প্রচ্ছদ / ওয়াকফ/মসজিদ/ঈদগাহ / দাফন হয় না এমন কবরস্থানে স্কুল নির্মাণ করা যাবে কি?

দাফন হয় না এমন কবরস্থানে স্কুল নির্মাণ করা যাবে কি?

প্রশ্ন

আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ,

হুজুর সরাসরি আমাদের প্রশ্নঃ

আমাদের গ্রামের পরিত্যক্ত কবরস্থান, গত ৩0-৩৫ বছরের মধ্যে সেখানে কোন কবরও দেয়া হয়না এবং বর্তমানে সেখানে কবরের কোন চিহ্নও নাই। লোকালয়ের ভিতর হওয়ায় সেটিকে আর কবরস্থান হিসাবে ব্যাবহার করা হয়না । গ্রামে কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় নাই, আর উক্ত কবরস্থানের জমিটি গ্রামের মধ্যবর্তি স্খানে অবস্থিত। যদি কবরস্থান কমিটি উক্ত জমিটি বিক্রয় বা বিনিময় করে তাহলে, উক্ত কবরস্থানের জমিতে কোন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা যাবে কিনা।

১. প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা গলে পেক্ষে। ও

২. প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা না গলে বিপক্ষে ।

হুজুরের সমীপে বিনিত আবেদন উভয় দিকের প্রযোজনীয় ব্যাক্ষা সহ আমাদের প্রশ্নের সঠিক উত্তর প্রদানে মর্জি হউন।

বিনিতঃ

মোঃ নূরতাজুল ইসলাম

পিতাঃ মৃতআব্দুল মান্নান বিশ্বাস

গ্রামঃ মনোহরপুর।

পোষ্ট অফিসঃ উজলপুর

ইউনিয়নঃ কুতুবপুর,

মেহেরপুর সদর।

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

ওয়াকফকৃত কবরস্থানে দীর্ঘদিন যাবত দাফন বন্ধ থাকলে, সেইসাথে কবরস্থান হিসেবে ব্যবহারের আর প্রয়োজন না হলে, সর্বোচ্চ তাতে প্রয়োজনে মসজিদ নির্মাণ করা যাবে। অন্য কোন কাজে তা ব্যবহার করা বা তা বিক্রি করা কোনটাই জায়েজ হবে না।

আর যদি তাতে ভবিষ্যতে দাফন করার প্রয়োজন হয়, তাহলে মসজিদ নির্মাণও জায়েজ হবে না।

তাই, ওয়াকফকৃত কবরস্থানটিকে বিক্রি করা বা তাতে স্কুল নির্মাণ কোনটিই শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে জায়েজ নয়।

عَنِ ابْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَنَّ عُمَرَ تَصَدَّقَ بِمَالٍ لَهُ عَلَى عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، وَكَانَ يُقَالُ لَهُ ثَمْغٌ وَكَانَ نَخْلًا، فَقَالَ عُمَرُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنِّي اسْتَفَدْتُ مَالًا وَهُوَ عِنْدِي نَفِيسٌ، فَأَرَدْتُ أَنْ أَتَصَدَّقَ بِهِ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «تَصَدَّقْ بِأَصْلِهِ، لاَ يُبَاعُ وَلاَ يُوهَبُ وَلاَ يُورَثُ، وَلَكِنْ يُنْفَقُ ثَمَرُهُ»، فَتَصَدَّقَ بِهِ عُمَرُ،

ইবনু ‘উমার (রাঃ) হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সময়ে ‘উমার (রাঃ) নিজের কিছু সম্পত্তি সদাকাহ করেছিলেন, তা ছিল, ছামাগ নামে একটি খেজুর বাগান। ‘উমার (রাঃ) বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি সম্পদ পেয়েছি, যা আমার নিকট খুবই পছন্দনীয়। আমি সেটি সদাকাহ করতে চাই।’ নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, ‘মূল সম্পদটি এ শর্তে সদাকাহ কর যে তা বিক্রি করা যাবে না, দান করা যাবে না এবং কেউ ওয়ারিস হবে না, বরং তার ফল দান করা হবে। অতঃপর ‘উমার (রাঃ) সেটি এভাবেই সদাকাহ করলেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-২৭৬৪]

على أنهم صرحوا بأن مراعاة غرض الواقفين واجبة (رد المحتار، كتاب الوقف، مطلب: مراعاة غرض الواقفين يصلح مخصصا-6/665)

شرط الواقف كنص الشراع أى فى المفهوم والدلالة ووجوب العمل به (الدر المختار، كتاب الوقف، مطلب فى قولهم شرط الواقف كنص الشارع، ومطلب بيان مفهوم المخالفة-6/649، الأشباه والنظائر، كتاب الوقف، الفن الثانى، الفوائد-2/106، تنقيح الفتاوى الحامدية-1/126)

لو أن مقبرة من مقابر المسلمين عفت فبنى قوم فيها مسجدا لم أر بذلك بأسا، لأن المقابر وقف من أوقاف المسلمين لدفن موتاهم، لا يجوز لأحد أن يملكها فإذا درست واستغنى عن الدفن فيها جاز صرفها إلى المسجد، لأن المسجد أيضا وقف من أوقاف المسلمين، لا يجوز تمليكه لأحد، فمعناهما واحد (عمدة القارى شرح صحيح البخارى، باب هل تنبش قبور مشركى الجاهلية ويتخذ مكانها مسجدا الخ-4/179 دمشق، 3/435 تحت رقم-428 دار الفكر بيروت

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক ও প্রধান মুফতী-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *