প্রশ্ন
সত্যের মাপকাঠি বলতে কি বুঝায় সাহাবায়ে কেরাম সত্যের মাপকাঠি কিনা?
দলিল সহ জানালে উপকৃত হব
প্রশ্নকর্তা: Husain Ahmod
উত্তর
সত্যের মাপকাঠি বলতে বুঝানো হয় যে, সাহাবায়ে কেরামগণ হক ও হক্কানিয়্যাত, দ্বীন ও ঈমানের ক্ষেত্রে যে মানদণ্ডে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তা দ্বীনে হক বুঝার মানদণ্ড। তারা যেভাবে দ্বীনকে বুঝেছেন, যেভাবে দ্বীনকে পালন করেছেন, সেভাবেই উম্মতে মুসলিমা কিয়ামত পর্যন্ত তাদের অনুসরণে পালন করে যাবে।
দ্বীনী কোন বিষয় আসলে, উক্ত বিষয়ে সাহাবাগণ কোন অর্থে বা কিভাবে তা করেছেন, তা অনুসরণ করা উম্মতের জন্য সঠিক ও যথার্থ আমলের মূল নিক্তি হবে।
সকল সাহাবাগণই হক বা সত্যের মাপকাঠি।
কুরআন ও হাদীসের মাঝে এর ভুরি ভুরি প্রমাণ বিদ্যমান। যেমন-
১
أُولَٰئِكَ هُمُ الْمُؤْمِنُونَ حَقًّا ۚ لَّهُمْ دَرَجَاتٌ عِندَ رَبِّهِمْ وَمَغْفِرَةٌ وَرِزْقٌ كَرِيمٌ [٨:٤]
তারাই হল সত্যিকার ঈমানদার! তাদের জন্য রয়েছে স্বীয় পরওয়ারদেগারের নিকট মর্যাদা, ক্ষমা এবং সম্মানজনক রুযী। [সূরা আনফাল-৪]
২
فَإِنْ آمَنُوا بِمِثْلِ مَا آمَنتُم بِهِ فَقَدِ اهْتَدَوا ۖ وَّإِن تَوَلَّوْا فَإِنَّمَا هُمْ فِي شِقَاقٍ ۖ فَسَيَكْفِيكَهُمُ اللَّهُ ۚ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ [٢:١٣٧]
অতএব তারা যদি ঈমান আনে, তোমাদের ঈমান আনার মত, তবে তারা সুপথ পাবে। আর যদি মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে তারাই হঠকারিতায় রয়েছে। সুতরাং এখন তাদের জন্যে আপনার পক্ষ থেকে আল্লাহই যথেষ্ট। তিনিই শ্রবণকারী, মহাজ্ঞানী। [সূরা বাকারা-১৩৭]
৩
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ آمِنُوا كَمَا آمَنَ النَّاسُ قَالُوا أَنُؤْمِنُ كَمَا آمَنَ السُّفَهَاءُ ۗ أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ السُّفَهَاءُ وَلَٰكِن لَّا يَعْلَمُونَ [٢:١٣]
আর যখন তাদেরকে বলা হয়, অন্যান্যরা যেভাবে ঈমান এনেছে তোমরাও সেভাবে ঈমান আন, তখন তারা বলে, আমরাও কি ঈমান আনব বোকাদেরই মত! মনে রেখো, প্রকৃতপক্ষে তারাই বোকা, কিন্তু তারা তা বোঝে না। [সূরা বাকারা-১৩]
৪
أُولَٰئِكَ كَتَبَ فِي قُلُوبِهِمُ الْإِيمَانَ وَأَيَّدَهُم بِرُوحٍ مِّنْهُ ۖ وَيُدْخِلُهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ خَالِدِينَ فِيهَا ۚ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمْ وَرَضُوا عَنْهُ ۚ أُولَٰئِكَ حِزْبُ اللَّهِ ۚ أَلَا إِنَّ حِزْبَ اللَّهِ هُمُ الْمُفْلِحُونَ [٥٨:٢٢]
তাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাদেরকে শক্তিশালী করেছেন তাঁর অদৃশ্য শক্তি দ্বারা। তিনি তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করবেন, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। তারা তথায় চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে। [সূরা মুজাদালা-২২]
হাদীসের কিতাবের মাঝে যে সনদ আছে। মুহাদ্দিসীনে কেরাম সনদের প্রতিটি রাবীদের বিষয়ে কালাম করলেও সাহাবাগণের ক্ষেত্রে জারাহ তা’দীলের কিতাবে কোন কালাম নেই। বরং সকলের ঐক্যমত্ব হলো, সকল সাহাবীগণই ন্যায়নিষ্ঠ। [মিরকাত-৫/৫১৭, উমদাতুল কারী-২/১০৫]
সুতরাং সকল সাহাবাগণই সত্যের মাপকাঠি। দ্বীন বুঝার মানদণ্ড। হকের উপর চলার আলোকবর্তিকা।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।
ইমেইল– ahlehaqmedia2014@gmail.com