প্রচ্ছদ / দুআ-দরূদ ও অজীফা / জায়নামাযের দুআ বলতে কিছু আছে কি? হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ছানা কোনটি?

জায়নামাযের দুআ বলতে কিছু আছে কি? হাদীস দ্বারা প্রমাণিত ছানা কোনটি?

প্রশ্ন

Anamul Hoque

জায়নামাজের দোয়া হিসেবে প্রচলিত “ইন্নিওজ্জাহতু ওয়াজহিয়া লিল্লাজি…” যা আমরা তাকবীরে তাহরীমার আগেই পড়ি,সেটার দালিলিক ভিত্তি কি,দয়া করে হাদীস ও আছারের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।
আর তাহলে যারা এ দোয়াটি তাকবীরে তাহরীমার পর সানা হিসেবে পড়ে তাদেরটা কি সহীহ নয়? আর এ দোয়াটিই যদি তাকবীরে তাহরীমার পরে সানা হিসেবে পড়ে তাহলে আমরা যে আলাদা একটি দোয়া “সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা ওয়াতাবা রাকছমুকা…” তাকবীরে তাহরীমার পর সানা হিসেবে পড়ি এটার দলিলিক ভিত্তি বিস্তারিত জানালে কৃতজ্ঞ থাকবো।

জবাব

بسم الله الرحمن الرحيم

জায়নামাযের দুআ বলতে কোন কিছু নেই। আমাদের সমাজে জায়নামাযের দুআ হিসেবে যা পড়া হয় সেটা কোন দলিল নির্ভর বক্তব্য নয়। বরং এটা নিছকই বানোয়াট একটি মতবাদ। এটাকে রাসূল সাঃ এর শিখানো পদ্ধতি মনে করা সুষ্পষ্ট বিদআত হবে। কোন সন্দেহ নেই।

নামাযের জন্য তাকবীরে তাহরীমা বলার পর সানা পড়া সুন্নত। ইন্নি ওয়াজ্জাহতু পড়া নয়। তবে যদি কেউ পড়ে, তাহলে তার নামায হয়ে যাবে, কোন সমস্যা নেই। {ফাতওয়া শামী, সালাত অধ্যায়}

যে সানা পড়া সুন্নাত সেটা কোনটি? রাসূল সাঃ এর হাদীসে তা স্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত।

عَنْ أَبِى سَعِيدٍ الْخُدْرِىِّ قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- إِذَا قَامَ مِنَ اللَّيْلِ كَبَّرَ ثُمَّ يَقُولُ « سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَبِحَمْدِكَ وَتَبَارَكَ اسْمُكَ وَتَعَالَى جَدُّكَ وَلاَ إِلَهَ غَيْرُكَ

হযরত আবু সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ যখন রাতে নামাযে দাড়াতেন, তখন তাকবীরে তাহরীমার পড়তেন- সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়াবি হামদিকা, ওয়াতাবারাসমুকা ওয়া তাআলা জাদ্দুকা ওয়ালা ইলাহা গায়রুকা।

সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৭৭৫,৭৭৬,

সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৮০৪,

সুনানে বায়হাকী কুবরা, হাদীস নং-২১৭৭,

সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৪২,

সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-৫

সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১২৩৯

সুনানে নাসায়ী কুবরা, হাদীস নং-১০৬৮৫

তাহাবী শরীফ, হাদীস নং-১০৭৩

সহীহ ইবনে খুজাইমা, হাদীস নং-৪৭০

কানযুল উম্মাল ফি সুনানিল আকওয়াল ওয়াল আফআল, হাদীস নং-৮৩৮৭

মুসনাদে আবী ইয়ালা, হাদীস নং-৩৭৩৫

মুসনাদে ইসহাক বিন রাহউয়া, হাদীস নং-১০০০

মুসনাদে ইবনুল জি’দ, হাদীস নং-১৮৩

মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-৫৬৯

মুসনাদে আহমাদ বিন হাম্বল, হাদীস নং-১১৬৭৫

মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৪০৫

মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হাদীস নং-২৫৫৫

মুজামে ইবনে আসাকীর, হাদীস নং-১৫১৮

শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৬০৩

আল মুজামুল কাবীর, হাদীস নং-১৫৫

আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-১০২৬

যেহেতু রাসূল সাঃ থেকে সানা কি? তা স্পষ্ট ভাষায় বর্ণিত। তাই এছাড়া অন্য কিছু পড়া সুন্নাতের খেলাফ হবে।

والله اعلم بالصواب

উত্তর লিখনে

লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

[email protected]

 

0Shares

আরও জানুন

আজানের সময় বা খানা খাওয়া ও বাথরুমে গমণ এবং স্বাভাবিক অবস্থায় মাথায় কাপড় রাখার হুকুম কী?

প্রশ্ন আমার চারটি বিষয়ে জানার ছিলো : ________ ১, বাথরুমে অবস্থানকালীন সময়ে মাথায় কাপড় দেওয়ার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *