প্রশ্ন
From: নাম উহ্য রাখা হলো
বিষয়ঃ সরকারী সাধারণ বীমায় চাকুরী ইসলামের দৃষ্টিতে
প্রশ্নঃ
তারিখঃ 12-04-2017
মোহতারামী ও মোকাররমী,
আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহী ও বারাকাতুহু
বাদ আরজ এই যে, আমি নিম্ন স্বাক্ষরকারী নিম্নে বর্ণিত সরকারী সাধারণ বীমা প্রতিষ্ঠানটিতে দীঘদিন যাবৎ চাকুরী করে আসিতেছি। বতমানে আমি আইটি বিভাগে আছি। এখানে কাজ হলো কর্মকর্তাদের নাম, অফিসের ঠিকানা, বদলী, সার্কুলার, রিয়োগ, এনওসি, বিদেশ ভ্রমন ইত্যাদি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সংরক্ষণন করা হয়। এখানে কোন আর্থিক লেনদেন করতে হয় না।
সকলেই বীমা প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এ প্রতিষ্ঠানে চাকুরী না করার পক্ষে। কিন্তু 05-06 বৎসর চাকুরীর মেয়াদ শেষ হলে সরকারী নিয়ম মোতাবেক চাকুরী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেয়া যায় ফলে সবটুকু বেনিফিট পাওয়া যায় যা এখন চাকুরী ছেড়ে দিলে সম্ভব নয়।
আহলে হক মিডিয়ায় আধুনিক সব সমস্যার শান্তিপূণ সমাধান দেখে খুবই আশার আলো জাগলো যে হয়ত কোন একটা সুরাহা/সমাধান পেয়ে যাব। সেজন্য নিম্নে বর্ণিত আমার সরকারী প্রতিষ্ঠানের অবস্থা উপলব্ধি করে ইসলামীক কোন উপায় যা কামাই হালাল মনে করতে পারি সিদ্ধান্ত দিয়ে বাধিত করবেন।
ওয়াচ্ছালাম
[নামটি উহ্য রাখা হলো]
আইটি বিভাগ,
সাধারন বীমা কর্পোরেশন
প্রধান কার্যালয়, ঢাকা।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যদি বীমার মাধ্যমে অর্জিত টাকা দিয়ে আপনার বেতন ভাতা দেয়া না হয়, বরং সরকারী অন্য ফান্ড থেকে বেতন দেয়া হয়ে থাকে, তাহলে আপনার চাকুরীর ডিপার্টমেন্ট সুদভিত্তিক কাজে সরাসরি সহযোগিতা না থাকায় বেতন হারাম হবে না।
কিন্তু যদি আপনার বেতন উক্ত সুদভিত্তিক বীমা থেকেই বহন করা হয়ে থাকে, তাহলে উক্ত চাকুরী করা আপনার জন্য হারাম। এর উপার্জনও হারাম।
সাধারণত এমনটিই হয়ে থাকে। সুতরাং আপনার জন্য উক্ত চাকুরী ছেড়ে দেয়া সঠিক সিদ্ধান্ত হবে।
یَمۡحَقُ اللّهُ الرِّبٰوا وَیُرۡبِی الصَّدَقٰتِ ؕ وَاللّهُ لَا یُحِبُّ کُلَّ کَفَّارٍ اَثِیۡمٍ
আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন এবং দান-সদাকাকে বর্ধিত করেন। আর আল্লাহ এমন প্রতিটি লোককে অপছন্দ করেন যে নাশোকর, পাপিষ্ঠ। [সূরাআল বাকারা – ২৭৬]
يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَذَرُواْ مَا بَقِيَ مِنَ ٱلرِّبَوٰٓاْ إِن كُنتُم مُّؤۡمِنِينَ ، فَإِن لَّمۡ تَفۡعَلُواْ فَأۡذَنُواْ بِحَرۡب مِّنَ ٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦۖ وَإِن تُبۡتُمۡ فَلَكُمۡ رُءُوسُ أَمۡوَٰلِكُمۡ لَا تَظۡلِمُونَ وَلَا تُظۡلَمُونَ،
হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমরা যদি প্রকৃত মুমিন হয়ে থাক, তবে সুদের যে অংশই (কারও কাছে) অবশিষ্ট রয়ে গেছে, তা ছেড়ে দাও।
তবুও যদি তোমরা (তা) না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পক্ষ থেকে যুদ্ধের ঘোষণা শুনে নাও। আর তোমরা যদি (সুদ থেকে) তাওবা কর, তবে তোমাদের মূল পুঁজি তোমাদের প্রাপ্য। তোমরাও (কারও প্রতি) জুলুম করবে না এবং তোমাদের প্রতিও জুলুম করা হবে না। [সূরা বাকারা-আল বাকারা – ২৭৮-২৭৯]
عَنْ جَابِرٍ، قَالَ لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم آكِلَ الرِّبَا وَمُوكِلَهُ وَكَاتِبَهُ وَشَاهِدَيْهِ وَقَالَ هُمْ سَوَاءٌ
জাবির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন, সুদ গ্রহীতার উপর, সুদদাতার উপর, এর লেখকের উপর ও উহার সাক্ষীদ্বয়ের উপর এবং বলেছেন এরা সকলেই সমান। [সহীহ মুসলিম-২/২৭, হাদীস নং-১৫৯৮, ইফাবা-৩৯৪৮, সুনানে আবূ দাউদ-২/৪৭৩, হাদীস নং-৩৩৩৩, সুনানে তিরমিজী-১/২২৯, হাদীস নং-১২০৬, সুনানে নাসায়ী-২/২৩৮, হাদীস নং-৫১০৮, সুনানে ইবনে মাজাহ-২/১৬৫, হাদীস নং-২৭৭]
ومن هنا ظهر أن التوظف فى البنوط الربوية لا يجوز، فإن كان عمل الموظف فى البنك ما يعين على الربا، كالكتابة، أو الحساب، فذلك حرام لوجهين، الأول: إعانة على المعصية، والثانى: أخذ الأجرة من المال الحرام، (تكملة فتح الملهم، كتاب المساقاة والمزارعة، باب لعن آكل الربا ومؤكله، أشرفية-1/619)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com