প্রচ্ছদ / আকিদা-বিশ্বাস / সালাফী আলেমদের আকিদাগত ভ্রান্তি ও মতবিরোধ [১ম পর্ব]

সালাফী আলেমদের আকিদাগত ভ্রান্তি ও মতবিরোধ [১ম পর্ব]

মুফতী ইজহারুল ইসলাম কাউসারী

ভূমিকা:

ইসলামের মূল হলো একজন মানুষের বিশ্বাস। আল্লাহ সম্পর্কে বিশ্বাস। আল্রাহর নবী-রাসূল, ফেরেশতা ও পরকাল সম্পর্কে বিশ্বাস। এ বিশ্বাসকে কেন্দ্র করেই অন্যান্য বিধি-বিধান আরোপিত হয়। বিশ্বাসের বিশুদ্ধতা, আকিদার পরিশুদ্ধি একজন মানুষকে খাটি মুসলমান বানাতে পারে। মৌখিক স্বীকারোক্তি বা আনুষ্ঠানিক বিধি-বিধান পালনের পূর্বশর্ত আত্মিক বিশ্বাস। একজন মানুষ তখনই কেবল খাটি মুসলমান হিসেবে পরিগণিত হবে, যখন সে আমল ও স্বীকারোক্তির পাশাপাশি পরিশুদ্ধ বিশ্বাস লালন করবে। অন্তরের গহীন থেকে অন্ধরাচ্ছন্ন বিশ্বাসকে ইমানের আলোয় আলোকিত করবে। সহীহ আকিদার বৃক্ষটি যখন তার অন্তরে শাখা-প্রশাখা বিস্তার করতে থাকবে, তখনই কেবল সে সিরাতাল মুস্তাকীমের পথে অগ্রসর হতে থাকবে। তার অন্তরে প্রোথিত বিশ্বাসের বৃক্ষটির মূল হবে হবে অনড়, শাখা-প্রশাখা হবে গগনচুম্বী। পবিত্র কুরআনের ভাষ্য অনুযায়ী এমন বস্তুনিষ্ঠ অবিচল বিশ্বাসকেই কালিমায়ে তৈয়্যেবার বিশ্বাস বলা হয়েছে। এটিই মূলত: সহীহ আকিদার মূলমন্ত্র। অন্তরের এমন পরিশুদ্ধ ও দৃঢ় বিশ্বাস আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি বিশেষ নেয়ামত। এই নেয়ামত কেবল রাসূল স. এর সুন্নাহ, সাহাবায়ে কেরামের অনুসৃত পথের পথিকদেরকেই দান করা হয়। অর্থাৎ আহলুস সুন্নাহ বা সুন্নতের অনুসারী এবং আহলুল জামায়া বা সাহাবায়ে কেরামের জামাতের সাথে চলার ব্যাপারে যারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তারাই কেবল এই নেয়ামতের ছায়াতলে আশ্রয় পেয়ে থাকেন। আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের বাইরে যতো মত, দল, মতবাদ বা মতাদর্শ রয়েছে, তারা সহীহ আকিদার নেয়ামত থেকে বন্চিত। সহীহ আকিদা থেকে বন্চিত হওয়ার কারণেই তারা বিপথগামী হয়েছে। বাহাত্তর দলের অন্তুর্ভূক্ত হয়েছে। কেয়ামত পর্যন্ত সহীহ ও বাতিল আকিদার এই ধারা অব্যাহত থাকবে। প্রত্যেক যুগেই এমন কিছু আকিদার অনুসারী থাকবে, যারা সহীহ আকিদার অনুসারী আবার কিছু লোক থাকবে বাতিল ও ভ্রান্ত পথের অনুসারী। এটা চিরাচরিত নিয়ম।

বর্তমানে বাতিল আকিদার অন্যতম একটি ফেরকা হলো তথাকথিত সালাফী আকিদার অনুসারীগণ। এরা সালাফ শব্দ ব্যবহার করে মানুষের মাঝে এই ধারণা প্রচার করে থাকে যে, তারা সালাফে সালেহীনের অনুসারী। আমি তাদের সালাফী পরিচয়ে কোন দোষ দেখি না। তবে তারা সালাফে সালেহীনের অনুসারী নয়। পূর্ববর্তী ভ্রান্ত দল কাররামিয়াদের অনুসারী। তারা যেহেতু পুর্ববতী ভ্রান্ত দল কাররামিয়াদের অনুসারী একারণে তাদেরকে সালাফী বলেই উল্লেখ করবো। তবে মনে রাখতে হবে, এদের পূর্ববতী অনুসরণীয়-অনুকরণীয় দল হলো ভ্রান্ত ফেরকা কাররামিয়া।

বর্তমানের সালাফীরা আশ্চর্যজনকভাবে আকিদার পরিশুদ্ধির কথা বলে থাকে। সহীহ আকিদার ব্যবহার তাদের মাঝে একটু বেশিই দেখা যায়। এধরনের অপপ্রচার তাদের বাতিল আকিদাকে নতুন মোড়কে উপস্থাপনের অপচেষ্টা বৈ কিছুই নয়। বাতিল আকিদাকে যে লেবেল, বিশেষণ, নাম বা পরিচিতি দেয়া হোক না কেন, বাতিল বাতিলই থাকে। কাররামিয়ারা যদি নিজেদেরকে মুহাদ্দিস হিসেবে, ফকীহ হিসেবে, আসারী হিসেবে বা সালাফী হিসেবে প্রকাশ করে, তাহলে এসব লেবেল লাগানোর কারণে তাদের আকিদা কখনো বিশুদ্ধ হয়ে যাবে না। হাদীস অস্বীকারকারীরা যেমন বাতিল হওয়া সত্ত্বেও নিজেদেরকে আহলে কুরআন (কুরআনের অনুসারী) প্রকাশ করে থাকে, আহলে হাদীসরা যেমন ফিকাহ অস্বীকার করে নিজেদেরকে হাদীসের অনুসারী প্রকাশ করে থাকে, ঠিক তেমনি বাতিল আকিদার অনুসারী হয়েও তথাকথিত সালাফীরা নিজেদেরকে সহীহ আকিদার দাবী করে। অথচ বাস্তবে তারা সহীহ আকিদা থেকে যোজন যোজন দূরে। যেমন আহলে কুরআন সম্প্রদায় কুরআনের অনুসরণ থেকে বন্চিত, আহলে হাদীস সম্প্রদায় যেমন হাদীস অনুসরণের দাবী করেও হাদীস অস্বীকারকারীদের ভূমিকায় অবতীর্ণ ঠিক তেমনি সালাফে সালেহীনের আকিদার অনুসরণে দাবীদার সালাফী সম্প্রদায় বিশুদ্ধ আকিদা থেকে দূরে অবস্থিত।

আমাদের এই বক্তব্য কোন অত্যুক্তি নয়। কারও বিষোদগারের উদ্দেশ্যে অতিরণ্জনও নয়। বরং বাস্তবতা এর চেয়ে মারাত্মক ও ভয়ঙ্কর। এই বাস্তবতাকে মেনে নেয়ার প্রস্তুতি হিসেবেই বিষয়গুলোর অবতারণা। বিজ্ঞ পাঠক, মূল আলোচনায় ইনশাআল্লাহ এই বাস্তবতাই দেখতে পাবেন।

কাররামিয়াদের আকিদাগুলোকেই মূলত: নতুন মোড়কে সালাফী আকিদা নামে প্রচার করা হচ্ছে। লেবেল ও মোড়ক নতুন হলেও জিনিসে কোন পবিবর্তন হয়নি। বরং পুরোটাই কাররামিয়া আকিদার নতুন সংস্করণ। কাররামিয়া আকিদার মূল উৎস হলো ইসরাইলী রেয়াত তথা ইহুদী আকিদা। কাররামিয়া আকিদার মূল ভিত্তি হলো ইহুদীদের বিকৃত আকিদা। এভাবে কাররামিয়াদের সূত্র ধরে ইসলামে ইহুদী আকিদার চর্চা হয়ে আসছে। বর্তমানে কাররামিয়া ও ইহুদীদের আকিদাগুলোই বিভিন্ন নামে সাধারণ মানুষের মাঝে প্রচার করা হচ্ছে। অথচ এসব আকিদার সাথে ইসলামী আকিদার দূরতম কোন সম্পর্ক নেই। সালাফী আকিদা, কাররামিয়া আকিদা বা আহলে হাদীস আকিদা যাই বলেন না কেন, এগুলোর মূল ভিত্তি হলো, ইহুদীদের থেকে বর্ণিত অসংখ্য জাল হাদীস। একারণে সালাফীদের উল্লেখযোগ্য আকিদার কিতাবগুলো অধিকাংশ আকিদার কিতাবে জাল বর্ণনার ছড়াছড়ি। শতকরা সত্তর থেকে আশি ভাগ জাল ও দুর্বল বর্ণনা এসব কিতাবের মূল উপজীব্য। এসব জাল বর্ণনা কোন ইসলমাী আকিদার প্রতিনিধিত্ব করে না, বরং অধিকাংশ বর্ণনাই নেয়া হয়েছে ইহুদীদের কাছ থেকে। এভাবে কাররামিয়া ও সালাফী আকিদা অনেক ক্ষেত্রে ইহুদীদের আকিদার সাথে মিলে গেছে। সালাফীদের মৌলিক আকিদার কিতাবে জাল বর্ণনার পরিমাণ ও উৎস সম্পর্কে ইনশাআল্লাহ পরবর্তীতে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।

সালাফী আলেমদের মাঝে মৌলিক আকিদার বিষয়ে স্ববিরোধীতা তাদের আকিদাগত বিচ্যুতি প্রমাণে যথেষ্ট। যেসব আকিদা স্বয়ং সালাফী আলেমদের দৃষ্টিতেই পরিত্যাজ্য, ভ্রষ্টতা সেসব আকিদা কীভাবে ইসলামী আকিদা হয়? সেগুলো কেন সহীহ আকিদার নামে ঘটা করে মুসলিম সমাজে প্রচার করা হয়? অথচ স্বয়ং সালাফী আলেমরাই এসব আকিদাকে ভ্রান্ত বলে থাকে। সালাফী আলেমদের এসব স্ববিরোধীতা থেকে দু’টো বিষয় স্পষ্ট হবে, ১. সালাফী আকিদার অনুসারী অনেকেই ভ্রান্ত আকিদার মাঝে নিপতিত আছে। ভ্রান্ত আকিদায় নিপতিত এসব লোকের মাঝে আলেম ও সাধারণ মানুষ উভয়শ্রেণিই রয়েছে। ২. বর্তমানের সালাফী আকিদা মূলত: বিশুদ্ধ ইসলামী আকিদার প্রতিনিধিত্ব করে না। বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভ্রষ্টতা ও গোমরাহীর কারণ।

সেই সালাফী আকিদার মৌলিক নীতিমালার দুর্বলতা, অসারতাও পাঠকের সামনে স্পষ্ট হবে। এদের প্রত্যেকটা মূলনীতিই যে ভঙ্গুর, স্ববিরোধীতায় ভরা, সে বিষয়েও যথেষ্ট ধারণা হবে। আমাদের এই পর্বগুলোতে শুধু তাদের স্ববিরোধী বক্তব্য নিয়ে আলোচনা হবে। এগুলোর খন্ডন বা মূলনীতির অসারতা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে না। এ বিষয়ে ইনশাআল্লাহ আকিদা বিষয়ক বইয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

আকিদা বিষয়ে দীর্ঘ তিন চার বছর পড়া-শোনা করলেও এসব বিষয়ে অনেক দেরিতে কলম ধরছি। এর মূল কারণ, বিষয়বস্তুর স্পর্শকাতরতা ও সালাফী আলেমদের প্রতি সহানুভূতি। আলেমদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন মূলত: দেওবন্দী আলেমদের একটি বিশেষ শান বা বৈশিষ্ট্য। তারা আলেমদের ভালো দিকগুলো আলোচনার চেষ্টা করেন। খারাপ দিকগুলো এড়িয়ে চলার শিক্ষা দেন। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো ইবনে তাইমিয়া রহ.। ইবনে তাইমিয়া রহ. এর অসংখ্য বাতিল আকিদা থাকা সত্ত্বেও দেওবন্দী আলেমগণ তার ভালো দিকগুলো সম্মানের সাথে আলোচনা করে থাকেন। যেমন, সাইয্যেদ আবুল হাসান আলী নদভী রহ. তার “সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস” বইয়ে ইবনে তাইমিয়া রহ. এর প্রশংসনীয় অবস্থান তুলে ধরেছেন। তবে প্রয়োজনের ক্ষেত্রে দেওবন্দী আলেমগণ ইবনে তাইমিযা রহ. বাতিল আকিদাগুলো বিশ্লেষণ করেছেন। যেমন, বিখ্যাত দেওবন্দী আলেম আবু বকর গাজীপুরী তার ‘ কিয়া ইবনে তাইমিয়া উলামায়ে আহলে সুন্নত মে হে” কিতাবে ইবনে তাইমিয়ার বাতিল আকিদা বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। এছাড়াও মুফতী তাকী উসমানী দা.বা. ফতোয়ায়ে উসমানীতে ইবনে তাইমিয়া রহ. এর বাতিল আকিদা খন্ডন করেছেন। উলামায়ে দেওবন্দের এই কর্মপন্থায় কারও ধোকায় নিপতিত হওয়র সুযোগ নেই। বাতিল আকিদার কোন আলেমের ভালো দিক আলোচনার অর্থ এই নয় যে, দেওবন্দী আলেমগণ তাদের বাতিল আকিদা সমর্থন করে কিংবা তাদের সেসব বাতিল আকিদা নিজেরাও পোষণ করে। যারা উলামায়ে দেওবন্দের মানহাজ সম্পর্কে সচেতন নয়, তারাই কেবল এজাতীয় ক্ষেত্রে ধোকায় পড়তে পারে। নতুবা উলামায়ে দেওবন্দ কখনও হক ও বাতিলের মিশ্রণের পক্ষপাতী নয়| তারা কখনও ঐক্যের কথা বলে বাতিল আকিদা গ্রহণের দাওয়াত দেয় না। হক বিষয়কে হক হিসেবে প্রতিষ্ঠা এবং বাতিলকে বাতিল হিসেবে চিহৃিত করা ও তাদের থেকে সতর্ক করাই হলো দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার মূল মিশন।

বর্তমানে পরিস্থিতি এমন হয়েছে যে, বাতিলের প্রচারে মানুষকে বাতিলকে হক মনে করতে শুরু করেছে আর হককে বাতিল মনে করে করছে। হকপন্থীরা যখন চুপ থাকে, বাতিল মনে করে তারাই সত্যের উপর রয়েছে। এটি একটি ধ্রুব সত্য। বর্তমানে আমরা এ বাস্তবতারই মুখোমুখি হচ্ছি প্রতিনিয়ত। পরিশেষে সবার কাছে নিবেদন, সত্য গ্রহণের মানসিকতা নিয়ে, হকের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সহীহ আকিদার পথে পা বাড়াতে হবে। কারও প্রতি বিশেষ টান বা দুর্বলতা সত্য গ্রহণে যেন অন্তরায় না হয়। নিজেদের আকিদা বিশুদ্ধ করাটা প্রত্যেকেরই দায়িত্ব। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষকে তাদের আকিদা বিষয়ে সচেতন হওযা জরুরি। সেই সাথে উলামায়ে কেরামের কর্তব্য হলো, হক বিষয়কে মানুষের সামনে স্পষ্টভাবে তুলে ধরা এবং বাতিলের বিষয়ে সতর্ক করতে থাকে। তুলনামূলক আলোচনার ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন, আলেমদের ব্যাপারে আমরা ব্যক্তিগত আক্রোশের বহি:প্রকাশ না ঘটায়। প্রত্যেকের যথাযথ মর্যাদা ঠিক রেখে সত্য গ্রহণে প্রয়াসী হতে হবে। তবে বাতিলকে অবশ্যই বাতিল বলতে হবে। এতে বাতিল যদি নিজেদের মর্যাদার ব্যাপারে প্রশ্ন তোলে, তবে তাদেরকে সত্য গ্রহণের দাওয়াত দিতে হবে। হক ও বাতিলের মাঝে মিশ্রণ কখনও কাম্য নয়। ইসলামী ঐক্যের নামে হক ও বাতিলের মিশ্রণের দাওয়াতও বাস্তবতা বিরোধী। সুতরাং ঐক্যের ধুয়ো তুলে বা অন্য কোন কারণ দেখিয়ে বাতিলের বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা থেকে বিমুখ করার প্রয়াসটিও সঠিক নয়। এটিও প্রান্তিকতার দোষে দুষ্ট। বাতিলের প্রতি অন্যায় ভালোবাসা আর আবেগ থেকেই এধরনের ঐক্যের অজুহাত আসে। ইসলামী ঐক্য যদি আসলেই কাম্য হয়, তবে তা হতে হবে দ্বিপক্ষীয়। এক পক্ষ তাদের বাতিল মতাদর্শ প্রচার করবে, আর অন্যদেরকে ঐক্যের ধুয়ো তুলে সত্য প্রকাশ থেকে দমিয়ে রাখা হবে, এটা কখনও কাম্য নয়। এই পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ থেকে আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হেফাজত করুন। সেই সাথে আল্লাহ পাক সবাইকে সহীহ আকিদা তথা আহলুস সুন্নাহ ওয়াল জামাতের আকিদা গ্রহণের তৌফিক দান করুন।
আমীন।

২য় পর্ব

0Shares

আরও জানুন

নফল আদায়কারীর পিছনে কি ফরজ আদায়কারীর ইক্তিদা সহীহ হয়?

প্রশ্ন হযরত মুয়াজ বিন জাবাল রাঃ নাকি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ইশার নামায পড়তেন। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *