প্রচ্ছদ / নামায/সালাত/ইমামত / (সংশোধিত) বিতর নামাযে ইমাম দুআয়ে কুনুত না পড়ে রুকুতে চলে গিয়ে মুসল্লিদের তাকবীরে আবার ফিরে আসলে নামাযের হুকুম কী?

(সংশোধিত) বিতর নামাযে ইমাম দুআয়ে কুনুত না পড়ে রুকুতে চলে গিয়ে মুসল্লিদের তাকবীরে আবার ফিরে আসলে নামাযের হুকুম কী?

প্রশ্ন

আব্দুল্লাহ মাহফুজ ঠিকানাঃ শাহপরান আ/

এ রমজান মাসে বিতরের নামাজে দিত্বীয় রাকাতের পর দুআয়ে কুনুত পড়ার জন্য যে তাকবীর দেয়া হয় ইমাম সাহেব যদি এই তাকবীর ভুলে গিয়ে তিনি রুকুতে চলে যান কিন্তু মুসল্লিরা রুকুতে যাননি এবং যখন লুকমা দেওয়া হল তখন তিনি দাড়িয়ে গেলেন এবং দুআয়ে কুনুত পড়ে রুকুতে চলে গেলেন,এমতাবস্থায় ইমাম সাহেবের  রুকু তো দুটি হল। এবং তিনি সেজদায়ে সাহু ও দিয়েছেন।

এখন বিষয় হল সেজদায়ে সাহু তো দেয়া হয় ওয়াজিব ছুটে গেলে এখানে তো ইমাম সাহেবের রুকু দুটি হয়েছে?

এখন কি এই নামাজ হবে নাকি হবেনা? দয়া করে রেফারেন্স সহ এই মাসআলাটির সমাধান দিন।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

মুসল্লিদের তাকবীর শুনে ইমাম সাহেবের ফিরে আসা ঠিক হয়নি।

দুআয়ে কুনুত না পড়ে ইমামের রুকুতে যাওয়া দেখে মুসল্লিদের রুকুতে না গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাও ঠিক হয়নি। কারণ হল, দুআয়ে কুনুত পড়া ওয়াজিব। আর নামাযে ওয়াজিব ছুটে গেলে তার ক্ষতিপূরণ সাহু সেজদা রয়েছে।

যেহেতু ওয়াজিব দুআয়ে কুনুত ছেড়ে দেবার কারণে ইমাম সাহু সেজদা দিলে নামাযটি শুদ্ধ হয়ে যায়, তাই ইমামের ফিরে আসারও প্রয়োজন ছিল না।

তেমনি মুসল্লিদের রুকুতে না গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকাও সঠিক হয়নি।

আরেকটি বিষয়, ইমাম সাহেব যখন রুকুতে গিয়ে মুসল্লিদের তাকবীর শুনে আবার ফিরে এসেছেন, তখন তার জন্য আবার রুকু করার জরুরত ছিল না। বরং মুসল্লিরা রুকু করলেই হয়ে যেতো।

তবে ইমাম সাহেব সাহু সেজদা দেয়ায় তার নামায হয়ে গেছে।

বাকি যেসব মুসল্লিরা প্রথম রুকু করেনি, কিন্তু দ্বিতীয় রুকুতে ইমামের ইক্তিদা করেছেন তারা তাদের ফরজ রুকু আদায় করেছেন তবে দেরী করে। তাই সাহু সেজদা দেয়ায় বিশুদ্ধ বক্তব্য অনুপাতে ইমাম মুসল্লি সকলের নামাযই শুদ্ধ হয়ে গেছে।

সুতরাং ইমাম মুসল্লি সকলের নামাযই বিশুদ্ধ হয়ে গেছে।

বাকি ভবিষ্যতে ইমাম ও মুসল্লি সবারই মাসআলাগুলো খেয়াল করা কর্তব্য।

لَوْ تَذَكَّرَ الْقُنُوتَ فِي الرُّكُوعِ فَالصَّحِيحُ أَنَّهُ لَا يَعُودُ، وَلَوْ عَادَ وَقَنَتَ لَا يَرْتَفِضُ رُكُوعُهُ وَعَلَيْهِ السَّهْوُ (رد المحتار، كتاب الصلاة، باب سجود السهو-2/544)

ولو أنه عاد إلى القيام وقنت ينبغى ان لا ينتقض ركوعه على قياس ظاهر الرواية (بدائع الصنائع، زكريا-1/615، قديم-1/274، بيروت-2/235، حاشية چلبى على التبيين، زكريا-2/166، قديم ملتان-1/166)

ما لو تذكر القنوت في الركوع فإنه لا يعود ولا يقنت فيه لفوات محله ولو عاد وقنت لم يرتفض ركوعه لأن القنوت لا يقع فرضا فلا يرتفض به الفرض ويسجد للسهو على كل حال ليترك الواجب أو تأخيره (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح، كتاب الصلاة، باب سجود السهو-461، البحر الرائق، زكريا-2/166، كويته-2/94، الموسوعة الفقهية الكويتيه-34/63)

الْإِمَامُ إذَا تَذَكَّرَ فِي الرُّكُوعِ فِي الْوِتْرِ أَنَّهُ لَمْ يَقْنُتْ لَا يَنْبَغِي أَنْ يَعُودَ إلَى الْقِيَامِ وَمَعَ هَذَا إنْ عَادَ وَقَنَتَ لَا يَنْبَغِي أَنْ يُعِيدَ الرُّكُوعَ وَمَعَ هَذَا إنْ أَعَادَ الرُّكُوعَ وَالْقَوْمُ مَا تَابَعُوهُ فِي الرُّكُوعِ الْأَوَّلِ وَإِنَّمَا تَابَعُوهُ فِي الرُّكُوعِ الثَّانِي أَوْ عَلَى الْقَلْبِ لَا تَفْسُدُ صَلَاتُهُمْ. كَذَا فِي الْخُلَاصَةِ. (الفتاوى الهندية-1/111)

ما في المبتغي من أن القول بالفساد غلط؛ لأنه ليس بترك؛ بل هو تأخير کما لو سها عن السورة فرکع، فإنه يرفض الرکوع ويعود إلی القيام ويقرأ (درمختار مع الشامي، کتاب الصلاة، مطبوعه، کراچي-2/84، زكريا-2/549، كويته-1/550)

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

আজানের সময় বা খানা খাওয়া ও বাথরুমে গমণ এবং স্বাভাবিক অবস্থায় মাথায় কাপড় রাখার হুকুম কী?

প্রশ্ন আমার চারটি বিষয়ে জানার ছিলো : ________ ১, বাথরুমে অবস্থানকালীন সময়ে মাথায় কাপড় দেওয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *