প্রচ্ছদ / চিকিৎসা/তদবীর / যাদু করে বিয়েতে বাঁধা সৃষ্টি করা যায়?

যাদু করে বিয়েতে বাঁধা সৃষ্টি করা যায়?

প্রশ্ন

রিয়াজ মোহাম্মদ করিম

মিরপুর – ১২

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

আমার খালাতো বোনের দুটি বিবাহ কাছে এসেও হয় নাই । বর খোজা হচ্ছে। কিন্তু প্রস্তাব খুব একটা আসে না । বর খোজা হচ্ছে অনেকদিন হল । বিয়ে এগুচ্ছে না কেন খালা-খালু চিন্তিত ।

কথায় কথায় খুব রাগ করে । আগে এমন ছিল না । ঘরে থাকতে তার ভাল লাগে না । ঘরে থাকলে নাকি তার অসুস্থ লাগে । যাদু-টোনা করেছে কিনা এজন্য তাবিজ দেবার চেস্টা করছে । সে তাবিজ পরবেনা  কারণ তাবিজে তার বিশ্বাস নাই ।

যাদু-টোনা করলে বিয়েতে বাধা আসতে পারে কি ?

উপরোক্ত কারণ গুলোতে সমাধান কি ?

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

যাদু করলে বিয়েতে বাঁধা আসতে পারে। যেমন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ইহুদীরা যাদু করে অসুস্থ্য করে দিয়েছিল। দীর্ঘদিন যাবত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাদুর প্রভাবে অসুস্থ্যতায় ভুগছিলেন। তখনি সূরা ফালাক ও সূরা নাস নাজিল হয়।

আল্লাহ তাআলা কিছু কিছু বস্তুতে স্বকীয় কিছু প্রতিক্রিয়া রেখেছেন। যা উক্ত বস্তুর মাধ্যমে অর্জিত হয়। যেমন বিষের মাঝে মৃত্যুর প্রতিক্রিয়া। আতরের মাঝে সুঘ্রাণের মাঝে প্রতিক্রিয়া। ওষুধের মাঝে আরোগ্যের প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি।

তেমনি কিছু যাদু টোনার শব্দের মাঝে নির্দিষ্ট কিছু প্রভাব রেখেছেন। যেমন আল্লাহর বিভিন্ন কালামের মাঝে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

তাই এসব ব্যবহার করে মানুষকে যেমন ক্ষতি করা যায়। তেমনি ভালও করা যায়।

আপনার বোনকে প্রতিদিন ফজর ও মাগরিব নামাযের পর এবং রাতে ঘুমাতে যাবার আগে চার কুল তথা সূরা কাফিরূন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা  নাস পড়ে, হাতে তালুতে ফুঁ দিয়ে সাড়া শরীর মুছে নিতে বলবেন। এভাবে তিনবার করবেন।  

عَنْ عَائِشَةَ، ” أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ إِذَا أَتَى إِلَى فِرَاشِهِ فِي كُلِّ لَيْلَةٍ جَمَعَ كَفَّيْهِ، ثُمَّ نَفَثَ فِيهِمَا، وَقَرَأَ فِيهِمَا: قُلْ هُوَ اللهُ أَحَدٌ، وَقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ الْفَلَقِ، وَقُلْ أَعُوذُ بِرَبِّ النَّاسِ، ثُمَّ مَسْحَ بِهِمَا مَا اسْتَطَاعَ مِنْ جَسَدِهِ، يَبْدَأُ بِهِمَا عَلَى رَأْسِهِ وَوَجْهِهِ وَمَا أَقْبَلَ مِنْ جَسَدِهِ، يَفْعَلُ ذَلِكَ ثَلَاثَ مَرَّاتٍ

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। প্রতি রাতে রাসূল সাঃ যখন বিছানায় আসতেন, তখন দুই তালুকে একত্র করতেন। তারপর তাতে ফুঁ দিতেন। পড়তেন “কুল হুয়াল্লাহু আহাদ” এবং “কুল আউজু বিরাব্বিল ফালাক” ও “কুল আউজু বিরাব্বিন নাছ”। তারপর শরীরের যতটুকু অংশ সম্ভব মুছে দিতেন।  শুরু করতেন মাথা ও চেহারা ও শরীরের সামনের অংশ থেকে। এভাবে তিনবার করতেন। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪৮৫৩, সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫০১৭}

আশরাফ আলী থানবী রহঃ রচিত একটি বই আছে। যার নাম হল, “আমালে কুরআনী” বাংলায় অনুবাদ হয়েছে। বইটি সংগ্রহ করে এর মাঝে এ বিষয়ক আমল রয়েছে। তা থেকে নিয়মিত আমল করতে বলুন। ইনশাআল্লাহ সমস্যার সমাধান হবে।

বাকি এর পরও যদি কাজ না হয়, তাহলে কুফরী কালাম করে না, বরং কুরআন ও হাদীসের আলোকে তদবীর দেন, এমন কোন কবিরাজের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *