প্রচ্ছদ / ভ্রান্ত মতবাদ / জঙ্গি দল হিযবুত তওহিদ এখন রুপ পাল্টিয়ে ভাল সাজার চেষ্টায়!

জঙ্গি দল হিযবুত তওহিদ এখন রুপ পাল্টিয়ে ভাল সাজার চেষ্টায়!

এক সময়ের কট্টরপন্থী জঙ্গী দল হেযবুত তওহীদ এখন সরকারের এবং পুরো জাতির জঙ্গী বিরোধি মনোভাব দেখে এখন সমাজের চোখে ভাল সাজতে জঙ্গীবাদের বিপক্ষে খুব শ্লোগান দিচ্ছে । অথচ ভেতরে ভেতরে চরমপন্থী জঙ্গী আকিদা শিক্ষা দিচ্ছে জঙ্গী দল হেযবুত তওহীদ ।

আমরা সবাই জানি কালেমা , নামায , রোযা , হজ্জ এবং যাকাত এইসব হল ইসলামের মূল ভিত্তি । আর এইসব পালনে যদি কেউ বাধা বা অত্যাচার করে মুসলিমের উপর আঘাত করে তখন সেটা প্রতিরোধের জন্যে সহায়ক হল জীহাদ ।অর্থ্যাৎ অন্যায় ও জুলুমের প্রতিবাদের সবশেষ treatment হল জীহাদ ।

কিন্তুু জঙ্গী দল হেযবুত তওহীদের আমীর লিখেছেন

তাদের লিখা বই ” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা ” তে লিখেছে , ” জেহাদকে আল্লাহ এসলাম প্রতিস্টার নীতি হিসেবে গ্রহন কোরলেন ” (এসলামের প্রকৃত রুপরেখা পৃ ২৮ )

তিনি আরো লিখেছেন ”নামায ঐ জীহাদের জন্য চরিত্র সৃস্টির অনুশীলন । সংগ্রামের মাধ্যমে সমস্ত পৃথিবীতে এই জীবন বিধানকে প্রতিস্টা করতে যে অসাধারন চরিত্রের মানুষ প্রয়োজন , সেই অসাধারন মানুষের শারিরীক চারিত্রিক ও আধ্যাতিক গঠনের জন্য প্রশিক্ষন হল নামায । কিন্তুু উদেশ্য হল সেই সংগ্রাম ” (” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা পৃ ২৯ )

জঙ্গী দল হেযবুতের আমীর আরো লিখেন , তওহীদ ও জীহাদই ইসলামের মূল মন্ত্র । বাকি সব ইবাদত নামায রোযা হজ্জ যাকাত যা কিছু আছে সবই বৃথা যাবে জীহাদ না করলে (” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা পৃ ২৯ )

একটি মানুষকে জঙ্গী বানাতে এতটুকু brain wash ই Enough যা জঙ্গী হেযবুত তওহীদ করছে ।

জীহাদ কখনোই মূল উদেশ্য নয় মুসলিমের । বরং ইমান নামায রোযা সহ সকল ইবাদত এবং সৃস্টির সেবা –হক্কুল্লাহ ও হক্কুল ইবাদ মুসলিমের প্রধান কাজ । সমাজে Peacefully live করা এবং ঐ environment করাও মুসলিমের সবচেয়ে বড় গুন । আর এইসব মানব কল্যান মূলক কাজে মানবতার শত্রুর বিপক্ষে তখন জীহাদ করতে হয় ।

অথচ জঙ্গী হেযবুত তওহীদ জীহাদকেই বানিয়েছে Major আর সব ইবাদতকে বানিয়েছে Minor ।

আজ সরকারের দৃড় প্রদক্ষেপে জঙ্গী জামাআতে ইসলাম দল দমন হয়েছে । কিন্তুু শাড়ি বদল করা এই জঙ্গী দল হেযবুত তওহীদ মুখে সমাবেশে মিটিংয়ে সরকারের আমলাদের সাথে নিয়ে খুব জঙ্গী বিরোধি লেকচার দিয়ে ভাল সেজে চলছে । অথচ কৌশলে এমনভাবে শিক্ষা দিচ্ছে যেন মানুষ অটোমেটিক জঙ্গীবাদিতায় জড়িয়ে পড়ে । তাদের কৌশল হুবহু লামাযহাবি আহলে হাদীসদের মত । আহলে হাদীসরাও মুখে জঙ্গীবিরোধি শ্লোগানে মুখর অথচ তাদের লেকচারের প্রকৃতি মানুষকে অটোমেটিক জঙ্গী বানিয়ে দেয় ।

হেযবুত তওহীদের বইতে লিখা :

এরপর আর কি কোন সন্দেহ থাকতে পারে যে ,এই জাতির উম্মাহর মূল চরিত্র হচ্ছে জেহাদ এবং বিস্ফোরনমুখী এবং ঐ চরিত্র সৃস্টি করেছিলেন আল্লাহর রাসূল সা নিজে । এই বহির্মূখী এবং বিস্ফোরনমুখী চরিত্র তিনি (দ.) সৃস্টি করেছিলেন আল্লাহর নির্দেশেই । এতে তো আর সন্দেহের কারন থাকতে পারেনা ( ”বর্তমানের বিকৃত সুফিবাদ” 35 নং পৃ )

আমরা জানি দাওয়াত ও ভালবাসা দিয়ে সারা পৃথিবীতে ইসলাম ছড়িয়েছে । সাহাবিরা , তাবেয়ীগন ,তাবে তাবেয়ীগন সবাই তাবলীগের জন্য সারা দুনিয়াতে ছড়িয়ে পড়েছিলেন । উপমহাদেশে বহু সূফি যেমন শাহ জালাল রহ , খান জাহান আলী রহ , মইনুদ্দিন চীশতি রহ ইত্যাদি প্রমুখ সূফিগন ভালবাসা ও দরদ দিয়ে ইসলাম প্রচার করে কোটি মুশরিককে ইসলামের পথ দেখিয়েছেন । কিন্তুু হেযবুত তওহীদ এসব মানতে নারাজ ।

তাদের বইতে লিখা , যে উম্মাহকে আল্লাহর রসুল (দ) হাতে তরবারি ধরিয়ে দিয়ে ঘর থেকে পৃথিবীতে বের করে দিয়েছিলেন , সূফিরা সেই উম্মাহের হাত থেকে তরবারি কেড়ে নিয়ে তসবিহ ধরিয়ে দিয়ে পেছন টেনে ঘরে খানকায় বসিয়ে দিলেন ”( ”বর্তমানের বিকৃত সুফিবাদ” ৩৭ নং পৃ )

কাজেই উম্মতে মোহাম্মাদির অর্থই হল প্রচন্ড গতিশীল , বিস্ফোরনমুখী ও দুর্ধর্ষ যোদ্ধা একটি জাতি ‘( ”বর্তমানের বিকৃত সুফিবাদ” ৪০ নং পৃ )

জঙ্গী দল হেযবুত তওহীদের নেতা বায়জিদ খান পন্নী আরো লিখেন , এই দীনের মর্মবানি হল জীহাদ , কেতাল ‘( ”বর্তমানের বিকৃত সুফিবাদ” ৪১ নং পৃ )

অবাক করার বিষয় হল শান্তির দূত নবী সা কে যুদ্ধবাজ নবী হিসেবে আখ্যায়িত করে শিরোনাম দিয়ে পৃথক একটি অধ্যায়ও রচনা করেছেন । সেখানে শিরোনাম দিয়েছেন ”আল্লাহর রসুল ছিলেন যোদ্ধা নবী ” ‘( ”বর্তমানের বিকৃত সুফিবাদ” ৫৫ নং পৃ )

হেযবুত তওহীদের নেতা আরো লিখেন , ”কোরআনে স্বয়ং আল্লাহ যে তার নবী (দ) কে সশস্র সংগ্রামের মাধ্যমে সমস্ত পৃথিবীতে এই জীবন ব্যবস্থা দীনকে প্রতিষ্ঠা আদেশ দিয়েছেন ” ‘( ”বর্তমানের বিকৃত সুফিবাদ” ৫৫ নং পৃ ) । বলা বাহুল্য হেযবুত তওহীদ তার এই মনগড়া কথা প্রমান করতে কুরআনের তিনটি সূরার তিনটি আয়াত সংখ্যা সূরা ফাতাহ ২৮ , সূরা তওবা ৩৩ ও সূরা আস সফ ৯ নং আয়াত সংখ্যা দেয় । অথচ সেসব আয়াতে শুধুই সশস্র সংগ্রামের কোন আদেশই নেই । আমি আয়াতগুলো দিলাম । দেখুন

هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا

28
তিনিই তাঁর রসূলকে হেদায়েত ও সত্য ধর্মসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে একে অন্য সমস্ত ধর্মের উপর জয়যুক্ত করেন। সত্য প্রতিষ্ঠাতারূপে আল্লাহ যথেষ্ট।

هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَلَوْ كَرِهَ الْمُشْرِكُونَ (33)

“আল্লাহ নিজ রাসূলকে সুপথ ও সত্যধর্মসহ পাঠিয়েছেন, যাতে তিনি এ ধর্মকে অন্য সব ধর্মের ওপর বিজয়ী করেন, যদিও তা অবিশ্বাসীদের কাছে অপছন্দনীয়।” (৯:৩৩)

তিনিই সেই মহান সত্তা যিনি তাঁর রসূলকে হিদায়াত এবং ‘দীনে হক’ দিয়ে পাঠিয়েছেন যাতে তিনি এ দীনকে অন্য সকল দীনের ওপর বিজয়ী করেন, চাই তা মুশরিকদের কাছে যতই অসহনীয় হোক না কেন৷ (আস সফ আয়াত নং 9)

এই আয়াতগুলোতে কোথাও শুধু সশস্র সংগ্রামের কথা বলা নেই । বলাবাহুল্য জিহাদ বলতে প্রথমেই যুদ্ধকে বুঝানো হয়না।

জিহাদের একটা অংশ হল যুদ্ধ। যুদ্ধ হচ্ছে এর সর্বশেষ বা চুড়ান্ত স্তর।

যেমন মহিলাদের জীহাদ বলতে এসেছে ,

# আয়েশা (রাঃ) বর্ণিত,এক হাদীসে এসেছে- হযরত আয়েশা (রাঃ)হতে বর্ণিত,তিনি বলেন:হে আল্লাহর রাসুল (সাঃ)!মহিলাদের কি কোন জিহাদ আছে?রাসুল (সাঃ)বললেন:মহিলাদের জন্য জিহাদ আছে কিন্তু,তাতে কোন যুদ্ধ নেই। আর তা হল- হজ্জ ও ওমরাহ আদায় করা। (ইবনে মাজাহ,দারে কুতনী,মুসনাদে আহমাদ)

আর জীহাদের একটি অংশ হল দাওয়াত দেয়া তথা অপরাধিদের বুঝানো । প্রথমেই সশস্র যুদ্ধের বিধান নয় । আল্লাহ তায়ালা বলেন –

মুমীনদের জন্য এটা কখনো উচিত নয় যে,তারা সবাই একই সঙ্গে যুদ্ধের জন্য বের হয়ে পড়বে l এমন কেন হয়না যে,তাদের প্রত্যেক বড় দল থেকে একটি ছোট দল বের হবে ধর্মীয় জ্ঞান শেখার জন্য যেন তারা বাকিদেরকে ভয় (আখিরাতের) দেখাতে পারে যখন তারা এলাকায় ফিরে আসবে l হয়তোবা ওরা এরই মাধ্যমে সঠিক পথে ফিরে আসবে l [সূরা তওবা – ১২২]

যখন রাসুল (সা) জিহাদের জন্য বের হতেন বা কোন বাহিনীকে প্রেরন করতেন তখন তাদেরকে উপদেশ দিতেন। তাদের সাথে যুদ্ধ সুচনা করার পূর্বে তিন দিন পর্যন্ত দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার পরও যদি ইসলাম গ্রহন না করে তবে জিজিয়া বা টেক্স তলব করতে হবে। এরপর যদি এই শর্ত না মানে তাহলে তলোয়ার দ্বারা ফায়সালা করতে হবে। সুতরাং প্রথমে দাওয়াত দেয়া এবং জিজিয়া তলব করার অর্থ হবে কাফেরেরা জিজিয়া দিয়ে মুসল্মানদের সাথে সুন্দরভাবে জীবন যাপন করবে। কাফেরেরা মুসল্মানদের চরিত্র দেখার পরে তা গ্রহন করে ঈমান আনবে।

যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে কিতাল হলো জিহাদের একটি অংশ এবং সর্বশেষ ইজতেরারী অংশ ।

বিজ্ঞ আলেমগন এটাকে ব্যাখ্যা করেছেন , হযরত ওমর পালনপুরী (রহ) কিতালের একটি উদাহরন পেশ করেছেন এভাবে যে, কিতাল শরীয়াতের দৃষ্টিতে অপারেশনের মত। অর্থাৎ কারো শরীরে যদি কোন ফোড়া হয় এবং ঔষধ সেবনের দ্বারা তা ভালো না হয় তখন ডাক্তারেরা বাধ্যতামুলক ফোড়াকে অপারেশন করে এবং গোশতের টুকরাটি কেটে ফেলে দেয়। যাতে তার শরীরের অন্য স্থানে ক্ষতি সাধন করতে না পারে।

উক্ত উদাহরনটির ব্যাখ্যা বিশ্লেষন মুফতি শফী (রহ) এভাবে করেছেন যে, যখন সমগ্র বিশ্বের শরীরে ভয়ানক জীবানু সৃস্টি হয়েছে। তখন সমগ্র বিশ্বটা একটা অসুস্থ ব্যাক্তির মত হল। অতঃপর আল্লাহ তায়ালা তার একজন অভিজ্ঞ সংশোধনকারী ডাক্তার জনাব রাসুলুল্লাহ (সা) কে পাঠিয়েছেন। যিনি তিপ্পান্ন বছর পর্যন্ত ধারাবাহিক ভাবে মানুষের অংগ প্রত্যংগ ও রগ সমুহকে সংশোদন করার দাওয়াত তাবলীগ ফিকির করেছেন। যা দ্ধারা সংশোধনের উপযোগী অংগ ও রগগুলির সংশোধন হয়েছে কিন্তু কিছু অংগ যা একবারে পচে গেছে। সুতরাং পচা গোশতের টুকরাটি যা কাটা ছাড়া অন্য কোন পন্থা নেই নতুবা শরীরের অন্য অংগগুলিকেও নষ্ট করে দিবে। সেজন্য অপারেশন ব্যাতীত অন্য কোন বিকল্প নেই।

অথচ হেযবুত তওহীদ জীহাদ মানেই সশস্র সংগ্রাম নামক জঙ্গী বাদি আকীদায় বিশ্বাসি । এমনকি তাদের বই ” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা ” তে লিখেছে

এই জাতির পথভ্রস্ট লোকেরা যখন নীতি হিসেবে জীহাদ ত্যাগ করলেন তখন তারা বুঝলেননা আল্লাহ ও তার রসুলের দৃস্টিতে তারা মোমেন রইলেননা (”” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা ” পৃ ৭ )

অর্থ্যাৎ সশস্র জীহাদ যে না করবে সে মুসলিমই নয় ।

প্রিয় পাঠক একজন সাধারন শিক্ষিত মুসলিম জানে ইমান সবচেয়ে বড় সম্পদ । আর জীহাদ না করলে যদি কাফির হয়ে যেতে হয় তাহলে সে প্রান দিয়ে হলেও সশস্র জীহাদ যা প্রকৃত পক্ষে সন্ত্রাসে জড়িয়ে পড়বে । তাহলে আমরা পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি মুসলিদের জঙ্গী সন্ত্রাসি বানাতে সুকৌশলে কুরআন হাদীসকে মনের চাহিদা মত ব্যাখ্যা করে মুসলিমকে জঙ্গী বানানো হচ্ছে । অথচ এখন জঙ্গী তকমা থেকে বাচতে লোক

হেযবুত তওহীদ তাদের বইতে আরো লিখেন , আল্লাহর রাসূল যে জাতি গঠন করেছিল ,সে জাতির চরিত্রের সর্বপ্রধান বৈশিস্ট্য ছিল যোদ্ধার চরিত্র । তার প্রমান জাতির নেতা আল্লাহর রসুল সহ সমস্ত জাতির মধ্যে এমন একটা লোকও বোধ হয় খুজে পাওয়া যেত না যার শরীরে অস্ত্রের আঘাতের চিহৃ নেই । আর বর্তমানের এসলাম যে জাতি গঠন করে তার সর্বপ্রধান বৈশিস্ট্য হচ্ছে কাপুরুষতা , ছোট বড় সমস্ত রকম সংঘর্ষ বিপদ আপদ থেকে পলায়ন । যে যত বেশি ধর্মিক সে তত বেশি কাপুরুষ, অস্ত্রের আঘাততো দূরের কথা , এদের গায়ে সূচের খোচার দাগ নেই ।(”” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা ” পৃ ১৫-১৬ )

এমনকি আরো লিখেছে , বর্তমানের এসলামে যুদ্ধতো নেই ই , যদি ব্যতিক্রম হিসেবে কোন ছেলে জীহাদের জন্য মায়ের কাছে অনুমতি চায় ,তবে তার মা চিৎকার করে অজ্ঞান হয়ে যান (”” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা ” পৃ ১৬ )

হেযবুত তওহীদ আরো লিখেছে ” তাওহীদের ওপর ইমানের পরই শ্রেস্ট আমল ঐ তওহীদ প্রতিষ্ঠার জীহাদ (”” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা ” পৃ ৩৯ )

অথচ হাদীসে এসেছে আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. হতে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন: «আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন আমল সর্বোত্তম? তিনি বললেন: ওয়াক্ত মত নামায পড়া। তিনি বললেন: আমি আবার বললাম, তারপর কোনটি? তিনি বললেন: পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করা। তিনি বললেন: আমি আবার বললাম: তারপর কোনটি? তিনি বললেন: আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা।» (-মুসলিম।)

এবার উল্লেখ করব সবচেয়ে মজার বিষয় । ২০০৯ সালের প্রথমদিকে দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা হেজবুত তওহিদ ও হিজবুত তাহরিরসহ আরও আটটি সংগঠনকে কালো তালিকাভুক্ত করে এবং এগুলোকে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠায়। জেলা ও থানা পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা যৌথভাবে কাজ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয়। নিষিদ্ধ সংগঠনগুলো ছাড়াও হেজবুত তওহিদসহ আরও আটটি সংগঠন জঙ্গিদের মদদ দিচ্ছে বলে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়। এরপর থেকেই হেযবুত তওহীদ শাড়ি পাল্টায় । জঙ্গী দলসমূহের লিস্টে নাম আসার সাথে সাথেই শ্লোগান, লিখা,বই , পত্রিকা , সমাবেশ সবকিছুতে ব্যাপক পরিবর্তন আনে বাহ্যিক ভাবে । সরকরের আমলা ও সমাজের সকলের পরিচিত মিডিয়ার বড় বড় ব্যত্তিদের নিয়ে মিটিং সমাবেশে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ এবং ধর্মব্যবসায়ের বিপক্ষে মুখরোচক সমালোচনা করে এখন জঙ্গী তকমা ঢাকার কূট কৌশলে ব্যস্ত । এরই ধারাবাহিকতায় জঙ্গী মতবাদ মূলক বই ” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা ‘ বইটি যেখানে ৬৫ পৃস্টায় শেষ হয়েছিল । সেখানে জঙ্গী তকমা থেকে বাচতে বইটিতে ২০১২ সালে জেহাদ কেতাল ও সন্ত্রাস নামে একটি বই বের করে যেখানে সরকারের হাতকড়া থেকে বাচতে লোকদেখানো জঙ্গীবিরোধি বিষয় তুলে ধরেছে যা ০৩ জুন ২০১২ তে প্রকাশ পায় । এবং এই ছোট বইটি ঐ জঙ্গী মতবাদ মূলক বই ” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা ‘ এর সাথে যোগ করে দিয়ে নতুন করে ” এসলামের প্রকৃত রুপরেখা ‘ বই আবার প্রকাশ করে ।

তাই হিযবুত তওহিদ এমন একটি জঙ্গী দলের নাম যে ক্ষনে ক্ষনে রুপ বদলায় । ২০০৯ এ জঙ্গী দল সমূহের তালিকায় আসার পর থেকে তাদের লিখা সকল বইতে পরিবর্তন আনার চেস্টা করে । হয়ত কিছুদিন পর আসল রুপ জঙ্গী চেহারা ঢাকতে এবং আইনের হাতকড়া থেকে বাচতে সকল জঙ্গী মূলক বইয়ের লেখা বদলে ফেলবে প্রমানাদি মুছে ফেলার জন্য । কিন্তুু ভেতরে ভেতরে চলছেই জঙ্গী মিশন । আর যখনই তাদের মুখোস খুলে দেয়া হয় তখনই চিরচারিত বুলি ” এসব অপপ্রচার ” ”এসব মিথ্যে ” ”এরা জামাআত শিবির” ”” এরা হেফাজত ” ইত্যাদি বুলি ছেড়ে ইজ্জত বাচানোর চেস্টা করে ।

২০০৩ সালে বরিশালেই প্রথম জিহাদী লিফলেট বিতরন।পরবর্তীতে বায়জিদ পন্নী “দাজ্জাল/Dajjal” নামে আরেকটি বই প্রকাশ করে, যেখানে ইহুদী এবং খৃষ্টানদের দাজ্জালের দোসর আখ্যা দিয়ে এদের নির্মূলে সর্বশক্তি নিয়োগের আদেশ করা হয়েছে। ২০০৭ এর দিকে দেশের সমগ্র উত্তরান্ঞ্চলে জেএমবি, হুজি এবং হিজবুত তওহিদ মিলিত ভাবে জঙ্গী তৎপরতা পরিচালনা করেছে।
এর ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে সংগঠনটি চিটাগাং প্রেস ক্লাবের সামনে জিহাদি লিফলেট বিতরন কালে তৎকালিন প্রধান রিয়াদ সহ তিন চারজন গ্রেফতার হয়।

এরপর দলটি নিজেদের প্রচার কৌশলে ব্যাপক পরিবর্তন আনে এবং নিজেদের কে সংস্কারমনা ,সাহিত্য প্রেমী উদার ইসলামি দল হিসেবে অনলাইনে মাঠে ময়দানে তুলে ধরতে শুরু করে। তাদের লেখা জঙ্গী সংশ্লিস্ট সবধরনের বইগুলো গোপন করে ফেলে । তাদের পত্রিকার নম ছিল ” দেশের পত্র” । সেটা বদলে পত্রিকার নাম রাখে ” বজ্রশক্তি” । দলটি এভাবে সংস্কারের মোড়কে প্রভাবিত করে প্রাথমিক সদস্য করার পর তাদের নিজেদের কট্টর মতবাদ সদস্যকে ধীরে ধীরে আত্মস্হ করতে বাধ্য করে।

কিন্তুু আইন-শৃংখলা বাহিনীর ‘কালো তালিকায়’ভুক্ত উগ্রপন্থী জঙ্গি সংগঠন হেজবুত তওহিদের তৎপরতা চলছে প্রকাশ্যেই। রাজধানীতেও দিন-দুপুরে ভাসমান হকারদের মতোই তারা বিভিন্ন যাত্রীবাহী বাস, ট্রেন ও লঞ্চে উঠে এসব লিফলেট, বই, সিডি বিক্রি ও বিতরণ করছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসলামের নামে উগ্র ও ভ্রান্ত মতবাদ প্রচারের সময় সংগঠনটির কর্মীদের আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা আটক ও গ্রেফতার করলেও তাদের কার্যক্রম থেমে নেই।

জঙ্গীবাদি মিশন থেমে নেই হিযবুত তওহীদের ঃ গত 12 march 2017 তে বাংলাদেশ প্রতিদিনসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশ হয় ”চট্টগ্রামে জোটবদ্ধ হয়েছে তিন জঙ্গি সংগঠন। এ সংগঠনগুলো হচ্ছে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর, হিজবুত তাওহীদ এবং আহলে হাদিস। তাদের কাজে সমন্বয় করছে ইসলামী ছাত্র শিবির। শনিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন জঙ্গি সংগঠনের ১৭ নেতা কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে লিফলেট, জিহাদী বই এবং সাংগঠনিক নথিপত্র জব্দ করা হয়।

ডবলমুরিং থানার ওসি একেএম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, ঈদগাহ এলাকার একটি লন্ড্রি দোকানে জঙ্গিরা গোপন বৈঠক করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরো ১৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হিজবুত তাহরীর, হিজবুত তাওহীদ, আহলে হাদিস এবং ছাত্র শিবিরের নেতা কর্মী রয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছি তাদের বড় ধরণের নাশকতার পরিকল্পনা ছিল। এসব জঙ্গি সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় করছে জামায়াত-শিবিরের কয়েকজন নেতা।’ তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে। আগামীকাল সোমবার তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।’

ডবলমুরিং থানার ওসি (তদন্ত) শাহাদাত হোসেন খান বলেন, যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগই এক সময় জামায়াত কিংবা শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। বর্তমানেও কয়েকজন জামায়াত ও শিবিরের রাজনীতির সাথে সম্পক্ত রয়েছেন। ”

জামাআতে ইসলামি শিবিরের সাথে জোট করার কারন হল জামাআত ও হেযবুতের আকীদা এক ও অভিন্ন ।
জামাআতে ইসলামীর আমীর সৈয়দ আবু আলা মওদূদি লিখেছে , ” জীহাদই হল ইসলামের মূল নীতি / ভিত্তি । আর অন্যান্য ইবাদত নামায রোযা ইত্যাদি হল ঐ জীহাদের জন্য প্রশিক্ষন । (খুতবাত ২২৭ পৃ .)

অর্থ্যাৎ মওদূদি জীহাদকে ইসলামের মূল কাজ বানিয়ে দিয়েছে । আর নামায রোযা ইত্যাদি হল জীহাদ যেন ভাল ভাবে করতে পারি তাই (নাউযুবিল্লাহ ) । তাইত জামাআত শিবিরের লোকেরা জঙ্গী হয় । কারন জীহাদকেই তারা সামনে রেখে সব করছে ।

আমরা সরকারের প্রতি অনুরোধ করব জঙ্গীবাদের বিপক্ষে লোকদেখানো শ্লোগানে মুখর মুনাফিক হেযবুত তওহীদ ও লামাযহাবি মতবাদ চিরতরে নিষিদ্ধ করে এদেশে জঙ্গীবাদের গোড়া উপড়ে ফেলে জাতির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আজই প্রদক্ষেপ নিবে

Salman Rahman
0Shares

আরও জানুন

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নবুওয়াতপ্রাপ্তির আগে শিরক করেছেন?

প্রশ্ন আসসালামু আলাইকুম। হযরত আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তি দাবী করছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম …