প্রচ্ছদ / প্রশ্নোত্তর / রোযা রেখে কাফফারা আদায়ে সক্ষম হওয়া সত্বেও ফেদিয়া দিলে দায়মুক্ত হবে কি?

রোযা রেখে কাফফারা আদায়ে সক্ষম হওয়া সত্বেও ফেদিয়া দিলে দায়মুক্ত হবে কি?

প্রশ্ন

কোন ব্যক্তি জীবনে অনেক রোজা পানাহার করে ভেঙেছে এবং অনেক রোজা রাখেনি। সে একাধারে ৬০ টি রোজা রাখতে সক্ষম। কিন্তু সে কি ৬০ টি রোজা না রেখে তার বদলে অন্য কোন উপায়ে কাফফারা আদায় করতে পারবে? এবং রোজা গুলোর ক্বাযা আদায় না করে ফিদিয়া দিলে জায়েজ হবে কিনা?

প্রশ্নকর্তা- শাফায়াত সিদ্দিক

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

কাফফারার রোযা রাখতে সক্ষম ব্যক্তি অন্য কোন উপায়ে কাফফারা আদায় করলে কাফফারা আদায় হবে না। যে ব্যক্তি লাগাতার ৬০টি রোযা রাখতে সক্ষম নয়, কেবল তার জন্য ৬০ জন মিসকিনকে দুই বেলা খানা বা দুই জোড়া কাপড় দেয়ার বিধান। অর্থাৎ যার উপর কাফফারা আবশ্যক সে যদি লাগাতার ৬০দিন রোযা রাখতে সক্ষম না হয়, তাহলে সে ৬০ মিসকিনকে দুই বেলা খানা খাওয়াবে বা দুই জোড়া জামা দিয়ে দিবে। যা সদকায়ে ফিতির পরিমাণ অর্থ হয়ে থাকে।

কিন্তু ৬০ দিন লাগাতার রোযা সক্ষম হলে তার জন্য এভাবে ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়ালে বা কাপড় দিলে তার কাফফারা আদায় হবে না।

রোযার কাযার আদায় করতে সক্ষম থাকা অবস্থায় রোযার ফেদিয়া দেয়া অনর্থক কাজ ছাড়া কিছু নয়। কারণ সক্ষম থাকা অবস্থায় ফেদিয়া দিলে রোযা রাখার দায়িত্ব থেকে মুক্ত হবে না। তাই রোযা রাখতে সক্ষম হলে কাযাই আদায় করতে হবে। {বিনায়া শরহুল হিদায়া-৪/৩০৮}

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ رَجُلٌ فَقَالَ: هَلَكْتُ، قَالَ: «وَمَا أَهْلَكَكَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي فِي رَمَضَانَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَعْتِقْ رَقَبَةً» قَالَ: لَا أَجِدُ، قَالَ: «صُمْ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» قَالَ: لَا أُطِيقُ، قَالَ: «أَطْعِمْ سِتِّينَ مِسْكِينًا»

  অনুবাদ- হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে এক ব্যক্তি এসে বলল, আমি ধ্বংস হয়ে গেছি। রাসূল সাঃ জিজ্ঞাসা করলেন, তোমাকে কে ধ্বংস করেছে? সাহাবী বললেন, রমজানে আমি আমার স্ত্রীর সাথে সহবাস করে ফেলেছি। রাসূল সাঃ তাকে বললেন, তাহলে এর বদলে একটি গোলাম আযাদ কর। সাহাবী বললেন, আমি এতে সক্ষম নই। নবীজী সাঃ বললেন, তাহলে লাগাতার দুই মাস রোযা রাখ। সাহাবী বললেন, আমি এতেও সক্ষম নই। তখন রাসূল সাঃ বললেন, তাহলে তুমি ৬০ জন মিসকিনকে খানা খাওয়াও। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-১৬৭১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৬৯৪৪, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-১১০৭, সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-১৯৪৯, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৩৫২৭}

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *