প্রচ্ছদ / আজান ও ইকামত / প্রসঙ্গ জাল হাদীসের কবলে বইটির ব্যাবচ্ছেদঃ বুখারী মুসলিমের হাদীস সম্পর্কে লা-মাযহাবী বন্ধুতের কতিপয় ভুল ধারণার নিরসন!

প্রসঙ্গ জাল হাদীসের কবলে বইটির ব্যাবচ্ছেদঃ বুখারী মুসলিমের হাদীস সম্পর্কে লা-মাযহাবী বন্ধুতের কতিপয় ভুল ধারণার নিরসন!

আল্লামা আব্দুল গাফফার সাহেব দা.বা.

বুখারী ও মুসলিমের হাদীসের বিপরীতে অন্য কিতাবের হাদীস দ্বারা দলীলগ্রহণ কি ভ্রষ্টতা?

মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবগণ লিখেছেন : আমাদের পরবর্তী আলোচনায় দেখাব আমাদের লেখক (‘দলীলসহ নামাযের মাসায়েল’ বইয়ের লেখক আবদুল মতীন সাহেব) সহীহ বুখারী ও মুসলিমের ঐকমত্যের বিরোধিতায় কিভাবে ইবনে আবী শাইবাহ, তাহাবী, অন্যান্য সুনান ও মুসনাদের গ্রন্থকে ব্যবহার করেছেন, যা সুস্পষ্ট বিদআত ও মুমিনদের বিরোধী পথ (সূরা নিসা : ১১৫)। উল্লেখ্য, কুরআনের দাবী অনুযায়ী যা আল্লাহ নাযিল করেছেন তা পরস্পর বিরোধী হবে না (সূরা নিসা : ৮২)। নবী (স) এর হাদীস অনুযায়ী কিতাবের একাংশকে অপরাংশ দ্বারা দলীল উপস্থাপন করে বিতর্ক অবস্থায় রাখা যাবে না (সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম)। এর কিছু পরে তাঁরা লিখেছেন : আসুন এখন আমরা দেখি কিভাবে সহীহ হাদীসের মোকাবেলায় এই উম্মতের ধ্বংসপ্রাপ্তরা যঈফ ও জাল হাদীস উপস্থাপন করে।

মুহতারাম, এরা সহীহ বুখারী ও মুসলিমের বিরোধিতায় ইবনে আবী শাইবাহ, তাহাবী, অন্যান্য সুনান ও মুসনাদ গ্রন্থের হাদীস উপস্থাপন করাকে সুস্পষ্ট বিদআত বলে আখ্যা দিয়েছে এবং এর পক্ষে দলীল হিসাবে তারা সূরা নিসার ১১৫ নং আয়াতের বরাত দিয়েছে। আপনি একটু কষ্ট করে দেখুন তো সূরা নিসার ঐ আয়াতে কোথায় বলা হয়েছে যে, বুখারী ও মুসলিমের বিরোধিতায় ঐ সকল গ্রন্থের হাদীস দ্বারা দলীল গ্রহণ সুস্পষ্ট বিদআত? কুরআনের ঐ আয়াতটি কি তাহলে রাসূলের ইন্তিকালের সোয়া দুইশত বছর পরে বুখারী মুসলিম সংকলিত হওয়ার পর নাযিল হয়েছে? সুবহানাল্লাহ! এরা যে কিরকম জালিয়াতির আশ্রয় নিতে পারে এটি তার একটি জ¦লন্ত নিদর্শন। আয়াতটিতে এ কথা বলা হয়েছে যে, (তরজমা) “সৎপথ স্পষ্ট হওয়ার পর যে ব্যক্তি রাসূলের বিরোধিতা করে এবং মুমিনদের পথ ভিন্ন অন্য কোনো পথের অনুসরণ করে, আমি তাকে সেই পথেই পরিচালিত করব যে পথ সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে আমি জাহান্নামে প্রবেশ করাবো এবং জাহান্নাম অত্যন্ত মন্দ ঠিকানা।”

বুখারী ও মুসলিমে সব সহীহ হাদীস নেই

মুহতারাম, অনেকের মত মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবরাও সম্ভবত এই ধারণা পোষণ করেন যে, বুখারী ও মুসলিম ব্যতীত অন্য কোনো গ্রন্থে সহীহ হাদীস নেই। থাকলেও তা বুখারী ও মুসলিমের সহীহ হাদীসের সমপর্যায়ের সহীহ নয়। এই কারণে কোনো বিষয়ে হাদীস পেশ করা হলে বলে, হাদীসটি বুখারী ও মুসলিমে নেই, বুখারী মুসলিমের হাদীস দেখান। কিংবা বলে, এর বিপরীতে বুখারী মুসলিমে যে হাদীস আছে তা অধিকতর সহীহ।

এটা উসূলুল ফিকহ ও উসূলুল হাদীস সম্পর্কে অজ্ঞতাজনিত কথা। এইসব আল্লাহর বান্দাহরা যদি এ সম্পর্কে খোদ বুখারী ও মুসলিমের বক্তব্য কী তা জানার চেষ্টা করত তাহলে এইরূপ কথা বলত না। কারণ খোদ ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম রাহ. পরিষ্কার ভাষায় বলেছেন যে, তাঁরা তাঁদের কিতাবুস সহীহতে সব সহীহ হাদীস সংকলন করেননি। তার ইচ্ছাও করেননি। কথাটি উভয় ইমাম থেকে সহীহ সনদে প্রমাণিত।

ইমাম বুখারী রাহ. বলেছেন,

مَا أَدْخَلْتُ فِى كِتابِيْ “اَلْجَامِعِ” إِلّا مَا صَح وَتَرَكْتُ مِنَ الصِّحَاحِ لِحَالِ الطُّوْلِ.

আমি আমার কিতাবুল জামি‘তে শুধু সহীহ হাদীস এনেছি। তবে গ্রন্থের কলেবর বৃদ্ধির আশংকায় (বহু) সহীহ হাদীস আনা থেকে বিরত থেকেছি। -ইবনে আদী, আল কামিল, খ- ১, পৃষ্ঠা ২২৬; খতীব বাগদাদী, তারীখে বাগদাদ, খ- ২, পৃষ্ঠা ৮-৯

‘শুরূতুল আইম্মাতিল খামছা’য় (পৃষ্ঠা ১৬০-১৬৩) ইমাম ইসমাঈলীর সূত্রে ইমাম বুখারীর বক্তব্যের আরবী পাঠ এইরূপ :

لَمْ أُخَرِّجْ فِيْ هَذَا الْكِتَابِ إِلّا صَحِيْحًا وَمَاتَرَكْتُ مِنَ الصّحِيْحِ أَكْثَرُ

আমি এই কিতাবে শুধু সহীহ হাদীস এনেছি। আর যে সহীহ হাদীস আনিনি তার সংখ্যা বেশি।

বুঝা গেল, ইমাম বুখারী মনস্থ করেছিলেন, তাঁর কিতাবে তিনি যা আনবেন তা হবে সহীহ হাদীস। কিন্তু তিনি এই মনস্থ করেননি যে, সব সহীহ হাদীস তিনি তাঁর কিতাবে আনবেন। সব সহীহ হাদীস আনার ইচ্ছাও করেননি, আনেনওনি। অনেক সহীহ হাদীস তাঁর কিতাবের বাইরে রয়ে গেছে।

ইমাম মুসলিমের ব্যাপারটিও একই রকম। তিনিও তাঁর কিতাবে সব সহীহ হাদীস আনার ইচ্ছাও করেননি, আনেনওনি। খতীব বাগদাদী রাহ. ‘তারীখে বাগদাদে’ (খ- ১২, পৃষ্ঠা ২৭৩, তরজমা : আহমদ ইবনে ঈসা আততুসতুরী) এবং হাযেমী ‘শুরূতুল আইম্মাতিল খামসা’য় (পৃষ্ঠা ১৮৫) বর্ণনা করেছেন যে, ইমাম আবূ যুর‘আ রাযী রাহ. (ইমাম মুসলিম রাহ.-এর উস্তায) একবার সহীহ মুসলিম সম্পর্কে বললেন, এর দ্বারা তো বিদ‘আতপন্থীদের জন্য পথ খুলে দেওয়া হল। তাদের সামনে যখন কোনো হাদীস দ্বারা দলীল দেওয়া হবে তখন তারা বলবে, এ তো কিতাবুস সহীহতে নেই।

আবূ যুর‘আ রাযী রাহ. বুঝাতে চাচ্ছেন যে, সব সহীহ হাদীস তো সহীহ মুসলিমে সংকলিত হয়নি। কাজেই কিতাবের নামের সাথে যখন সহীহ কথাটি যুক্ত করা হয়েছে তখন এর দ্বারা পরবর্তীতে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে এবং মানুষ সহীহ মুসলিমে কোনো হাদীস না পেলে সেটা সহীহ হওয়া সত্ত্বেও সেটাকে গ্রহণ করতে চাইবে না- শুধু এই অজুহাতে যে, হাদীসটি সহীহ মুসলিমে নেই। আবূ যুর‘আ রাযীকে আল্লাহ তাআলা জাযায়ে খায়র দান করুন। তিনি আমাদের চোখ খুলে দিয়েছেন। না হলে আমরাও হয়তো মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবদের মত তার আশংকা অনুযায়ী বিদআতপন্থী হয়ে যেতাম।

আরও দেখুন, ইমাম ইবনে ওয়ারা রাহ.ও সরাসরি ইমাম মুসলিমকে সম্বোধন করে এই আশংকা ব্যক্ত করেছিলেন। তখন ইমাম মুসলিম রাহ. বলেছিলেন, ‘আমি এই কিতাব সংকলন করেছি এবং বলেছি, এই হাদীসগুলো সহীহ। কিন্তু আমি তো বলিনি যে, এ কিতাবে যে হাদীস নেই তা যঈফ।’

অতএব বোঝা গেল যে, অন্যান্য গ্রন্থেও সহীহ হাদীস আছে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে।

একমাত্র বুখারী ও মুসলিমের হাদীসই কি অধিকতর বিশুদ্ধ? আর অন্যান্য গ্রন্থের সব হাদীসই কি বুখারী ও মুসলিমের হাদীসের তুলনায় নিম্নমানের?

এই প্রশ্নের এক কথায় জবাব হল, ‘না’। কারণ, ইমাম বুখারী ও মুসলিম তো তাঁদের নিজেদের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ অনেক হাদীসই তাঁদের কিতাবে আনেননি। দেখুন, হাম্মাদ ইবনে সালামাহ বর্ণিত কোনো হাদীস ইমাম বুখারী তাঁর কিতাবে আনেননি। কেন আনেননি সে প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ইমাম আবূ বকর ইসমাঈলী রাহ. (৩৭১ হি.) ‘আল মাদখাল ইলাল মুসতাখরাজ ‘আলা সহীহিল বুখারী’তে বলেছেন, ‘বুখারী তো তার মানদণ্ডে উত্তীর্ণ অনেক সহীহ হাদীসও বর্ণনা করেননি। তবে তা এ জন্য নয় যে, তাঁর দৃষ্টিতে হাদীসগুলো যঈফ কিংবা সেগুলোকে তিনি বাতিল সাব্যস্ত করতে চান। তো হাম্মাদ ইবনে সালামাহ বর্ণিত কোনো হাদীস তাঁর কিতাবে না আনার বিষয়টিও সেরকমই।’ -আন নুকাত ‘আলা মুকাদ্দিমাতি ইবনিস সালাহ, বদরুদ্দীন যারকাশী, খ- ৩, পৃষ্ঠা ৩৫৩

ইমাম আবূ নু‘আইম আসপাহানী রাহ. (৪৩০ হি.) ‘আল মুসতাখরাজ ‘আলা সহীহি মুসলিম’-এ একটি হাদীসের মান সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেন,

فَإِنّهُمَا رَحِمَهُمَا الله قَدْ تَرَكَا كَثِيْرًا مِّمّا هُوَ بِشَرْطهِمَا أَوْلى وَإِلى طَرِيْقَتِهِمَا أَقْرَبُ.

‘বুখারী মুসলিম এমন অনেক হাদীস ছেড়ে দিয়েছেন, যেগুলো তাঁদের সংকলিত হাদীস অপেক্ষাও তাঁদের নীতি ও মানদণ্ডের অধিক নিকটবর্তী।’ -আল মুসতাখরাজ, খ- ১, পৃষ্ঠা ৩৬

বুখারী ও মুসলিম ব্যতীত অন্যান্য গ্রন্থে এরূপ বহু হাদীস রয়েছে যেগুলো বুখারী ও মুসলিমে বর্ণিত হাদীসসমূহের সমপর্যায়ের বা বুখারী ও মুসলিমের মানদণ্ডে উত্তীর্ণ। শুধু মুসতাদরাকে হাকেমেই এই পর্যায়ের হাদীস, হাফেজ ইবনে হাজার আসকালানী রাহ.-এর  বক্তব্য অনুযায়ী হাজারের কাছাকাছি। -আন নুকাত আলা কিতাবি ইবনিস সালাহ

মুসনাদে আহমাদ এখন ৫২ খণ্ডে বিস্তারিত তাখরীজসহ প্রকাশিত হয়েছে। টীকায় শায়েখ শুআইব আলআরনাঊত রাহ. ও তাঁর সহযোগীবৃন্দ সনদের মান সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। মারকাযুদ দাওয়াহ আলইসলামিয়া ঢাকা-এর উচ্চতর হাদীস বিভাগের একজন ছাত্র শুধু প্রথম চৌদ্দ খণ্ডের হাদীসের হিসাব করেছেন, তো দেখা গেছে যে, সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, সুনানে আবূ দাউদ, জামে তিরমিযী, সুনানে নাসাঈ, সুনানে ইবনে মাজাহ- এই ছয় কিতাবে নেই এমন হাদীসগুলোর মধ্য হতে ৪০১টি হাদীস রয়েছে বুখারী ও মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী। শুধু বুখারীর শর্ত অনুযায়ী আছে ৬৪টি, শুধু মুসলিমের শর্ত অনুযায়ী আছে ২১৫টি।

এ ছাড়া সহীহ লিযাতিহী বা সহীহ লিগাইরিহী হাদীসের সংখ্যা ১০০৮টি। হাসান লিযাতিহী বা হাসান লিগাইরিহী হাদীসের সংখ্যা ৬১৫টি। এসব সংখ্যা স্বতন্ত্র ও অতিরিক্ত হাদীসসমূহের, অর্থাৎ যেগুলোর কোনো মুতাবি‘ বা শাহিদ তাখরীজের বিবরণ অনুযায়ী ছয় কিতাবে নেই।

দেখুন, শায়েখ আলবানী রাহ. ‘সিফাতুস সালাহ’ (নবীজীর নামাযের পদ্ধতি) সম্পর্কে যে কিতাব লিখেছেন তাতে ছয় কিতাবের বাইরে ৮৬টি হাদীস রয়েছে। এবং সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের বাইরে সুনানের কিতাবের হাদীস রয়েছে ১৫৬টি।

স্বয়ং ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম রাহ. তাঁদের অন্যান্য কিতাবে এমন অনেক হাদীসকে সহীহ বলেছেন বা দলীল হিসাবে উল্লেখ করেছেন, যেগুলো তাঁদের এই দুই কিতাবে নাই। নিশ্চিত হতে চাইলে ‘জুযউল কিরাআতি খালফাল ইমাম’ এবং ‘জুযউ রাফইল ইয়াদাইন’ ইত্যাদি কিতাব খুলে দেখতে পারেন। জামে তিরমিযী খুললেও দেখতে পাবেন, ইমাম তিরমিযী রাহ. ইমাম বুখারীর উদ্ধৃতিতে এমন অনেক হাদীসকে সহীহ বলেছেন, যা সহীহ বুখারীতে নেই।

সুতরাং অন্যান্য গ্রন্থের হাদীসগুলোকে শুধু এই অজুহাতে পরিত্যাগ করা যে, এগুলো বুখারী মুসলিমে নেই অর্বাচিনতা ছাড়া কিছু নয়। কাজেই মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবগণ কর্তৃক বুখারী ও মুসলিমের বিরোধিতায় অন্যান্য গ্রন্থের হাদীস উপস্থাপন করাকে বিদআত বলে আখ্যায়িত করণ অতপর তাঁদের এই উক্তি ‘আসুন আমরা দেখি কিভাবে সহীহ হাদীসের মোকাবেলায় এই উম্মতের ধ্বংসপ্রাপ্তরা যঈফ ও জাল হাদীস উপস্থাপন করে’  তাঁদের অজ্ঞানতা বা জ্ঞানপাপিতাকে স্পষ্ট করে তোলে।

তাকসীমে সাবঈ নিয়ে আলোচনা

অনেক অজ্ঞ ব্যক্তির ন্যায় মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবগণও এই ধারণা পোষণ করে থাকেন যে, বুখারী ও মুসলিমের হাদীস সর্বাবস্থায় অগ্রগণ্য। তাঁরা তাঁদের এই চিন্তার ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করেছেন সপ্তম শতাব্দীতে তৈরিকৃত ‘তাকসীমে সাবঈ’কে। আর এ সম্পর্কে তিনি শাহ আবদুল হক মুহাদ্দিসে দেহলভীর একটি বক্তব্য উদ্ধৃত করেছেন। তাকসীমে সাবঈ অর্থ সাত প্রকারে বিভক্তকরণ। সম্ভবত মুহাদ্দিস ইবনুস সালাহ রাহ. (৬৪৬ হি.) সর্বপ্রথম এই ধারণা প্রকাশ করেন যে, সহীহ হাদীস সাত প্রকার এবং প্রত্যেক উপরের প্রকার নীচের প্রকারের চেয়ে তুলনামূলক বেশি সহীহ। প্রকারগুলো এই:

১. যে হাদীস সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম দুই কিতাবেই আছে।

২. যে হাদীস শুধু বুখারীতে আছে।

৩. যে হাদীস শুধু মুসলিমে আছে।

৪. যে হাদীস এই দুই কিতাবে নেই তবে এই দুই কিতাবের মানদণ্ডে সহীহ।

৫. যে হাদীস শুধু বুখারীর মানদণ্ডে সহীহ।

৬. যে হাদীস শুধু মুসলিমের মানদণ্ডে সহীহ।

৭. যে হাদীস না এই দুই কিতাবে আছে, না এই দুই কিতাবের মানদণ্ডে সহীহ। তবে অন্য কোনো ইমাম একে সহীহ বলেছেন। -মুকাদ্দিমাতু ইবনিস সালাহ, পৃ. ১৭০

এ সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য হল, যাঁরা এই শ্রেণীবিন্যাস করেছেন খোদ তাঁরাই আবার বলেছেন,

أَمّا لَوْ رُجِّحَ قِسْمٌ عَلَى مَا فَوْقَهُ بِأُمُوْرٍ أُخْرَى تَقْتَضِي التّرْجِيْحَ، فَإِنّهُ يُقَدّمُ عَلى مَا فَوْقَهُ، إِذْ قَدْ يَعْرِضُ لِلْمَفُوْقِ مَا يَجْعَلُهُ فَائِقًا.

অর্থাৎ ‘অগ্রগণ্যতার অন্যান্য কারণে কোনো প্রকার যদি তার উপরস্থ প্রকারের চেয়ে অগ্রগামী হয় তাহলে তাকে তার উপরের প্রকারের চেয়ে অগ্রগণ্য সাব্যস্ত করা হবে। কারণ, এই বিন্যাসে উল্লেখকৃত নীচের প্রকারের বর্ণনার সাথে কখনও কখনও এমন বৈশিষ্ট্য যুক্ত হয়, যা তাকে উপরের পর্যায়ের বর্ণনার সমকক্ষ বা অগ্রগণ্য করে।’

কথাটি বলেছেন হাফেজ ইবনে হাজার রাহ. (৭৫২ হি.) তাঁর শরহু নুখবাতিল ফিকারে (পৃষ্ঠা ৩২)। তাঁর শাগরিদ মুহাদ্দিস শামসুদ্দীন সাখাভী রাহ.ও (৯০২ হি.) ‘ফাতহুল মুগীছে’ তা আরও স্পষ্ট করে বর্ণনা করেছেন। মুহাদ্দিস বদরুদ্দীন যারকাশী রাহ. (৭৯৪ হি.) ‘আন নুকাত আলা মুকাদ্দিমাতি ইবনিস সালাহ-এ (খ- ১, পৃষ্ঠা ২৫৬-২৫৭) এবং জালালুদ্দীন সুয়ূতী রাহ. তাদরীবুর রাবীতে (খ- ১, পৃষ্ঠা ৮৮) পরিষ্কার লিখেছেন যে, সহীহ মুসলিমের তুলনায় সহীহ বুখারীর অধিক সহীহ হওয়ার অর্থ সমষ্টিগত বিচারে অধিক সহীহ হওয়া। এই নয় যে, সহীহ বুখারীর প্রতিটি হাদীস সহীহ মুসলিমের প্রতিটি হাদীসের চেয়ে অধিক সহীহ। যারকাশী রাহ. আরও লিখেছেন, অগ্রগণ্যতার কারণ বিচারে মুহাদ্দিসগণ কখনও কখনও মুসলিমের হাদীসকে বুখারীর হাদীসের উপর প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

সুতরাং বুঝা গেল যে, তাঁদের কাছেও ‘তাকসীমে সাবঈ’ সর্বক্ষেত্রে প্রযোজ্য অটল নীতি নয়।

আমরা যদি বাস্তবতা বিচার করি তাহলে আমরা বুঝতে পারব যে, এই প্রকারভেদ আসলে উসূলে হাদীসের আলোকে সহীহ হতে পারে না। কারণ সহীহ হাদীসের শ্রেণী ও পর্যায় নির্ধারিত হবে ছিহহাত বা শুদ্ধতার শর্ত ও বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে, বিশেষ কোনো কিতাবে থাকা বা না থাকার ভিত্তিতে নয়। যেমন অনেক হাদীস শুধু সহীহ বুখারীতে আছে, সহীহ মুসলিমে নেই, কিন্তু তার সনদ এমন যে, তা মুসলিমের মানদণ্ডেও সহীহ। এ ধরনের হাদীসকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে নেওয়ার কী অর্থ থাকতে পারে? তেমনি কোনো হাদীস বুখারীতে নেই, শুধু মুসলিমে আছে, কিন্তু তার সনদ এমন যে, তা বুখারীর নিকটেও সহীহ। এ হাদীসকে তৃতীয় শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত করা কি অর্থহীন নয়? তদ্রূপ যেসব হাদীস উভয় ইমামের মানদণ্ডে সহীহ সেগুলো কি শুধু এই দুই কিতাবে সংকলিত হয়নি বলেই চতুর্থ শ্রেণীতে চলে যাবে?

এই বাস্তবতা বিচার করেই অনেক মুহাক্কিক ও গবেষক মুহাদ্দিস বলেছেন, এই প্রকারভেদ উসূলে হাদীসের আলোকে সহীহ নয়। দূর অতীতের মুহাদ্দিসগণের ন্যায় নিকট অতীতের প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আহমাদ শাকির রাহ.ও (মৃত্যু ১৩৭৭ হি.) এই তাকসীম ও প্রকারভেদের কঠোর সমালোচনা করেছেন। দেখুন, মুসনাদে আহমাদে সহীফায়ে হাম্মাম ইবনে মুনাব্বিহের উপর তার ভূমিকা, খ- ৮, পৃষ্ঠা ১৮২

আশা করি উপরিউক্ত সংক্ষিপ্ত আলোচনা পাঠ করে আপনি তাকসীমে সাবঈর ভিত্তির উপর গড়ে উঠা মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবদের মানসিকতার জবাব পেয়ে গেছেন।

এই মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবগণ ইন্টারনেটে শাহ ওয়ালীউল্লাহ রাহ.-এর একটি বক্তব্যকে তাদের মানসিকতার পক্ষে একটি দলীল হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। এর জবাবে বলব যে, শাহ ওয়ালীউল্লাহ রাহ.-এর বক্তব্য দ্বারা এটা বুঝা যায় না যে, তিনি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের হাদীসকে সর্বক্ষেত্রে সর্বাবস্থায় অগ্রগণ্য বিবেচনা করেছেন। তিনি ঐ বক্তব্যের পরে পরস্পরবিরোধী দুই হাদীসের মধ্যকার বিরোধ দূরীভূত করার যে উপায়গুলো ব্যক্ত করেছেন তন্মধ্যে একটি উপায়ও এই বলেননি যে, পরস্পরবিরোধী দুই হাদীসের একটি যদি বুখারী বা মুসলিমের হয় তাহলে বুখারী বা মুসলিমের হাদীস অগ্রগণ্য বলে বিবেচিত হবে।

তিনি আসলে বিশুদ্ধতা ও প্রসিদ্ধতার বিচারে হাদীসের কিতাবসমূহকে চার স্তরে বিভক্ত করেছেন। প্রথম স্তরে তিনি স্থান দিয়েছেন মুয়াত্তা মালেক, বুখারী ও মুসলিম শরীফকে। কিন্তু এ কথা বলেননি যে, মুয়াত্তা মালেক, বুখারী ও মুসলিমের প্রতিটি হাদীস অন্যান্য গ্রন্থের প্রতিটি হাদীসের চেয়ে অগ্রগণ্য বলে বিবেচিত হবে। শাহ ওয়ালীউল্লাহ রাহ.-এর বক্তব্য নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে এই পত্রের কলেবর আর বৃদ্ধি করতে চাচ্ছি না। যতটুকু বললাম তা-ই যথেষ্ট বলে মনে করি।

অধিকতর সহীহ বর্ণনাই কি সর্বদা ও সর্বক্ষেত্রে অগ্রগণ্য?

মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবসহ অনেকের ধারণা হল,  ‘যে হাদীস সনদের বিচারে অধিক সহীহ তা-ই শ্রেষ্ঠ ও অগ্রগণ্য, বিপরীত হাদীসটি সহীহ হলেও।’ এ কারণেই এই ভাইয়েরা জোড় বাক্যে ইকামত সংক্রান্ত সহীহ হাদীসগুলোর প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে অন্য জবাবের সঙ্গে সঙ্গে এই কথাও বলেছেন যে, তাছাড়া হাদীসটি মুসলিমের হাদীসের বিরোধী হওয়ায় শায। কাজেই তা প্রত্যাখ্যাত।

অথচ হাদীসের মাঝে বাহ্যত বিরোধ দেখা দিলে অন্য কোনো বিবেচনা ছাড়াই অধিক সহীহ হাদীসটিকে গ্রহণ করা এবং বিপরীতটিকে বর্জন করা কোনো নিয়মের মধ্যে পড়ে না। স্বীকৃত নিয়ম এই যে, এই বিরোধের ক্ষেত্রে জমা, তারজীহ ও নাস্খ তথা সমন্বয় সাধন, অগ্রগণ্য বিচার ও নাসিখ-মানসূখের নিয়ম কার্যকর করতে হবে। তারজীহ বা অগ্রগণ্য বিচারের প্রসঙ্গ যদি আসে তাহলে ‘উজূহুত তারজীহ’ বা অগ্রগণ্যতার কারণসমূহের ভিত্তিতে যে হাদীস রাজিহ বা অগ্রগণ্য হবে সে হাদীসের উপরই আমল হবে। মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবগণ সনদের বিচারে অধিক সহীহ হওয়াকেই একমাত্র কারণ বলে মনে করেন। এবং বিশেষত বুখারী মুসলিমের হাদীসকে সর্বাবস্থায় অগ্রগণ্য বলে মনে করেন। অথচ অধিকতর সহীহ হওয়া বা বুখারী মুসলিমে থাকা  অগ্রগণ্যতার কারণসমূহের মধ্য হতে একটি কারণ মাত্র। অগ্রগণ্যতার আরও অনেক কারণ আছে।

ইমাম আবূ বকর মুহাম্মাদ ইবনে মূসা আল হাযেমী রাহ. তাঁর ‘আলই‘তিবার ফিন নাসিখি ওয়াল মানসূখি মিনাল আছার’ কিতাবে (খ- ১, পৃষ্ঠা ১৩২-১৬০) পঞ্চাশটি উজূহুত তারজীহ (অগ্রগণ্যতার কারণ) উল্লেখ করেছেন, যেগুলোর দ্বারা পরস্পরবিরোধী দুই হাদীসের মধ্যে অগ্রগণ্য নির্ধারণে সহযোগিতা নেওয়া হয়।

এই পঞ্চাশটি কারণের মধ্য হতে একটি কারণও এই বলেননি যে, পরস্পরবিরোধী দুই হাদীসের মধ্যে একটি বুখারী বা মুসলিমে আর অন্যটি অন্য কোনো হাদীসের কিতাবে থাকলে বুখারী বা মুসলিমের হাদীসটি অগ্রগণ্য হবে। তিনি পঞ্চাশটি উজূহুত তারজীহ উল্লেখ করার পর বলেছেন, ‘এই পঞ্চাশটি কারণ ছাড়াও অগ্রগণ্যতার আরও অনেক কারণ আছে, এই সংক্ষিপ্ত কিতাবের কলেবর বৃদ্ধির আশংকায় আমি সেগুলোর উল্লেখ থেকে বিরত থাকলাম।’

হাফেজ যাইনুদ্দীন আলইরাকী রাহ. (৭২৫-৮০৬ হি.) মুকাদ্দিমাতু ইবনিস সালাহর উপর তাঁর লিখিত টীকা-গ্রন্থ ‘আত তাক্ঈদ ওয়াল ঈজাহ শারহু মুকাদ্দিমাতি ইবনিস সালাহ’-এ (খ- ১, পৃষ্ঠা ২৮৯) হাযেমী রাহ.-এর উক্ত বক্তব্য উদ্ধৃত করার পর বলেছেন, উজূহুত তারজীহ বা অগ্রগণ্যতার কারণসমূহের সংখ্যা একশতেরও বেশি। এরপর তিনি ঐ পঞ্চাশটি কারণ সংক্ষিপ্তভাবে উল্লেখ করেছেন অতপর অবশিষ্ট কারণগুলো ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি ১১০টি উজূহুত তারজীহ বা অগ্রগণ্যতার কারণ উল্লেখ করেছেন। কিন্তু অগ্রগণ্যতার কারণ হিসাবে বুখারী মুসলিমে কোনো হাদীস থাকাকে একটি কারণ হিসাবে যখন উল্লেখ করেছেন তখন সেই কারণকে তিনি ১০২ নম্বরে ফেলেছেন। তাহলে বুঝুন ব্যাপারটা!

লা মাযহাবী ঘরানার বিশিষ্ট আলেম শাওকানী রাহ. তাঁর ‘ইরশাদুল ফুহূল’ গ্রন্থে অগ্রগণ্যতার ১৬০টি কারণ উল্লেখ করেছেন। সনদগত বিচারে অগ্রগণ্যতার ৪২টি কারণ উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্য হতে বুখারী মুসলিমের হাদীসকে অন্যান্য হাদীস গ্রন্থের হাদীসের উপর অগ্রগণ্যতার বিষয়টিকে উল্লেখ করেছেন ৪১ নম্বরে ।

তো সনদগত বিচার ছাড়াও অন্যান্য বিচারে অগ্রগণ্যতার কারণসমূহকে উপেক্ষা করে এবং সনদগত বিচারে অগ্রগণ্যতার কারণসমূহের মধ্য হতে সর্বশেষ কারণটিকে প্রথমেই বিবেচনায় নিয়ে এই কথা বলে দেওয়া যে, হাদীসটি বুখারী মুসলিমের বিরোধী বিধায় শায বা প্রত্যাখ্যাত বা তা গ্রহণযোগ্য নয় কিরূপ অর্বাচিনতা ও হঠকারিতা তা আপনি একটু চিন্তা করে দেখবেন কি?

যঈফ হাদীসও অনেক সময় সহীহ হাদীসের উপর অগ্রগণ্য বলে বিবেচিত হয়

মুহতারাম, অনেকে মনে করে থাকেন যে, পরস্পরবিরোধী দুইটি হাদীসের মধ্যে যেটি অধিকতর সহীহ সেটিকেই আমলের জন্য অগ্রাধিকার দিতে হবে। সেটিই অপরটির তুলনায় অগ্রগণ্য বিবেচিত হবে। কিন্তু উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, না, এটি মূলনীতি নয়। কেননা, অগ্রগণ্যতা বিচারের  বহুবিধ দিক ও কারণ রয়েছে। কাজেই সবসময় অধিকতর সহীহ হাদীস অগ্রগণ্য বলে বিবেচিত হয় না। তদ্রƒপ যঈফ হাদীসের উপর সহীহ হাদীসকে সবসময় অগ্রগণ্য বলে বিবেচনা করা যায় না। কারণ, হাদীসের ছিহহাত বা শুদ্ধতা অগ্রগণ্যতার কারণসমূহের মধ্য হতে একটি কারণ মাত্র, একমাত্র কারণ নয়। অনেক সময় যঈফ হাদীসকেও সহীহ হাদীসের উপর অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। তাকেই অগ্রগণ্য বলে বিবেচনা করা হয়।

দেখুন স্বয়ং ইমাম বুখারী রাহ. একটি যঈফ হাদীসকে সহীহ হাদীসের উপর প্রাধান্য দান করেছেন। তিনি বুখারী শরীফের কিতাবুস সালাহ-এর দ্বাদশ অধ্যায়ে (بَابُ مَا يُذْكَرُ فِي الْفَخِذِ)  উরূ সতরের অন্তর্ভুক্ত কি না- এ সম্পর্কে আলোচনা করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন-

وَ حَدِيْثُ أَنَسٍ أَسْنَدُ وَ حَدِيْثُ جَرْهَدٍ أَحْوَطُ حَتّى يخْرُجَ مِنْ إِخْتِلَافِهِمْ.

অর্থাৎ আনাস রা.-এর হাদীস (যার দ্বারা উরূ সতর না হওয়া প্রমাণিত হয়) সনদের বিচারে অধিক সহীহ হলেও জারহাদের হাদীস (যাতে উরূ সতর হওয়ার কথা আছে) সতর্কতার বিচারে অগ্রগণ্য, যাতে ইখতিলাফের মধ্যে থাকতে না হয়।

ফাতহুল বারীতে (খ- ১, পৃষ্ঠা ৫৭১) আছে, ইমাম বুখারী রাহ. ‘আত-তারীখুল কাবীরে’ জারহাদের হাদীসকে ইযতিরাবের কারণে যঈফ বলেছেন। তাহলে দেখুন, ইমাম বুখারী রাহ. সহীহের বিপরীতে যঈফ হাদীসের উপর আমল করাকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। কারণ এটাই সতর্কতার দাবি। যে মাযহাবে উরূ সতর হওয়ার কথা আছে সেই মাযহাব অনুসারেও যেন গুনাহগার হওয়ার আশংকা না থাকে।

অতএব বুঝা গেল যে, অগ্রগণ্যতার একটিমাত্র কারণকে সর্বক্ষেত্রে প্রাধান্যের ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা এবং সনদের বিচারে যেটি শ্রেষ্ঠ সেটিকেই চূড়ান্তভাবে অগ্রগণ্য বলে মনে করা আর তা-ও বিনা তাহকীকে, শুধু এ কারণে যে, বিপরীত হাদীসটি বুখারী মুসলিমে নেই- এই চিন্তা মোটেও ঠিক নয়। সুতরাং অগ্রগণ্যতার অন্যান্য দিক ও বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া জরুরি। যেমনটা আমরা স্বয়ং ইমাম বুখারী রাহ.-এর কাছ থেকে দেখলাম।

সুতরাং মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবরা যে জোড় বাক্যে ইকামতদান সংক্রান্ত প্রতিটি হাদীস সম্পর্কে বলেছেন, এটি মুসলিমের হাদীসের বিপরীত বিধায় শায ও প্রত্যাখ্যাত তা কতটুকু যুক্তিযুক্ত আপনিই বিচার করুন।

কথা আরও আছে। তা হল, যদি এমন দুই হাদীসের মাঝে বাহ্যত বিরোধ পরিদৃষ্ট হয় যে দুই হাদীসের উভয়টি বুখারী কিংবা উভয়টিই মুসলিমে আছে তাহলে মুযাফফর বিন মুহসিন সাহেবরা কী করবেন? যে কোনো একটিকে শায বলবেন?

আরও জানুন

ফজরের আজান শুরু হলেও পাত্রে থাকা খানা খাওয়া যাবে?

প্রশ্ন এক বক্তা তার বক্তৃতায় বলছে যে, “আজান হচ্ছে, খাদ্য রেডি হচ্ছে, খান। আজান চলছে, …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস