প্রচ্ছদ / তালাক/ডিভোর্স/হুরমত / ফোনে কথা বলার সময় স্বামী যদি বলে ‘আমাকে ফোন বা মেসেজ দিলে তালাক’ তাহলে কি তালাক হয়ে যাবে?

ফোনে কথা বলার সময় স্বামী যদি বলে ‘আমাকে ফোন বা মেসেজ দিলে তালাক’ তাহলে কি তালাক হয়ে যাবে?

প্রশ্ন

আসসালামু আলাইকুম  হুজুর।

আমি আপনাকে  আবার বিরক্ত করার জন্য  আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।

জনাব, যখন কোন মানুষের  দেহে বড় কোন অসুখ  বাসা বাঁধে,সে তো বড় কোন অপারেশন  করার আগে বারবার ডাক্তারের পরামর্শ  নেয়,এটা- সেটা জানতে চায়।

আপনিও তো তেমন মানুষকে হেদায়েতের পথ দেখানোর ডাক্তার, মানুষকে  পাপ থেকে বেঁচে  থেকে মনে শান্তি এনে একমনে আল্লাহকে কিভাবে ডাকা যায় তার পথ প্রদর্শনকারী।

হুজুর,আমি  আপনার তালাক বিষয়ক প্রশ্ন- উত্তরের সব গুলো প্রশ্ন- উত্তর অনেকবার করে পড়েছি।

হুজুর, সহবাসের  আগে  যাদের তালাক হয়ে  গেছে, তাদের সবাইকে আপনি বলেছেন, তাদের বিবাহ  সম্পূর্ণরূপে ছিন্ন হয়ে গেছে,তাদের কাউকেই  রজু করতে বলেন নাই, বলেছেন উক্ত স্বামীর সাথে সংসার করতে চাইলে নতুন মোহর ধার্য করে পুনরায়  বিবাহ  করতে।

হুজুর  আমার ও তো সহবাস হয় নি তাহলে কি আমার স্বামীকে আমার পুনরায়  বিবাহ করে নিতে হবে না?

আপনি যদি  আমার সমস্যাটা পুনরায়  বিবেচনা করে দেখতেন, দয়া করে।

হুজুর  স্বামীর সাথে তো আমার ইহকাল- পরকাল সম্পর্ক, তাই বারবার জিজ্ঞেস  করে নিশ্চিত  হয়ে নিচ্ছি, এতে যদি আমার কোন ভুল হয় আমাকে মাফ করে দিয়েন।

আপনার উত্তরের আশায় আমি অপেক্ষায় থাকবো।  

প্রশ্নঃ

আমি এবং আমার  স্বামী,আমরা দুই জন দুই জায়গাতে থাকি, বিয়ের পর আমারা দুইজন দুইজনকে স্বামী- স্ত্রী সুলভ ২/৩ বার স্পর্শ  করলেও আমাদের মাঝে সহবাস করা হয় নাই, এবং  এমন কোন জায়গায় আমরা সময় ও কাটাই নাই, যেখানে চাইলেই সহবাস করা যাবে।

কিন্তুু মোবাইলের ইনবক্সে ২/৩ বার ২ জনই ২ জনকে কিছু গোপন ছবি পাঠিয়েছিলাম।

(সে সময় সে ছিল ময়মনসিংহ  এবং আমি ছিলাম ঢাকা)

বিভিন্ন কারনে যখনই আমাদের ঝগড়া  হয়  মাঝেমাঝেই আমার স্বামী আমাকে বলে আমাকে আর ফোন, ম্যাসেজ দিবা না, দিলে তালাক।

(প্রত্যেকবারই নিয়ত ছাড়া, না বুঝে, শুধুমাত্র আমাকে ভয় দেখিয়ে  ঝগড়া  থামিয়ে দেওয়ার  জন্য)  

তখন আমি আর তাকে ফোন, ম্যাসেজ দেই না।   কিন্তুু পরে সে যখন আমাকে ফোন দেয় এবং আমি তাকে ঐ ব্যাপারে জিজ্ঞেস  করলে বলে আমি আমার কথা তুলে নিছি, ফোন- ম্যাসেজ দিও সমস্যা  নাই, তার এই কথা শুনার পর আমি পুনরায় তাকে ফোন – ম্যাসেজ দিতাম।  

এমন পরিস্থিতি  আমাদের দুজনের মাঝে বহুবার হয়েছে (তিনবারের বেশী)।  

প্রত্যেকবারই আমি যখন বলেছি তোমার কথা তুলে নাও  এবং সে যখন নিজ মুখ দিয়ে বলেছে ,  আমি আমার কথা তুলে নিছি তারপর আমি  তাকে ফোন- ম্যাসেজ দিয়েছি।  

নাম প্রকাশ  করতে চাই না।  

উত্তর

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم

“যখনি ফোন বা মেসেজ দিবা তালাক” এভাবে যেহেতু বলেনি, তাই প্রশ্নোক্ত শর্তযুক্ত কথাটি বলার মজলিস পর্যন্ত খাস থাকবে।

সেই মজলিস শেষ হবার পর আর সেই শর্থ প্রযোজ্য হবে না।

সেই হিসেবে যেহেতু আপনি আপনার স্বামীর “ফোন মেসেজে দিবা না, দিলে তালাক” বলার পর উক্ত কথোপকথনের মজলিস থাকা অবস্থায় আর ফোন বা মেসেজ দেননি।

বরং পরবর্তী সময় দিয়েছেন, তাই এতে কোন প্রকার তালাক পতিত হয়নি।

বাকি আপনার স্বামীকে সতর্ক করে দিবেন, এভাবে কথায় কথায় তালাক বলার মানসিকতা পরিত্যাগ করার জন্য।  

ولو أرادت المرأة الخروج فقال: إن خرجت فأنت طالق فحبست، ثم خرجت لم يحنث (هداية، اشرفى-2/486)

وشرط للحنث فى قوله “إن خرجت مثلا فأنت طالق”……. لمريد الخروج فعله فورا، لأن قصده المنع عن ذلك الفعل عرفا، ومدار الأيمان عليه وهذه تسمى يمين الفور (الدر المختار مع رد المحتار، زكريا-5/553-554، كرتاشى-3/761-762)

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।

পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।

শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।

ইমেইল[email protected]

0Shares

আরও জানুন

শতবর্ষী বৃদ্ধ যার পাক নাপাকের জ্ঞান নেই এমন ব্যক্তির উপর কি নামায ফরজ থাকে?

প্রশ্ন আসসালামু আলাইকুম! শ্রদ্ধেয় মুফতী সাহেব! আশাকরি প্রশ্নটির দলিল প্রমাণ সহকারে উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন। …