প্রশ্নঃ
সম্মানিত মুফতি সাহেব !! আপনার কাছে জানার বিষয় হল সাহু সিজদাহ্ কখন ওয়াজিব হয়??? নামাজের মধ্যে কোন ফরজ ছুটে গেলে??ওয়াজিব ছুটে গেলে?? নাকি কোন সুন্নাত ছুটে গেলে??
From: Md Mijanur Rahman [email protected]>
بسم الله الرحمن الرحيم
উত্তর:
কখনও কখনও নামাজ পড়ার সময় ভুল হয়ে যায়। এই ভুলে এমন কিছু বাদ পড়ে বা এদিক-ওদিক হয়ে যায়, যা নামাজ নষ্ট করে দেয় না, কিন্তু নামাজে ঘাটতি সৃষ্টি হয়। সেই ঘাটতি পূরণ করার জন্য নামাজের শেষে দু’টি বিশেষ সিজদা করা হয়। একে ভুলের সিজদা (সিজদাহে সাহু) বলা হয়। এই সিজদা করলে নামাজের ঘাটতি পূরণ হয়ে যায় এবং নামাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়।
যে সব ভুল হলে সাহু সিজদা করতে হয়:
১,২. ওয়াজিবকে আগে বা পরে নিয়ে গেলে।
৩. ওয়াজিব তাকরার (একাধিকবার) করলে।
৪. ফরজ/ ওয়াজিব আদায়ে তিন তাসবীহ পরিমাণ সময় অতিবাহিত হয়ে গেলে।
৫. কোন ওয়াজিব অনিচ্ছাকৃত ছুটে গেলে। যেমন, সূরা ফাতিহা / সূরা মিলানো বাদ পড়ে যাওয়া।
৬. ওয়াজিবকে পরিবর্তন করে ফেললে। যেমন, আস্তের জায়গায় জোরে পড়া। জোরের জায়গায় আস্তে পড়া।
উপরোক্ত কোন কাজ যদি ইচ্ছাকৃত করা হয়/ ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় নামাজের ফরজ বিধান ছুটে যায় তাহলে নামাজ পূনরায় পড়তে হবে।
উল্লেখ্য, নামাজের সুন্নত বা মুস্তাহাব অনিচ্ছাকৃত ছুটে গেলে সাহু সিজদা ওয়াজিব হয়না। ইচ্ছাকৃত ছেড়ে দেয়া মাকরুহ। তবে এজন্য নামাজ নষ্ট না হলেও সাওয়াবে ঘাটতি হয়।
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ ابْنِ بُحَيْنَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، أَنَّهُ قَالَ: «إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَامَ مِنَ اثْنَتَيْنِ مِنَ الظُّهْرِ لَمْ يَجْلِسْ بَيْنَهُمَا، فَلَمَّا [ص:68] قَضَى صَلاَتَهُ سَجَدَ سَجْدَتَيْنِ، ثُمَّ سَلَّمَ بَعْدَ ذَلِكَ»
আব্দুল্লাহ ইবনে বুহায়না (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যুহরের দু’রাকআত আদায় করে দাঁড়িয়ে গেলেন। দু’রাকআতের পর তিনি বসলেন না। নামায শেষ হয়ে গেলে তিনি দু’টি সিজদা করলেন এবং এরপর সালাম ফিরালেন। সহীহ বুখারী, হাদীস নং: ১২২৫।
عن عبد الله رضي الله عنه مرفوعا: إذا شك أحدكم في صلاته فليتحر الصواب فليتم عليه ثم ليسلم ثم يسجد سجدتين
ইবন মাসউদ রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, যদি তোমাদের কেউ তার সালাতের মধ্যে সন্দিহান হয়ে পড়ে তাহলে সে সঠিক অবস্থা মনে করার জন্য চেষ্টা করবে এবং তার উপর ভিত্তি করবে। অতঃপর সে সালাম বলবে এবং তারপর দুইটি সাজদা করবে। ফিকহুস সুনান, হাদীস নং: ৮৯৯।
الھندیۃ: (126/1، ط: دار الفکر)
وفي الولوالجية: الأصل في هذا أن المتروك ثلاثة أنواع: فرض وسنة وواجب، ففي الأول أمكنه التدارك بالقضاء يقضي وإلا فسدت صلاته، وفي الثاني لاتفسد؛ لأن قيامها بأركانها وقد وجدت، ولايجبر بسجدتي السهو، وفي الثالث: إن ترك ساهيًا يجبر بسجدتي السهو وإن ترك عامدًا لا، كذا التتارخانية. وظاهر كلام الجم الغفير أنه لايجب السجود في العمد، وإنما تجب الإعادة جبرًا لنقصانه، كذا في البحر الرائق”. (4/101)
وفیہ ایضاً:
“ولايجب السجود إلا بترك واجب أو تأخيره أو تأخير ركن أو تقديمه أو تكراره أو تغيير واجب بأن يجهر فيما يخافت، وفي الحقيقة وجوبه بشيء واحد وهو ترك الواجب، كذا في الكافي”. (4/102)
(بدائع الصنائع ،جلد1،ص:244)‘‘
والله أعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
মুহা. শাহাদাত হুসাইন , ছাগলনাইয়া, ফেনী।
সাবেক শিক্ষার্থী: ইফতা বিভাগ
তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
সত্যায়নে
মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী দা.বা.
পরিচালক– তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস Ahle Haq Media
