প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম।
প্রশ্ন ১ঃ আমি এবছর আল্লাহ্র রহমতে আমার মরহুম পিতার নামে একটি খাসি কোরবানি দিয়েছি।
একটি খাসি বিধায় আমার নামে দেইনি। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, আমিই আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম মানুষ।
অনেকেই বলছেন, আমার কোরবানির ওয়াজিব আদায় হয়নি যেহেতু আমার উপরই কোরবানি ওয়াজিব ছিল।
আগে নিজের নামে কোরবানি দিতে হবে, তারপর মৃত আত্মীয়ের নামে কোরবানি দেয়া যাবে।
আমি আপনার নিকট থেকে এসংক্রান্ত প্রকৃত হুকুম জানতে চাচ্ছি।
প্রশ্ন ২ঃ গরু কোরবানির ক্ষেত্রে ২/৪/৬ ভাগে কোরবানি হবে কিনা? একজন হুযুর বলেছেন, ১ থেকে ৭ পর্যন্ত এবং বিজোড় সংখ্যায় (অর্থাৎ ১/৩/৫/৭ ভাগে) দেওয়া যাবে।
ফারুক।
উত্তরা, ঢাকা।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
নিজের উপর কুরবানী ওয়াজিব থাকলে তা’ই আগে আদায় করা উচিত। নিজের ওয়াজিব কুরবানী আদায় করার পর অন্য কারো নামে নফল কুরবানী দিতে কোন সমস্যা নেই।
তাই আপনার উচিত ছিল উক্ত বকরীতে আপনার ওয়াজিব কুরবানীর নিয়ত করা। কুরবানী করার পর এর সওয়াব পিতা মাতার জন্য দান করা যায়। কিন্তু কুরবানী করতে হবে নিজের নামে।
যদি আপনার উপর কুরবানী ওয়াজিব হয়ে থাকে, তাহলে নিজের নামে কুরবানী না দেয়ায় আপনার ওয়াজিব কুরবানী আদায় হয়নি। এখন আপনার উচিত একটি বকরীর মূল্য সদকা করে দেয়া।
কারণ, কুরবানী আবশ্যক হওয়া ব্যক্তি কুরবানীর দিনসমূহে কুরবানী না করলে, সময় অতিক্রান্ত হবার পর একটি কুরবানী যোগ্য বকরীর মূল্য সদকা করা আবশ্যক।
যে পশুতে শরীকানা জায়েজ, তাতে বেজোড় জোড় উভয় শরীকানাই বৈধ। কোন সমস্যা নেই।
(وَلَوْ) (تُرِكَتْ التَّضْحِيَةُ وَمَضَتْ أَيَّامُهَا) (تَصَدَّقَ بِهَا حَيَّةً نَاذِرٌ) فَاعِلُ تَصَدَّقَ (لِمُعَيَّنَةٍ) وَلَوْ فَقِيرًا، وَلَوْ ذَبَحَهَا تَصَدَّقَ بِلَحْمِهَا، وَلَوْ نَقَصَهَا تَصَدَّقَ بِقِيمَةِ النُّقْصَانِ أَيْضًا وَلَا يَأْكُلُ النَّاذِرُ مِنْهَا؛ فَإِنْ أَكَلَ تَصَدَّقَ بِقِيمَةِ مَا أَكَلَ (وَفَقِيرٌ) عُطِفَ عَلَيْهِ (شَرَاهَا لَهَا) لِوُجُوبِهَا عَلَيْهِ بِذَلِكَ حَتَّى يَمْتَنِعَ عَلَيْهِ بَيْعُهَا (وَ) تَصَدَّقَ (بِقِيمَتِهَا غَنِيٌّ شَرَاهَا أَوَّلًا) لِتَعَلُّقِهَا بِذِمَّتِهِ بِشِرَائِهَا أَوَّلًا، فَالْمُرَادُ بِالْقِيمَةِ قِيمَةُ شَاةٍ تُجْزِي فِيهَا. (الدر المختار مع رد المحتار، كتاب الاضحية-9/463-465)
وَلَا شَكَّ فِي جَوَازِ بَدَنَةٍ أَوْ بَقَرَةٍ عَنْ أَقَلَّ مِنْ سَبْعَةٍ بِأَنْ اشْتَرَكَ اثْنَانِ أَوْ ثَلَاثَةٌ أَوْ أَرْبَعَةٌ أَوْ خَمْسَةٌ أَوْ سِتَّةٌ فِي بَدَنَةٍ أَوْ بَقَرَةٍ؛ لِأَنَّهُ لَمَّا جَازَ السُّبْعُ فَالزِّيَادَةُ أَوْلَى، وَسَوَاءٌ اتَّفَقَتْ الْأَنْصِبَاءُ فِي الْقَدْرِ أَوْ اخْتَلَفَتْ؛ بِأَنْ يَكُونَ لِأَحَدِهِمْ النِّصْفُ وَلِلْآخَرِ الثُّلُثُ وَلِآخَرَ السُّدُسُ بَعْدَ أَنْ لَا يَنْقُصَ عَنْ السُّبْعِ (بدائع الصنائع، كتاب الاضحية، محل اقامة الواجب-4/208
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– [email protected]