প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / তালাকের ওয়াসওয়াসা আসলেই কী তালাক হয়ে যায়?

তালাকের ওয়াসওয়াসা আসলেই কী তালাক হয়ে যায়?

প্রশ্ন

আস সালামু আলাইকুম৷ ৷

আশা করি ভাল আছেন।  মাসআলাটা জানা খুব জরুরী।৷ আপনাকে ফোন করার ইচ্ছা ছিল হয়ত আপনাকে ফোনে বুঝাতে পারবনা এজন্য ফোন করি নি ৷ দু একদিনে মধ্যে যদি  সমাধান দিয়ে দেন তাহলে  আমি একটি ফায়সালা নিতে পারতাম ঘটনাটি সদ্য ঘটেছে।   প্রশ্নে আসি।  প্রশ্ন হলো ,   আমি একদা মাসআলা পড়ার সুরতে বলি আমি যে বিবাহ করব সে মহিলা তালাক, তখন থেকে আমার সন্দেহ হয়,  যে তালাক হয়ে গেছে,  এর পর এসন্দেহ বৃদ্বি পেতে পতে একদা এসন্দেহ আসে আমি মুখ দিয়ে বলে দিলাম কি না৷ কোন কিছু নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছিনা, কোন সময় মনে হয় নিশ্চিত বলেছি আবার কোন সময় মনে হয় নিশ্চিত বলি নি,  তারপর একদিন আপনাকে মেইল করে বিস্তারিত বললে৷  আপনি উওর দেন যে কিতাব পড়ার সূরতে তালাক এর সংকল্প শুদ্ধ হয় না৷   আর  নিশ্চিত না হলে সন্দেহের ভিওিতে তালাক হয় না।

এত গেল আপনার উওর৷।

এর পর ও আমার সন্দেহ ছাড়ে নি , ৷    একদিন সন্দেহ হলো আমি আলাক দিয়ে তালাক মুয়াল্লাক করে ফেলেছি একপর্যায়ে মনে হল আমি বলেই দিয়েছি।  তার পর সিন্দান্ত নিলাম যে এত সন্দেহ নিয়ে বিবাহ করার কি দরকার৷  তারপর সিন্দান্ত নিলাম নিকাহে ফূজুলি করে নিব৷  তারপর আমার মনে হলো আমি একদিন বলেছি,   -” যদি কোন ব্যাক্তি বলে  আমি ফুজুলি নিকাহ করলেও তালাক তাহলে তার হুকুমকি হবে”।  এ বাক্য মনে হওয়ার সাথে সাথে আমার মনে হয় আমি,, “*যদি কোন ব্যাক্তি বলে” একথা বলেছি কিনা ।  তারপর চিন্তা ভাবনা করে ইয়াকিন হলো আমি” যদি কোন ব্যাক্তি বলে ” একথা বলেছি।  এসব কথা ভাবতে ভাবতে  এখন  সন্দেহ হয় ” আমি বলে দিয়েছি যে নিকাহে ফুজুলি করলেও তালাক ”  । নিশ্চিত কোন সিন্দান্ত  নিতে পারছিনা। কোন কোন সময় মনে হয় বলে দিয়েছি।

শেষ পর্যন্ত আমাদের মাদরাসার মুফতি সাহেবকে জিগ্গাসা করলাম  আলাক শব্দ দ্বারা তালাক মুয়াল্লক করলে কি তালাকের নিয়ত সঠিক হয়ে যায় কি না৷  হুজুর বললেন তা সরিহ শব্দ ও না আবার কেনাই ও না।  তাই এ শব্দ দ্বারা তালাক মুঅল্লাক করলে তালাক হবেনা।  তার পর ভাবলাম আমি যখন আলাক শব্দ দ্বারা তালাক মুয়াল্লাক করার সন্দেহ থাকার কারণে ,  নিকাহে ফুজুলির ইচ্ছা করেছি।  এখন তো হুজুর বলছেন এশব্দ দ্বারা তালাক মুয়াল্লাক হয় না৷  পরে আমার ইচ্ছা হলো তাহলে তো আর নিজে নিজে নিজে নিকাহ করতে তালাকের কেন সন্দেহ নেই।  কিন্ত এখন প্রশ্ন হলো আমি যদি  একথা বলেই দেই যে নিকাহে ফুজুলি করলেও তালাক।    আমি তো আর এখন নিকাহে ফুজুলী করছিনা৷  তাহলে কি  এখন নিজে নিজে নিকাহ করলে কি তালাক হয়ে যাবে।

সংক্ষেপে প্রশ্ন হলো যদি কেহ বলে আমি নিকাহে ফুজুলি করলে ও তালাক। তাহলে সে নিজে নিজে নিকাহ করলে কি তালাক হয়ে যাবে।  দয়া করে উওরটি  দিবেন।  অন্য প্রশ্ন কারীদের কাছে আমি সময় চাচ্ছি, তাই আমারটা খুব তাড়াতাড়ি দিয়ে দিবেন৷

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

আপনার প্রশ্নটির উত্তর দেয়াই আসলে সমীচীন নয়। কারণ, আপনার মূল সমস্যা হল ওয়াসওয়াসা। ওয়াসওয়াসার রোগিদের আলামত হল, তারা একটি বিষয় মাথাতে ঢুকানোর পর তা আর ঝেড়ে ফেলতে পারে না। অহেতুক এটা নিয়ে ভাবতে থাকে। তার মাথা আর অন্য কিছু নিয়ে কাজ করে না। ব্রেইন এক স্থানে থেমে যায়।

এটা এক ধরণের মানসিক রোগ। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন এর কোন উত্তর নেই। থাকলেও দেয়া উচিত বলে আমরা মনে করি না।

আমরা আপনার কল্যাণকামী হিসেবে মনে করি আপনি তালাক বিষয়ক সব ধরণের চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। যখন কোন বিষয় নিয়ে আপনার বেশি টেনশন হতে থাকবে, তখনি টপিক পরিবর্তন করুন। কোন কাজে মগ্ন হয়ে যান। কারো সাথে আলাপ করুন। কুরআন তিলাওয়াত করুন। নামাজে দাড়ান ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে ওয়াসওয়াসা রোগ দূর করার চেষ্টা করুন।

এভাবে প্রশ্রয় দিতে থাকলে এটা এক সময় মহামারি আকার ধারণ করবে। তখন আপনাকে মানসিক হাসপাতালে ভর্তি করা ছাড়া কোন গতি থাকবে না।

তাই আগেই সাবধান হোন।

আপনি উপরে যে বিশাল বিবরণ দিয়েছেন, এর দ্বারা বুঝা যায়, আপনার কাছে পুরো বিষয়টিই একটি কনফিউশন। একটি ধাঁধা। আপনি করছেন কি করেন নি? বলছেন কী বলেননি?

এটাই আপনার মূল সমস্যা। যেখানে আপনি বিয়েই করেননি। সেখানে তালাক নিয়ে এমন অহেতুক চিন্তা কেন করছেন?

তাই এর কোন সমাধান নেই।

আপনার কোন তালাক হয়নি। এভাবে সন্দেহপ্রবণ অবস্থায় কোন কিছু মনে হলে এর কোন শরয়ী ভিত্তি নেই। এসবই অহেতুক চিন্তা। যা রোগাক্রান্ত মানুষের প্রলাপের মত।

তাই আপনার উপরোক্ত বক্তব্য ও বিবরণ দ্বারা বুঝা যায়, এখানে কোন তালাক হবার সম্ভাবনা নেই।

তাই তালাক বিষয়ক ভাবনা বাদ দিয়ে স্বাভাবিক জীবন যাপন করুন। মাথা থেকে তালাক বিষয়ক সকল চিন্তা দূর করুন।

আপনার জন্য স্বাভাবিক ও সুস্থ্য জীবনের দুআ মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে।

يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)

لو كرر مسائل الطلاق بحضرة زوجته ويقول: أنت طالق ولا ينوى طلاقا لا تطلق، (فتح القدير، كتاب الطلاق، باب ايقاع الطلاق-4/4)

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com

আরও জানুন

আমানতের টাকায় মালিকের অনুমতি ছাড়া ব্যবসা করে লাভ করলে লাভের টাকা কে পাবে?

প্রশ্ন কারো কাছে এক লাখ টাকা আমানত রাখা হলো। কিন্তু আমানতের টাকা দিয়ে আমানত গ্রহণকারী …