফের বলে গণ্য হবে?

আল্লাহর অস্তিত্ব নিয়ে মনে সন্দেহ রেখে ইবাদতকারী কি কাফের বলে গণ্য হবে?

প্রশ্ন

একজন মানুষের মনে যদি আল্লাহর অস্তিত্বে সন্দেহ তৈরি হয়, কিন্তু সে নামাজ সহ যাবতীয় ইবাদত করতে থাকে।

এমতাবস্থায় সে মারা যায় তাহলে কী সে কিয়ামতের ময়দানে কাফির হিসেবে গণ্য হবে? সে কি চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবে?

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

যদি মুখে কুফরী কথা উচ্চারণ না করে, কিংবা কোন কুফরী বা শিরকী কাজ না করে, তাহলে মনে মনে সন্দেহ তৈরী হবার দ্বারা ব্যক্তি কাফের হিসেব গণ্য হবে না।

তাই আশা করা যায়, তার আমল ভালো হলে উক্ত ব্যক্তি জান্নাতী হবে। বাকি এমন খারাপ চিন্তা আসলে, দ্রুত তওবা করা, ইস্তিগফার করে নিতে হবে।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم إِنَّ اللهَ تَجَاوَزَ لِي عَنْ أُمَّتِي مَا وَسْوَسَتْ بِهِ صُدُورُهَا مَا لَمْ تَعْمَلْ أَوْ تَكَلَّمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, (আমার বরকতে) আল্লাহ আমার উম্মতের অন্তরে উদিত ওয়াসওয়াসা (পাপের ভাব ও চেতনা) মাফ করে দিয়েছেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তা কাজে পরিণত করে অথবা মুখে বলে। [সহীহ বুখারী-১/৩৪৩, হাদীস নং-২৫২৮, সহীহ মুসলিম-১/৭৮, হাদীস নং-১২৮, সুনানে নাসায়ী-২/৮৬, হাদীস নং-৩৪৬৩, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৯৫৪৩]

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ جَاءَ نَاسٌ مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَسَأَلُوهُ إِنَّا نَجِدُ فِي أَنْفُسِنَا مَا يَتَعَاظَمُ أَحَدُنَا أَنْ يَتَكَلَّمَ بِهِ ‏.‏ قَالَ ‏ وَقَدْ وَجَدْتُمُوهُ ‏قَالُوا نَعَمْ ‏.‏ قَالَ ‏‏ ذَاكَ صَرِيحُ الإِيمَانِ

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কতিপয় সাহাবী তাঁর সমীপে এসে বললেন, আমাদের অন্তরে এমন কিছু সংশয়ের উদয় হয়, যা আমাদের কেউ মুখে উচ্চারণ করতেও মারাত্মক মনে করে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তরে বললেনঃ সত্যই তোমাদের তা হয়? তারা জবাব দিলেন, জ্বী, হ্যাঁ। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ এটই স্পষ্ট ঈমান। (কারণ ঈমান আছে বলেই সে সম্পর্কে ওয়াসওয়াসা ও সংশয়কে মারাত্মক মনে করা হয়।) [সহীহ মুসলিম-১/৭৯, হাদীস নং-১৩২, সুনানে আবূ দাউদ-২/৬৯৭ হাদীস নং ৫১১১]

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ سُئِلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم عَنِ الْوَسْوَسَةِ قَالَ ‏ ‏ تِلْكَ مَحْضُ الإِيمَانِ

আবদুল্লাহ রাঃ বলেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে ওয়াসওয়াসা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বললেন, এটাই সত্যিকারের ঈমান। [সহীহ মুসলিম-১/৭৯, হাদীস নং-১৩৩, সুনানুল কুবরা লিলবায়হাকী, হাদীস নং-১০৪৩২]

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

‘নো সেক্স’ ‘আমি তোমাকে টাচ করবো না’ বলার দ্বারা কি ঈলা হয়ে যায়?

প্রশ্ন আস্সালামুআলাইকুম হুজুর, গত প্রায় ৯ মাস ধরে মারাত্মক তালাক এর ওয়াসওয়াসা এর শিকার ছিলাম। …