প্রশ্ন
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
মাননীয় মুফতি সাহেব,
আশা করি আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন,
আমি একটি মাসয়ালা নিয়ে ভীষণ চিন্তিত,
আমি যখন হেদায়াতুন্নাহু পড়ি,তখন আমি জানতে পারি যে, বিয়ের আগেও বউ তালাক হয়/ দেওয়া যায়।
আমি অনেক সময় এটা নিয়ে কল্পনাও করতাম।রাস্তায় হাঁটার সময়। একাকী থাকার সময়।
মাঝেমধ্যে মনে মনে/কল্পনায় বলতাম যে, এটা করলে আমার বউ তালাক। অথবা আমি বিয়ে করলে আমার বউ তালাক। মনে করতে পারছি না।
এরপর আমি পেরেশানিতে পরে যাই।
একটা সময় আমি চিন্তা করলাম বিয়েতো সহজ جِدُّهُنَّ جِدٌّ، وهَزْلُهُنَّ جِدٌّ: النكاح، والطلاق، والرَّجْعَةُ”. [حسن.] – [رواه أبو د
একটা বিয়ে করে ছেড়ে দিব। তাই বলে ফেলি, “কইছি কইছি আমি বিয়ে করলে আমার প্রথম বউ তালাক/ বিয়ে করলে আমার বউ তালাক”। এমন উচ্চারণ করে ছিলাম।
যেকোনো একটি পরবর্তীতে অপরটি উচ্চারণ করে বলেছিলাম কিনা মনে করতে পারছি না। তবে লক্ষ্য উদ্দেশ্য দুটির একই ছিল।
সাথে এটাও যোগ করে ছিলাম কিনা মনে আসছে না, “দ্বিতীয় বিয়ে করলে প্রথম বউ তালাক”। একবার মনে হয় বলেছি, আবার মনে হয় বলিনি, আবার মনে হয় উচ্চারণ করিনি।
যাইহোক, যখন বিয়ের বয়স হল। বিয়ের মজলিসে বিয়েও হল। একজন মুফতি সাহেবের সাথে আগে আলোচনা করেছিলাম। মুফতি সাহেব পুনরায় বিয়ে করিয়ে দেন। সম্ভবত ফুজুলী বিয়ে।
এতদিন পেরেশানি মূক্ত ছিলাম।
কিছুদিন পূর্বে আমার দ্বিতীয় বিয়ে হয়। এরপর থেকেই আমি খুবই পেরেশানিতে আছি। আমার প্রথম বিয়ের কোন সমস্যা হল কিনা? এক মুহুর্ত এর জন্য ও আমি চিন্তা মুক্ত হতে পারছিনা না। দুনিয়াটা আমার কাছে সংকীর্ণ মনে হচ্ছে। কারো কাছে বলতেও পারিনা। সহ্যও করতে পারছি না। কোন কাজে মন বসাতে পারছি না। মাঝে মধ্যে মনে হয় মরে গেলেই ভালো হতো। মনে হয় পাগল হয়ে যাব। এটা মাথা থেকে দূর করতেও পারছি না। আমি সুন্দরভাবে বাঁচতে চাই। আমার নামাজ,ইবাদত কোন কিছুতেই মন বসছে না।
মাননীয় মুফতি সাহেবের নিকট আমি এর দ্রুত সমাধান চাচ্ছি। ছোট্ট কালের বিষয়ে আমাকে লজ্জা দিবেন না।
আল্লাহ আপনাকে সকল বিপদ থেকে হেফাজত করুন,আমীন।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
সন্দেহের কারণে কোন তালাক পতিত হয় না।
তাই আপনার দ্বিতীয় বিয়ের কারণে প্রথম স্ত্রীর উপর কোন তালাক পতিত হয়নি।
আর যেহেতু প্রথম স্ত্রীর উপর বিয়ের পরই তালাক পতিত হবার পর আবার তাকে বিয়ে করে নিয়েছিলেন, তাই সে আপনার স্ত্রী হিসেবে বাকি আছে।
সে হিসেবে এখন আপনার উভয় স্ত্রীই আপনার জন্য বৈধ রয়েছে। নতুন করে কোন কিছু করতে হবে না। তাই পেরেশান হবার কিছু নেই।
منها شك هل طلق أم لا لم يقع (الأشباه-108، جديد-196)
عدم الشك من الزوج فى الطلاق وهو شرط الحكم بوقوع الطلاق حتى لو شك فيه لا يحكم بوقوعه (بدائعل الصنائع، كتاب الطلاق، فصل فى الرسالة-3\126، جديد-3\199)
قَوْلُهُ (وَإِذَا أَضَافَ الطَّلَاقَ إلَى النِّكَاحِ وَقَعَ عَقِيبَ النِّكَاحِ مِثْلَ أَنْ يَقُولَ لِأَجْنَبِيَّةٍ إنْ تَزَوَّجْتُكِ فَأَنْتِ طَالِقٌ أَوْ كُلُّ امْرَأَةٍ أَتَزَوَّجُهَا فَهِيَ طَالِقٌ) فَإِنَّهُ إذَا تَزَوَّجَهَا طَلُقَتْ عِنْدَنَا……… ثُمَّ إذَا تَزَوَّجَهَا مَرَّةً أُخْرَى لَا تَطْلُقُ لِأَنَّ ” إنْ ” لَا تُوجِبُ التَّكْرَارَ (الجوهرة النيرة-2\39)
وتنحل اليمين بعد وجود الشرط مطلقا لكن إن وجد فى الملك طلقت (الدر المختار مع رد المحتار، كتاب الطلاق، باب التعليق-4\609)
وإذا أضافه إلى الشرط وقع عقيب الشرط (الفتاوى الهندية-1\420، جديد-1\488، هداية-2\385)
ان يَقُول ان تزوجت امْرَأَة فَهِيَ طَالِق ثمَّ تزوج امْرَأَته فانها تطلق فِي قَول ابي حنيفَة وَأَصْحَابه (الفتاوى الهندية-1\488)
فى الفتاوى الهندية– وَإِذَا طَلَّقَ الرَّجُلُ امْرَأَتَهُ تَطْلِيقَةً رَجْعِيَّةً أَوْ تَطْلِيقَتَيْنِ فَلَهُ أَنْ يُرَاجِعَهَا فِي عِدَّتِهَا رَضِيَتْ بِذَلِكَ أَوْ لَمْ تَرْضَ كَذَا فِي الْهِدَايَةِ (الفتاوى الهندية-1/470، هداية-2/394)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমু
ইমেইল– ahlehaqmedia201