প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম |
ঈদ এর নামাজের পর আমরা সাধারনত কোলাকোলি করে থাকি । কেহ বলেন যে একবার একপাশে কোলাকোলি করতে হয় । আবার কেহ বলেন যে তিনবার করতে হয় । ডান দিক থেকে কোলাকোলি শুরু করতে হয় । ঈদ এর কোলাকলির বেপারে শরীয়তের বিধান কি ?
বিস্তারিত জানালে খুশি হব ।
আহালে হক মিডিয়ার প্রচার ও প্রসার এর জন্য অনেক দুয়া ও শুভ কামনা রইল ।
মোহাম্মদ ফারুক
সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ।
বাসা : খিলক্ষেত, তালের টেক,
ঢাকা – ১২২৯ ।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
এক হল, কুলাকুলি করার পদ্ধতি। আরেকটি হল, ঈদের নামাযের পর বিশেষ কুলাকুলি।
কুলাকুলি মূলত একবার করার কথা পাওয়া যায়। তিনবারের কোন বিধান নেই। কিন্তু আমাদের সমাজের প্রচলন হিসেবে এমনটি করা হয়ে থাকে। এটি সুন্নত নয়।
عَنْ عَائِشَةَ، رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ: قَدِمَ زَيْدُ بْنُ حَارِثَةَ الْمَدِينَةَ , وَرَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي بَيْتِي , فَأَتَاهُ , فَقَرَعَ الْبَابَ , فَقَامَ إِلَيْهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عُرْيَانًا , وَاللهِ مَا رَأَيْتُهُ عُرْيَانًا قَبْلَهُ ,فَاعْتَنَقَهُ وَقَبَّلَهُ “
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত জায়েদ বিন হারেসা রাঃ মদীনায় এলেন। তখন রাসূল সাঃ আমার গৃহে ছিলেন। হযরত জায়েদ এসে রাসূল সাঃ এর দরজায় কড়া নাড়লেন। রাসূল সাঃ তখন বেরিয়ে গেলেন খালি গায়েই। আল্লাহর কসম আমি এর আগে কখনো রাসূল সাঃ কে খালি গায়ে দেখিনি। তারপর তিনি তার সাথে মুআনাকা করলেন এবং তাকে চুমু খেলেন। {তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-৬৯০৫, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৭৩২, শরহুস সুন্নাহ, হাদীস নং-৩৩২৭}
عانقة وعناقا التزمه فادنى عنقه من عنقه من عنقه (لسان العرب-10/272
او يعاقنه اى يجعل كل منهما دية فى عنق الاخر الخ (سكب الأنهر، كتاب الكراهية، فصل فى النظر-4/204
এবার বাদ রইল ঈদের নামাযের পর বিশেষ কুলাকুলি।
মূলত কুলাকুলির হুকুম হল, দীর্ঘদিন পর কোন কাছের মানুষের সাথে দেখা হলে কুলাকুলি করবে। এখন ঈদের জামাতের পর যদি কোন কাছের মানুষের সাথে দেখা হয়, তাহলে সালাম বিনিময়ের পর কুলাকুলি করতে কোন সমস্যা নেই।
কিন্তু এটিকে ঈদের নামাযের পরের সুন্নত মনে করা বিদআত।
কিংবা আমভাবে সবার সাথেই ঈদের নামায শেষ হতেই কুলাকুলি শুরু করে দেয়া একটি রুসুম। সুন্নাত, মুস্তাহাব কিছুই নয়।
এটিকে সুন্নাত, মুস্তাহাব ইত্যাদি মনে করা বিদআত হবে।
عَنْ عَائِشَةَ، قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ
হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মাঝে এমন বিষয়ের নতুন চালু করে, যা এর অন্তর্ভূক্ত ছিল না, তাহলে সে কাজটি বর্জনীয়। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৭১৮]
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা-ইমাম আবূ হানীফা ইসলামী রিসার্চ সেন্টার পিরোজপুর।
ইমেইল– [email protected]