প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / স্ত্রী স্বামীকে বলল ‘যাও আমি তোমাকে তালাক দিলাম’ এর দ্বারা কি তালাক হয়?

স্ত্রী স্বামীকে বলল ‘যাও আমি তোমাকে তালাক দিলাম’ এর দ্বারা কি তালাক হয়?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু

প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি প্রশ্নটি  বড় হয়ে যাওয়ার জন্য!

বিবাহের কাবিননামায় ১৮ নাম্বার ধারার মধ্যে একটি লেখা থাকে ‘স্বামী স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছে কি না? করিয়া থাকিলে কি কি শর্তে?’ আমার বিবাহের কাবিননামায় এই ঘরে কি লেখা হয়েছে সেটা আমি নিজেই বলতে পারিনা, আমি শুধু স্বাক্ষর দিয়েছি। আমার স্বাক্ষর করার আগে যদি কাজী সাহেব ওই ঘরে ‘হ্যা’ শব্দ লিখে থাকে? এতে করে কি আমার স্ত্রী তালাকের অধিকার পেয়ে যাবে? এবং পরবর্তীতে কি সে চাইলেই আমাকে তালাক দিয়ে দিতে পারবে? আমি তো সেখানে ইচ্ছে করে ‘হ্যা’শব্দ লেখিনি। আর আমার বিবাহের সময় আমার স্ত্রী নাবালিকা ছিল, বিবাহের মধ্যে কবুল বলেছিল আমার শ্বশুর, কয়েকদিন আগে আমার স্ত্রী আমার সাথে মজা করতে গিয়ে, বলে ফেলল, ‘যাও তোমাকে তালাক দিয়ে দিলাম’ সেই মুহূর্তটা একান্তই মজার মুহূর্ত ছিল, আমাদের মধ্যে কোনো রকম ঝগড়া ছিল না। আর আমার স্ত্রীও জানত যে কোন স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিলে তালাক হয় না, তাই সে তালাক শব্দ উচ্চারণ করেছিল। তারপর আমি তাকে বিষয়টা বললাম যে বিবাহের সময় যদি, কাবিননামার 18 নম্বর ঘরের মধ্যে স্বামী ‘হ্যা’ সূচক শব্দ লিখে থাকে তাহলে এর দ্বারা হয়তো স্ত্রী তালাকের অধিকার পেয়ে যেতে পারে, সুতরাং তোমার তালাক শব্দ উচ্চারণ করার দ্বারা হয়তো তালাক হয়েও যেতে পারে। তখন সে বলল যে আমি তো এই বিষয়ে কিছুই জানি না আমি তো শুধু জানি যে স্ত্রী তালাক দিলে তালাক হয় না সেই জন্যই বললাম। তারপর আমি তাকে বললাম যে তুমি যদি ওই লেখার কারণে অধিকার পেয়েও থাকো তাহলে তুমি আজকে থেকে অধিকার ছেড়ে দিতে পারো, কারণ তুমি অধিকার ছেড়ে দিলে সামনে এরকম ভাবে তোমার মুখ থেকে তালাক শব্দ উচ্চারণ করলেও তালাক হবে না। তখন সে বলল আমার কাছে কোন তালাকের অধিকার নাই, আমি সেই অধিকার রাখতে চাইনা। এই পুরো কথা থেকে আমার কয়েকটি প্রশ্ন,

(ক) বিবাহের কাবিননামার 18 নম্বর ঘরে স্বামী না জেনে তালাকের অধিকার দিয়ে থাকলে কি স্ত্রী তালাকের অধিকার পেয়ে যাবে?

(খ) যদি তালাকের অধিকার পেয়েই থাকে, তাহলে স্ত্রী নিজের তালাকের অধিকার সম্পর্কে না জেনে (নিজের কথা অর্থহীন মনে করে)এমনিতেই মজা করে তালাক দেওয়ার কারনে কি তালাক সংগঠিত হয়ে যাবে?

(গ) পরবর্তীতে স্ত্রী নিজ থেকে সে অধিকার ছেড়ে দিলে কি পুনরায় সে অধিকার পাবে?

(ঘ) এক্ষেত্রে স্ত্রী কর্তৃক ‘যাও তোমাকে তালাক দিলাম’ এই কথার দ্বারা তালাক হলে, স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার সুরত কী?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আমাদের ওয়েব সাইটের তালাক সংক্রান্ত ক্যাটাগরিতে এ বিষয়ে একাধিক উত্তর প্রকাশিত হয়েছে। দয়া করে দেখে নিন।

আপনার উক্ত প্রশ্নে মূল বিষয় হল, আপনার স্ত্রীর বলা ‘যাও আমি তোমাকে তালাক দিয়ে দিলাম’ এ কথা বলার দ্বারা তালাক হল কি না?

না, উপরোক্ত শব্দ দ্বারা তালাক হয়নি।

সুতরাং আপনার পেরেশান হবার কিছু নেই।

عن ابن المسيب رض قال: الطلاق بالرجال والعدة بالنساء (مصنف عبد الرزاق-7/236، رقم-12951)

عن عبد الله بن مسعود رض قال: الطلاق بالرجال والعدة بالنساء (المعجم الكبير للطبرانى-9/337، رقم-9697)

الطلاق بالرجال والعدة بالنساء… وقوله فإنه حينئذ أنسب من أن يراد به الإيقاع بالرجال، ولأنه معلوم من قوله تعالى فطلقوهن. الآية. (مرقاة المفاتيح، باب الخلع والطلاق، البحث على أن العبرة فى العدة بالمرأة-6/396، تحت رقم الحديث-3289)

جعل الطلاق بيد الزوج لا بيد الزوجة

إن الذى يملك الطلاق إنما هو الزوج…. ولا تلملكه الزوجة إلا بتوكيل من الزوج أو تفويض منه  (الفقه الأسلامى وأدلته-7/347، 355)

لأن الطلاق لا يكون من النساء (رد المحتار-4/361)

ومحله المنكوحة وأهله زوج عاقل بالغ مستقظ (الدر المختار مع رد المحتار-4/431، هندية-1/348، 353

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *