মুসলিমরা প্রযুক্তিতে পিছিয়ে। কেন? কারন তারা নাকি শিক্ষা দীক্ষায় অনেক পিছিয়ে। কিন্তু সাম্প্রতিক ইতিহাস দিচ্ছে ভিন্ন তথ্য। আসলে জিহাদ থেকে বিমুখ হওয়ার কারণেই মুসলমানরা প্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়েছে।
.
বর্তমান যেসব প্রযুক্তি আমাদের হাতের নাগালে তার ৯০% ভাগই আবিষ্কৃত হয়েছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, স্নায়ু যুদ্ধ ও সাম্প্রতিক মার্কিন আগ্রাসনের প্রাক্কালে।
.
যুদ্ধকালীন সময়ে উদ্ভাবিত জিনিসপত্র ও প্রযুক্তির তালিকা দেখলে আপনার চোখ কপালে উঠবে। কি নেই সেখানে? ন্যাপকিন থেকে শুরু করে টি-ব্যাগ কিংবা ইন্টার্নেট থেকে শুরু করে এক্স-রে। সবই যুদ্ধকালীন সময়ের চাহিদা মেটাতে আবিষ্কৃত হয়েছে।
………………………………..
‘ডে-লাইট সেভিং’ সিস্টেম প্রথম কার্যকর হয় ১ম বিশ্বযুদ্ধে। যুদ্ধের সৈনিকদের চা ও খাবারের ব্যবস্থা করতে জার্মানী প্রথম টি-ব্যাগ ও টিনজাত খাবার আবিষ্কার করে। হাতঘড়ির আবিষ্কার হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যুদ্ধরত সেনাদের সময়ের হিসাব রাখার সুবিধার্থে। সর্বপ্রথম প্যান্টের জিপার উদ্ভাবিত হয় আমেরিকান সৈন্যদের জন্যে। বন্দুকের জন্য আরো মজবুত কাঠামো তৈরির চেষ্টা করতে গিয়ে ব্রিটিশ সেনারা ‘স্টেইনলেস স্টীল’ আবিষ্কার করে ফেলে।
.
ড্রোন। এই মাত্র কদিন হলো আমরা ড্রোনের কথা শুনছি, ১৯১৮ সালের ৬ মার্চ সর্বপ্রথম পাইলটবিহীন বিমান দিয়ে বোমা ফেলার চেষ্টা করা হয়। আমেরিকা কর্তৃক এয়ার-ট্রাফিক সিস্টেম আবিষ্কৃত হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়। বহনযোগ্য এক্স-রে মেশিন আবিষ্কৃত হয় ফ্রেঞ্চ আর্মির বদৌলতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধে।
………………………………
রাডার আবিষ্কার করতে গিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কাকতালিয়ভাবে মাইক্রোওয়েভ আবিষ্কৃত হয়। পরে রাডারও আবিষ্কার করা হয়। আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে নাসা কর্তৃক আবিষ্কৃত হয় ডিজিটাল ক্যামেরা। আর সেই ক্যামেরায় ধারন করা ছবি পাঠানোর জন্যে উদ্ভাবিত হয়ে পড়ে ইন্টারনেট।
.
খেলনা, চকোলেট, সস, গাম, টেপ, নাইলনের পোশাক সবই যুদ্ধের অবদান। ট্রেন, ট্রাক, ট্যাঙ্ক, জাহাজ, বিমান এগুলোও যুদ্ধের কারণে অস্তিত্বলাভ করেছে। পেনিসিলিন, কেমিক্যাল, রিমোট, টর্চলাইট ইত্যাদি এসবও যুদ্ধের কল্যাণে পেয়েছে মানবসমাজ।
.
এটিএম বুথ, ক্রেডিট কার্ড, ট্রান্সিস্টর, স্যাটেলাইট, মহাকাশ অভিযান, ল্যাজার, কম্পিউটার, সেলফোন, এগুলো সব স্নায়ুযুদ্ধের ফলাফল।
………………………………
২০০২ এর আফগান যুদ্ধের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনেক মার্কিন সেনা মারা যায়। এই রক্তক্ষরণ দ্রূত বন্ধ করার জন্য আবিষ্কৃত হয় “টার্নিকুয়েট” নামের ঔষধ। তৎক্ষণাৎ এনার্জি পেতে এই আফগান আগ্রাসনের সময়েই “ফিব্রিন ব্যান্ডেজ” আবিষ্কৃত হয় যা একইসাথে ঘা সারায় আবার এনার্জি দেয়। তাৎক্ষণিক কাটা-ছেড়া জোড়া লাগানোর প্রক্রিয়া নিয়ে কাজ করতে গিয়েই এই সময়ে মার্কিন চিকিৎসকরা “চিটোসান ব্যান্ডেজ”ও উদ্ভাবন করে ফেলে। ৩৪ থেকে ৪৩ ডিগ্রি তাপমাত্রায় রক্ত সংরক্ষনের মত পাত্রও আবিষ্কৃত হয় এই আফগানে এই আমেরিকান জঙ্গীদের মাধ্যমে যার নাম “গোল্ডেন ব্লাড কন্টেইনার”।
.
ইরাক যুদ্ধের সময়ে রবোটিক মেডিক্যালাইজ প্রথমবারের মত ব্যবহিত হয়। গণহারে মার্কিন সেনাদের আহত হওয়ার কারণে পর্যাপ্ত চিকিতসক দিয়ে সামলানো যাচ্ছিলনা। আবার “ট্রমা” আক্রান্ত সেনার সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছিল, পরে “হাইপারবেরিক অক্সিজেন থেরাপী” আবিষ্কৃত হয় আক্রান্তদের ট্রিটমেন্ট দিতে।
…………………………
এটা সবসময়ের জাগতিক নীতি। যুদ্ধই চাহিদা সৃষ্টি করে। আর চাহিদা আবিষ্কারের প্রসূতি। “মেকানিকাল ঘড়ি” আবিষ্কার হয় উসমানী খেলাফতের যুদ্ধগুলোতে। “স্টীম পাওয়ার”, অবজারভেটরী (পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র), সেক্সট্যান্ট (তারকাদের দূরত্ব মাপার যন্ত্র), মানচিত্র সহ নানান যুদ্ধাস্ত্র উদ্ভাবিত হয়েছিল উসমানী খেলাফতের বিভিন্ন যুদ্ধের প্রাক্কালে।
.
আহযাবের যুদ্ধ দিয়েছিল “পরিখা খনন” পদ্ধতি। তায়েফ যুদ্ধ দিয়েছিল “মিনজানিক” কৌশল। জিহাদের কারণেই “ব্ল্যাকলাইট” সিস্টেম আবিষ্কার করে মুসলিমরা।
……………………………
কি বুঝলেন? প্রযুক্তিতে মুসলমানরা ততদিন পিছিয়ে থাকবে যতদিন জিহাদ বিমুখ হয়ে ফেসবুকে ডুবে থাকবে। আর আমেরিকা এগিয়ে যাবে, ওরা কখনোই যুদ্ধ থামাবেনা। ওরা জেনে গেছে যুদ্ধ কত কিছুর পসরা মেলে ধরে।