প্রশ্ন:
আমরা জানি, হিন্দুদের কাছে গোমূত্র একটি পবিত্র বস্তু হিসেবে গণ্য হয়। এখন প্রশ্ন হলো, যদি কোনো মুসলমান হিন্দুদের কাছে গোমূত্র বিক্রি করতে চায়, তাহলে ইসলামী দৃষ্টিতে সেটি কি জায়েজ হবে?
আর যদি কেউ ইতিমধ্যে গোমূত্র বিক্রি করে থাকে, তবে তার এই কাজের হুকুম কী হবে?
এবং সেই বিক্রয় থেকে প্রাপ্ত টাকার হুকুমই বা কী হবে?
নাম: মোঃ তাওসীফ আহমাদ
ঠিকানা: যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসা
[email protected]
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
উত্তর:
প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই! গোমূত্র শরীয়তে নাপাক এবং এর ব্যবহার নিষিদ্ধ; আর যে জিনিস ব্যবহার হারাম, তা কাউকে মুসলমান হোক বা হিন্দু বিক্রি করাও হারাম। সুতরাং হিন্দুদের কাছে গোমূত্র বিক্রি করাও হারাম। যদি কেউ আগে অজ্ঞতাবশত বিক্রি করে থাকে, তবে তার এ কাজ নাজায়েজ হয়েছে, তাকে আন্তরিকভাবে তাওবা করতে হবে। আর এ বিক্রি থেকে যে টাকা এসেছে, তা হারাম উপার্জন হওয়ায় নিজের কাজে ব্যবহার করা যাবে না; বরং কোনো সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরিবদের মাঝে দিয়ে দিতে হবে।
শরঈ দলীলঃ
الوجیز فی ایضاح القواعد الفقہیۃ الکلیۃ :
“كل شيء كره أكله والانتفاع به على وجه من الوجوه فشراؤه وبيعه مكروه، وكل شيء لا بأس بالانتفاع به فلا بأس ببيعه”. (1/25)
مطلب في التداوي بالمحرم (قولہ وردہ في البدائع إلخ) قدمنا في البیع الفاسد عند قولہ ولبن امرأۃ أن صاحب الخانیۃ والنہایۃ اختارا جوازہ إن علم أن فیہ شفاء ولم یجد دواء غیرہ قال فی النہایۃ: وفي التہذیب یجوز للعلیل شرب البول والدم والمیتۃ للتداوي إذا أخبرہ طبیب مسلم أن فیہ شفائہ ولم یجد من المباح ما یقوم مقامہ، وإن قال الطبیب یتعجل شفاؤک بہ فیہ وجہان، وہل یجوز شرب العلیل من الخمر للتداوي فیہ وجہان، وکذا ذکرہ الإمام التمرتاشي وکذا في الذخیرۃ وما قیل إن الاستشفاء بالحرام حرام غیر مجری علی إطلاقہ وأن الاستشفاء بالحرام إنما لا یجوز إذا لم یعلم أن فیہ شفاء أما إن علم ولیس لہ دواء غیرہ یجوز ومعنی قول ابن مسعود – رضی اللہ عنہ – لم یجعل شفاؤکم فیما حرم علیکم یحتمل أن یکون قال ذلک في داء عرف لہ دواء غیر المحرم لأنہ حینئذ یستغني بالحلال عن الحرام ویجوز أن یقال تنکشف الحرمۃ عند الحاجۃ فلا یکون الشفاء بالحرام وإنما یکون بالحلال ۱ھـ نور العین من آخر الفصل الرابع والثلاثین۔ (کتاب البیوع، باب المتفرقات، اواخرباب السلم، ۱۵/۴۱۹)
সূরাঃ আল আ’রাফ – আয়াত নংঃ 157
আয়াতঃ
اَلَّذِیۡنَ یَتَّبِعُوۡنَ الرَّسُوۡلَ النَّبِیَّ الۡاُمِّیَّ الَّذِیۡ یَجِدُوۡنَہٗ مَکۡتُوۡبًا عِنۡدَہُمۡ فِی التَّوۡرٰىۃِ وَالۡاِنۡجِیۡلِ ۫ یَاۡمُرُہُمۡ بِالۡمَعۡرُوۡفِ وَیَنۡہٰہُمۡ عَنِ الۡمُنۡکَرِ وَیُحِلُّ لَہُمُ الطَّیِّبٰتِ وَیُحَرِّمُ عَلَیۡہِمُ الۡخَبٰٓئِثَ وَیَضَعُ عَنۡہُمۡ اِصۡرَہُمۡ وَالۡاَغۡلٰلَ الَّتِیۡ کَانَتۡ عَلَیۡہِمۡ ؕ فَالَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا بِہٖ وَعَزَّرُوۡہُ وَنَصَرُوۡہُ وَاتَّبَعُوا النُّوۡرَ الَّذِیۡۤ اُنۡزِلَ مَعَہٗۤ ۙ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ
অর্থঃ যারা এই রাসূলের অর্থাৎ উম্মী নবীর অনুসরণ করে, যার কথা তারা তাওরাত ও ইনজীলে, যা তাদের নিকট আছে, লিপিবদ্ধ পাবে, যে তাদেরকে সৎকাজের আদেশ করবে ও মন্দ কাজে নিষেধ করবে এবং তাদের জন্য উৎকৃষ্ট বস্তু হালাল করবে ও নিকৃষ্ট বস্তু হারাম করবে এবং তাদের থেকে ভার ও গলার বেড়ি নামাবে, যা তাদের উপর চাপানো ছিল। সুতরাং যারা তার (অর্থাৎ নবীর) প্রতি ঈমান আনবে, তাকে সম্মান করবে, তার সাহায্য করবে এবং তার সঙ্গে যে নূর অবতীর্ণ করা হয়েছে তার অনুসরণ করবে, তারাই হবে সফলকাম।
والله أعلم بالصواب
উত্তর লিখনে,
মুহা. শাহাদাত হুসাইন , ছাগলনাইয়া, ফেনী।
সাবেক শিক্ষার্থী: ইফতা বিভাগ
তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
সত্যায়নে
মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী দা.বা.
পরিচালক– তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস Ahle Haq Media
