প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম,
জনাব, আমি একটা ঘোরতর সংকটে পরেছি। আমার বিয়ের ২বছর পর আমার স্বামী আমার চাওয়ার প্রেক্ষিতে আমাকে তালাক দেয়। আমার বিয়ের কোন লিখিত ডকুমেন্ট নেই,শুধু মাত্র ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক বিয়ে হয়েছিল। আমার স্বামী এই ২ বছর আমাকে কোন ভরণ পোষণ দেয় নি এবং আমাদের কোন শারীরিক সম্পর্কও হয়নি। সে আমাকে মোবাইলে বলেছিল “তোমাকে তালাক দিলাম,এক তালাক,দুই তালাক,তিন তালাক”।
এর ১মাস বা তার কিছু বেশি এই সময় পর সে আমার সাথে যোগাযোগ করে অনেক বোঝায় যে আমাদের এটা এক তালাক হয়েছে এবং সে আমাকে আবার বিয়ে করে। কিন্তু আমি মন থেকে সায় পাচ্ছিনা তাই সে অনেক বলার পরেও আমি তার সাথে কোন শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করতে পারিনি।
জনাবের কাছে আকুল আবেদন আমাকে অনুগ্রহ করে একটু নিশ্চিত করুন যে,
১.আমাকে যে উনি একসাথে”এক তালাক,দুই তালাক,তিন তালাক ” বলেছেন এতে করে কি আমি ওনার কাছে হারাম হয়ে যাইনি?
২.আমাদের ২য় বারের বিয়েটা কি যায়েয হয়েছে?
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রথম বিয়ের পর স্বামীর সাথে একাকী এমন কোন স্থানে একত্রিত না হন, যেখানে ইচ্ছে করলে সহবাস করা যেতো,শরয়ী বা অন্য কোন বাধা সেখানে না থাকে। যদিও সহসাব করেননি। কিন্তু সহবাস করার সুযোগ ছিল। এমন স্থানে একাকী একত্রিত না হয়ে থাকলে স্বামী যদি এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক শব্দে তিন তালাক দিয়ে থাকে, তাহলে প্রথম তালাকটি বাইন হিসেবে পতিত হয়েছে। বাকি দুই তালাক পতিত হয়নি।
তাই পরবর্তীতে নতুন বিয়ে করাটা শুদ্ধ ছিল। এ সূরতে তার সাথে ঘর সংসার করাতে শরয়ী কোন বিধিনিষেধ নেই।
কিন্তু যদি একসাথে তিন তালাক দিয়ে দিতো, যেমন আমি তোমাকে তিন তালাক দিলাম বলতো, তাহলে তিন তালাকই পতিত হয়ে যেতো। পরবর্তীতে আর দ্বিতীয় বিয়ে করার সুযোগ ছিল না।
কিন্তু যদি খালওয়াতে সহীহা তথা বিয়ের পর স্বামী স্ত্রী এমন স্থানে একত্রিত হয়েছিল যে, তাতে তারা ইচ্ছে করলে সহবাস করতে পারতো, তাহলে এ অবস্থায় স্বামী তিন তালাক প্রদান করলে তিনটিই হয়ে যাবে।
এ সূরতে পরবর্তী বিয়েটা শুদ্ধ হয়নি। তাই তার সাথে ঘরসংসার করাও জায়েজ হবে না।
উপরোক্ত সূরত বুঝলে আপনি নিজেই বিয়ের অবস্থা ও প্রশ্নের উত্তরটি বের করে নিতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
إذَا طَلَّقَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ ثَلَاثًا قَبْلَ الدُّخُولِ بِهَا وَقَعْنَ عَلَيْهَا فَإِنْ فَرَّقَ الطَّلَاقَ بَانَتْ بِالْأُولَى وَلَمْ تَقَعْ الثَّانِيَةُ وَالثَّالِثَةُ وَذَلِكَ مِثْلُ أَنْ يَقُولَ أَنْتِ طَالِقٌ طَالِقٌ طَالِقٌ (الفتاوى الهندية-1/373، هداية-2/371، رد المحتار-4/512)
قَالَ لِزَوْجَتِهِ غَيْرِ الْمَدْخُولِ بِهَا أَنْتِ طَالِقٌ ثَلَاثًا وَقَعْنَ (وَإِنْ فَرَّقَ) بِوَصْفٍ أَوْ خَبَرٍ أَوْ جُمَلٍ بِعَطْفٍ أَوْ غَيْرِهِ (بَانَتْ بِالْأُولَى) لَا إلَى عِدَّةٍ (وَ) لِذَا (لَمْ تَقَعْ الثَّانِيَةُ) بِخِلَافِ الْمَوْطُوءَةِ حَيْثُ يَقَعُ الْكُلُّ وَعَمَّ التَّفْرِيقُ، (الد المختار مع رد المحتار، كتاب الطلاق غير المدخول بهاب-4/509)
قَوْلُهُ: طَلَّقَ غَيْرَ الْمَدْخُولِ بِهَا ثَلَاثًا وَقَعْنَ) سَوَاءٌ قَالَ أَوْقَعْت عَلَيْك ثَلَاثَ تَطْلِيقَاتٍ أَوْ أَنْتِ طَالِقٌ ثَلَاثًا (البحر الرائق، كتاب الطلاق، فصل فى طلاق غير المدخول بها-2/213، النهر الفائق، كتاب الطلاق، فصل فى الطلاق قبل الدخول-2/352)
وفى الدر المختار: (والخلوة) مبتدأ خبره قوله الآتي كالوطء (بلا مانع حسي) كمرض لأحدهما يمنع الوطء (وطبعي) كوجود ثالث عاقل ذكره ابن الكمال،
وفى رد المحتار: وجعله في البحر مانعا لتحقق الخلوة حيث ذكر أن لإقامة الخلوة مقام الوطء شروطا أربعة: الخلوة الحقيقية، وعدم المانع الحسي أو الطبعي أو الشرعي، (رد المحتار، كتاب النكاح، باب المهر، مطلب في أحكام الخلوة-4/249)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com