প্রশ্ন
উত্তরটি জানিয়ে উপকৃত করবেন,
কাজীর কাছে গিয়ে কেও যদি বলে সে তার স্ত্রীকে তালাক দিবে আর কাজী তখন তার সাথে আর কোন কথা না বলে তাকে বলে যে আপনি এখানে সাইন করুন আর সে সাইন করে৷
সে কাজীকে বললো তালাকটা কি ভাবে পতিত হবে? কাজী বললো তিন মাসে তিন তালাক পতিত হবে, এর মাঝে আপনি মিমাংসা করে নিবেন।
তারপর এক মাসের মাথায় সে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিতে চাইলে তার শশুর বাড়ির লোকজন বাধা দেয়। তখন সে কাজীর কাগজটা দেখে সেখানে কাজী তিন তালাক লিখছে।
আমার প্রশ্ন হলো ছেলে তো না কাগজ দেখেনি যে সেখানে তিন তালাক লিখাছিল যখন সে সাইন করছে আর কাজীও তাকে সেটা খুলে বলেনি এ ক্ষত্রে কয় তালাক হবে?
ছেলে বলছে আমিতো তাকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য এটা পাঠায়ছি যাতে তালাকের ঘোষনা শুনে মেয়ে সংসারে আছে।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
আপনার প্রশ্নে কথা গোপন করা হয়েছে। যা পরিস্কার হয়নি।
১
কাজীকে তালাকের কথা বলতেই কোন কাগজে সাইন করতে বলবে না। বরং আপনার নাম ঠিকানা এবং আপনার স্ত্রীর নাম ঠিকানা লেখার পরই বলবে এখানে সাইন করেন।
অথচ আপনি বলে দিলেন, কাজীকে তালাকের কথা বলতেই কোন কথা না বলেই বলে দিল এখানে সাইন করেন।
২
তালাক তিন মাসে তিন তালাক পতিত হবে একথাটা পরিস্কার বলার পরও কিভাবে তিনি জানেন না যে, কয় তালাক লিখেছে?
সুতরাং যেহেতু স্বামীর নির্দেশেই তালাকের কথা লেখা হয়েছে। সেই সাথে তালাকের কথা জেনেই উক্ত কাগজে স্বামী স্বেচ্ছায় স্বপ্রণোদিত হয়ে সাইন করেছে। তাই তালাক তিনটিই পতিত হয়ে গেছে।
এখন উক্ত স্ত্রীর সাথে ঘরসংসার করা জায়েজ নয়। যদি ইদ্দত শেষে উক্ত স্ত্রীর অন্য কোথায় বিয়ে হয়, তারপর সহবাসসহ স্বাভাবিক ঘরসংসার করা অবস্থায় কোন কারণে স্বামী মারা যায়, বা তালাক দেয়, তাহলে ইদ্দত শেষে প্রথম স্বামী আবার নতুন মোহর ধার্য করে বিয়ে করতে পারবে।
এছাড়া দ্বিতীয় কোন গত্যান্তর নেই।
رَجُلٌ اسْتَكْتَبَ مِنْ رَجُلٍ آخَرَ إلَى امْرَأَتِهِ كِتَابًا بِطَلَاقِهَا وَقَرَأَهُ عَلَى الزَّوْجِ فَأَخَذَهُ وَطَوَاهُ وَخَتَمَ وَكَتَبَ فِي عُنْوَانِهِ وَبَعَثَ بِهِ إلَى امْرَأَتِهِ فَأَتَاهَا الْكِتَابُ وَأَقَرَّ الزَّوْجُ أَنَّهُ كِتَابُهُ فَإِنَّ الطَّلَاقَ يَقَعُ عَلَيْهَا (الفتاوى الهندية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى الطلاق بالكتابة-1/379، رد المحتار، كتاب الطلاق، مطلب فى الطلاق بالكتابة-4/456، المحيط البرهانى، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-4/486، تاتارخانية، كتاب الطلاق، الفصل السادس فى ايقاع الطلاق بالكتاب-3/380)
فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا تَحِلُّ لَهُ مِن بَعْدُ حَتَّىٰ تَنكِحَ زَوْجًا غَيْرَهُ ۗ فَإِن طَلَّقَهَا فَلَا جُنَاحَ عَلَيْهِمَا أَن يَتَرَاجَعَا إِن ظَنَّا أَن يُقِيمَا حُدُودَ اللَّهِ ۗ وَتِلْكَ حُدُودُ اللَّهِ يُبَيِّنُهَا لِقَوْمٍ يَعْلَمُونَ سورة [البعرة٢:٢٣٠
وقال الليث عن نافع كان ابن عمر إذا سئل عمن طلق ثلاثا قال لو طلقت مرة أو مرتين فأن النبي صلى الله عليه و سلم أمرني بهذا فإن طلقتها ثلاثا حرمت حتى تنكح زوجا غيرك (صحيح البخارى-2/792، 2/803)
عن عائشة رضى الله عنها قاتل: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: اذا طلق الرجل امرأته ثلاثا لم تحل له حتى تنكح زوجا غيره، ويذوق كل واحد منهما عسليلة صاحبه (سنن الدار قطنى، كتاب الطلاق، دار الكتب العلمية-4\21، رقم-3932)
وإن كان الطلاق ثلاثا فى الحرة، وثنتين فى الأمة لم تحل له حتى تنكح زوجا غيره نكاحا صحيحا ويدخل بها، ثم يطلقها، أو يموت عنها (الفتاوى الهندية-1\478، جديد-1\535)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
ইমেইল– [email protected]