প্রশ্ন
From: মোঃ আব্দুল হান্নান
বিষয়ঃ কুরবানী প্রসঙ্গে।
মুমূর্ষ জন্তু কুরবানীর নিয়ত করলে কুরবানীর দিনের আগেই কুরবানী করার হুকুম কি? কিভাবে তা আদায় করব?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
কুরবানীর নির্দিষ্ট সময় হবার আগে কুরবানী করলে কুরবানী আদায় হবে না। যদি উক্ত ব্যক্তির উপর কুরবানী করা আবশ্যক হয়ে থাকে,তাহলে কুরবানীর দিন আরেকটি পশু কুরবানী করা আবশ্যক।
তবে যদি তার উপর কুরবানী করা আবশ্যক না হয়,তাহলে আর কুরবানী করতে হবে না।
মারা যাবার উপক্রম হলে পশু কুরবানীর সময় হবার আগেই পশুটি জবাই করে খাওয়া জায়েজ আছে। যদিও কুরবানীর দিন আলাদা কুরবানী আবশ্যক থেকে যায়।
جُنْدَبُ بْنُ سُفْيَانَ، قَالَ: شَهِدْتُ الْأَضْحَى مَعَ رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَلَمْ يَعْدُ أَنْ صَلَّى وَفَرَغَ مِنْ صَلَاتِهِ سَلَّمَ، فَإِذَا هُوَ يَرَى لَحْمَ أَضَاحِيَّ قَدْ ذُبِحَتْ قَبْلَ أَنْ يَفْرُغَ مِنْ صَلَاتِهِ، فَقَالَ: «مَنْ كَانَ ذَبَحَ أُضْحِيَّتَهُ قَبْلَ أَنْ يُصَلِّيَ – أَوْ نُصَلِّيَ -، فَلْيَذْبَحْ مَكَانَهَا أُخْرَى، وَمَنْ كَانَ لَمْ يَذْبَحْ، فَلْيَذْبَحْ بِاسْمِ اللهِ»
হযরত জুনদুব বিন সুফিয়ান রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক কুরবানীর ঈদের নামাযে আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে শরীক ছিলাম। তিনি নামায পড়ে তখনো ফিরেননি। নামায শেষ করে সালাম ফেরাতেই তিনি কুরবানীর গোশত দেখতে পেলেন। যা নামায শেষ হওয়ার আগেই জবাই করা হয়েছিল। তখন তিনি বললেন, যে ব্যক্তি তার নামায অথবা আমাদের নামায পড়ার আগেই কুরবানীর পশু জবাই করেছে, সে যেন তদস্থলে আরেকটি পশু জবাই করে। আর যে লোক জবাই করেনি সে যেন বিসমিল্লাহ বলে জবাই করে। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৯৬০]
عَنْ مُعَاذِ بْنِ سَعْدٍ أَوْ سَعْدِ بْنِ مُعَاذٍ، أَخْبَرَهُ: أَنَّ جَارِيَةً لِكَعْبِ بْنِ مَالِكٍ كَانَتْ تَرْعَى غَنَمًا بِسَلْعٍ، فَأُصِيبَتْ شَاةٌ مِنْهَا، فَأَدْرَكَتْهَا فَذَبَحَتْهَا بِحَجَرٍ، فَسُئِلَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ: «كُلُوهَا»
মু‘আয ইবনু সা‘দ কিংবা সা‘দা ইবনু মু‘আয থেকে বর্ণনা করেন যে, কা‘ব ইবনু মালিক -এর একটি দাসী ‘সালা’ পর্বতে বকরি চরাত। বকরিগুলোর মধ্যে একটিকে মরার উপক্রম দেখে সে একটি পাথর দ্বারা সেটিকে জবেহ করল। এ ব্যাপারে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করা হল। তিনি বললেনঃ সেটি খাও। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫০৫]
এ হাদীসের ব্যাখ্যায় আল্লামা ইবনে কুদামা রহঃ লিখেন:
وَفِي هَذَا الْحَدِيثِ فَوَائِدُ سَبْعٌ؛… وَالْخَامِسَةُ، إبَاحَةُ ذَبْحِ مَا خِيفَ عَلَيْهِ الْمَوْتُ.
এ হাদীসের মাঝে সাতটি ফায়দা রয়েছে। …….পঞ্চম নাম্বার হল,যে পশুর মৃত্যুর আশংকা দেখা দেয়, তাকে জবাই করা জায়েজ। [আলমুগনী লিইবনে কুদামা-১৩/৬৪-৬৫,দারুল হাদীস, কাহেরা]
ولو اشتراها سليمة ثم تعيبت بعيب مانع كما مر فعليه غيرها مقامها ان كان غنيا (الدر المختار مع رد المحتار-9/471
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]