প্রচ্ছদ / ওয়াকফ/মসজিদ/ঈদগাহ / মসজিদ নির্মাণের পর তা ভেঙ্গে অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে?

মসজিদ নির্মাণের পর তা ভেঙ্গে অন্য কোন কাজে ব্যবহার করা যাবে?

প্রশ্ন:

সরকারী যায়গা মুসল্লিদের টাকায় ক্রয় করা হয়। ক্রয় করার সময় সরকার পক্ষ থেকে শর্ত দেয়া হয় যে, এখানে মসজিদ, পাঠাগার ও গবেষণাগার ইত্যাদী নির্মাণ করা যাবে। এছাড়া ব্যক্তিগত কোন কাজে এটাকে ব্যবহৃত করা যাবে না। ক্রয় করার পর মসজিদ কমিটির লোকজন কিছু অংশে মসজিদ কিছু অংশে মাদরাসা, আর কিছু অংশে ইমাম সাহেবের জন্য কামরা, অযুখানা ও টয়লেট নির্মাণ করে। এছাড়া কিছু অংশে ম্যাছ নির্মাণ করে ভাড়া দেয়। বর্তমানে উক্ত মসজিদটি ভেঙ্গে নতুন করে সংস্কার করা হচ্ছে। কমিটির সিদ্ধান্ত হল পূর্ণ যায়গাটিতে বড় বিল্ডিং করে নিচতলা মার্কেট করে উপরতলা মসজিদ করা হবে। কমিটির এই সীদ্ধান্তটি কি শরীয়ত সম্মত? দয়া করে কুরআন সুন্নাহ ও শরয়ী দলিলের ভিত্তিতে জানালে উপকৃত হব।

নিবেদক

বান্দা খালেদ মাহমুদ

সেক্রেটারী খিলগাঁও তালতলা মার্কেট মসজিদ ঢাকা

জবাব

بسم الله الرحمن الرحيم

কোন স্থানকে যখন মসজিদ হিসেবে আলাদা করে দেয়া হয়, এবং তাতে জনসাধারণকে নামায পড়ার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, তখন সেটা শরয়ী মসজিদে রূপান্তরিত হয়ে যায়। সেই স্থানটি জমিনের নিচ থেকে নিয়ে আসমান পর্যন্ত পুরোটাই মসজিদ হয়ে যায় কিয়ামত পর্যন্ত।

সে স্থানটিকে অন্যকোন কাজে ব্যবহার করা কখনোই জায়েজ হবে না। যদি কোন কারণে উক্ত স্থানে আর নামায পড়ার সম্ভাবনা না থাকে তাহলে উক্ত স্থানটি চারিদিকে দেয়াল দিয়ে আটকে দিতে হবে। যেন কেউ উক্ত স্থানের সম্মান নষ্ট না করতে পারে।

উক্ত মূলনীতির আলোকে তালতলা মার্কেট মসজিদটি প্রথম নির্মাণের সময় যেই চৌহদ্দিতে মসজিদ ছিল সেই অংশটি কিয়ামত পর্যন্তের জন্য জমিনের নিচ থেকে আসমান পর্যন্ত মসজিদে শরয়ী হয়ে গেছে। তাই উক্ত স্থানে মসজিদ ব্যতিত আর কোন স্থাপনা নির্মাণ কখনোই জায়েজ হবে না। মসজিদের প্রয়োজনে মার্কেট নির্মাণও জায়েজ নয়। এমনকি মসজিদের প্রয়োজনে টয়লেট, অযুখানা নির্মাণও জায়েজ নয়। সেই স্থান ব্যতিত বাকি স্থানে মার্কেট নির্মাণসহ মসজিদের জন্য প্রয়োজনীয় স্থাপনা নির্মাণ করে মসজিদের প্রয়োজন মিটানো জায়েজ হবে।

قوله تعالى : وأنّ المساجد لله فلا تدعوا مع الله أحداً ( (سورة الجن : 18 

وفى الفتاوى الشامية– أما لو تمت المسجدية ثم أراد البناء منع ……. ولا يجوز أخذ الأجرة منه ولا أن يجعل شيئا منه مستغلا ولا سكنى بزازية (الفتاوى الشامية –كتاب الوقف، مطلب فى احكام المسجد، 6/548

وفيه ايضاوحاصله أن شرط كونه مسجدا أن يكون سفله وعلوه مسجدا لينقطع حق العبد عنه لقوله تعالى { وأن المساجد لله } (الفتاوى الشامية –كتاب الوقف، مطلب فى احكام المسجد، 6/547

وفيه ايضا-لأنه مسجد إلى عنان السماء وكذا إلى تحت الثرى كما في البيري عن الإسبيجابي(الفتاوى الشامية –كتاب الصلاة، باب ما يفسد الصلاة وما يكره فيها، مطلب فى احكام المسجد، 2/428

وفى الفتاوى الهندية-ولو كانت الأرض متصلة يرغب الناس في استئجار بيوتها وتكون غلة ذلك فوق غلة الزرع والنخيل كان للقيم أن يبني فيها بيوتا فيؤاجرها  (الفتاوى الهندية –كتاب الوقف، الباب الخامس في ولاية الوقف 2/414

প্রামান্য গ্রন্থাবলী:

১.সূরাজীন-১৮

২.ফাতওয়ায়ে শামী-৬/৫৪৭-৫৪৮

৩.ফাতওয়ায়ে শামী-২/৪২৮

৪. ফাতওয়ায়ে আলমগীরী-২/৪১৪

৫.ফাতহুল কাদীর-৬/২১৮-২১৯

৬.আল বাহরুর রায়েক-৫/৪২১

৭. খানিয়া আলা হামিশিল হিন্দিয়া-৩/৩০০

৫. ফাতওয়ায়ে মাহমুদিয়া-২১/৪২৮-৪৩০, ৪২৬

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- ahlehaqmedia2014@gmail.com

lutforfarazi@yahoo.com

আরও জানুন

মুসলমানদের জন্য হিন্দু পরিচয় দিয়ে ইসকনের মিছিলে শরীক হওয়ার হুকুম কী?

প্রশ্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকনের ধর্মীয় সাম্প্রদায়িক মিছিলে যেসব মুসলমান শরীক হয়, নিজেদের হিন্দু পরিচয় দেয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *