প্রচ্ছদ / আকিদা-বিশ্বাস / সুরেশ্বরী পীরের মাজার ও উরসে গমণ ও তাদের মুরীদ হওয়া হারাম

সুরেশ্বরী পীরের মাজার ও উরসে গমণ ও তাদের মুরীদ হওয়া হারাম

প্রশ্ন

সুরেশ্বরী পীরের আকিদা ও ভান্ত মতবাদ তাদের কিতাবাদীর মাধ্যমে জানতে চাই।

কানিজ ফাতিমা, বাংলাদেশ।

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

কিতাবাদী থেকে জানার চেয়ে বাস্তব থেকে জানাই। আমি নিজে শরীয়তপুরে অবস্থিত সুরেশ্বর গিয়েছি। সেখান গিয়ে যা দেখেছি তাতে কোন বই পড়ার প্রয়োজন অনুভব করছি না। সরাসরি বলছিঃ সুরেশ্বরী পীরদের কাছে মুরীদ হওয়া সম্পূর্ণ হারাম। সুরেশ্বরী পীরদের আকিদা বিশ্বাসীদের সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক করা থেকেও বিরত থাকা উচিত।

বেশ কিছু কুফরী ও শিরকী কর্ম উক্ত পীরের মাজারে সংঘটিত হয়ে থাকে। যা বর্তমান গদ্দিনশীন পীরদের নেতৃত্বেই হয়ে থাকে।

যেমন-

নারী পুরুষের অবাধ দেখা সাক্ষাৎ। পীর নিজেও দেখা করে। অন্যরাও অবাধে দরবারে নারী পুরুষ একসাথে দেখা করে।

পীরের পায়ে সরাসরি সেজদা করে থাকে।

সেখানে অবস্থিত সুরেশ্বরের আগের পীরদের কবরে সরাসরি সেজদা করা হয়। যা উপস্থিত পীর ও তার নিযুক্ত মাজারের খাদিমদের সম্মতিতেই হয়ে থাকে।

মজলিশ করে শিল্পী দিয়ে গান বাদ্য করা হয়।

কবরকে উপলক্ষ্য করে উরসের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

কবরে বাতি প্রজ্বলন।

মাজারে মান্নত করা।

 

মাত্র কয়েকটি বললাম। যার একটিই কোন এক ব্যক্তি গোমরাহ হবার জন্য যথেষ্ট। কবরে বা পীরকে সেজদা করার দ্বারা ব্যক্তি পরিস্কার মুশরিকে পরিণত হয়। তাই এসব পীরদের মাজারে গমণকারী ও পীরকে সেজদাকারী ব্যক্তিদের নতুন করে কালিমা পড়ে নিজের ঈমানকে দোহরানো উচিত।

উপরোক্ত প্রতিটি কাজই কুরআন ও হাদীস বিরোধী কুফরী ও শিরকী কাজ। যার অসংখ্য প্রমাণ কুরআন ও হাদীসে বিদ্যমান। আমরা শুধু বুজানোর জন্য প্রতিটি কুফরী কাজের সংক্ষেপ দলীল উপস্থাপন করে দিচ্ছি।

নারী পুরুষের একত্র সাক্ষাৎ হারাম

مِنَ النِّسَاءِ إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ وَقُلْنَ قَوْلًا مَعْرُوفًا (32) وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

হে নবীর স্ত্রীগণ! তোমরা অন্য নারীদের মত নও [ইহুদী খৃষ্টান)। তোমরা যদি আল্লাহকে ভয় পাও তবে আকর্ষণধর্মী ভঙ্গিতে কথা বলনা, যাতে যাদের মাঝে যৌনলিপ্সা আছে তারা তোমাদের প্রতি আকৃষ্ট হয়। বরং তোমরা স্বাভাবিক কথা বল। এবং তোমরা অবস্থান কর স্বীয় বসবাসের গৃহে, জাহেলী যুগের মেয়েদের মত নিজেদের প্রকাশ করো না। {সূরা আহযাব-৩২}

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর স্ত্রীগণ হলেন সকল মুমিনের মা। অথচ তাঁদের সাথেই লেনদেন বা কথা-বার্তা বলতে হলে পর্দার আড়াল থেকে করতে বলা হয়েছে। তাহলে অন্যান্য সাধারণ বেগানা নারীদের ক্ষেত্রে হুকুমটি কত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত তা তো সহজেই অনুমেয়।

فَالْعَيْنَانِ زِنَاهُمَا النَّظَرُ، وَالْأُذُنَانِ زِنَاهُمَا الِاسْتِمَاعُ، وَاللِّسَانُ زِنَاهُ الْكَلَامُ، وَالْيَدُ زِنَاهَا الْبَطْشُ، وَالرِّجْلُ زِنَاهَا الْخُطَا، وَالْقَلْبُ يَهْوَى وَيَتَمَنَّى، وَيُصَدِّقُ ذَلِكَ الْفَرْجُ وَيُكَذِّبُهُ

রাসূল সাঃ ইরশাদ করেন, চোখের জিনা হল [হারাম] দৃষ্টিপাত। কর্ণদ্বয়ের জিনা হল, [গায়রে মাহরামের যৌন উদ্দীপক] কথাবার্তা মনযোগ দিয়ে শোনা। জিহবার জিনা হল, [গায়রে মাহরামের সাথে সুড়সুড়িমূলক] কথোপকথন। হাতের জিনা হল, [গায়রে মাহরামকে] ধরা বা স্পর্শকরণ। পায়ের জিনা হল, [খারাপ উদ্দেশ্যে] চলা। অন্তর চায় এবং কামনা করে আর লজ্জাস্থান তাকে বাস্তবে রূপ দেয় [যদি জিনা করে] এবং মিথ্যা পরিণত করে [যদি অন্তরের চাওয়া অনুপাতে জিনা না করে]। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২৬৫৭, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৯৩২}

গান বাদ্য হারাম

বাজনাদার নুপুর ও ঘুঙুরের আওয়াজও সাহাবায়ে কেরাম বরদাশত করতেন না। তাহলে গান ও বাদ্যযন্ত্রের প্রশ্নই কি অবান্তর নয়? নাসাঈ ও সুনানে আবু দাউদে বর্ণিত আছে, একদিন হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট বাজনাদার নুপুর পরে কোনো বালিকা আসলে আয়েশা রা. বললেন, খবরদার, তা কেটে না ফেলা পর্যন্ত আমার ঘরে প্রবেশ করবে না। অতঃপর তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ঘরে ঘণ্টি থাকে সেই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না।-সুনানে আবু দাউদ হাদীস : ৪২৩১; সুনানে নাসাঈ হাদীস : ৫২৩৭

সহীহ মুসলিমে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ঘণ্টি, বাজা, ঘুঙুর হল শয়তানের বাদ্যযন্ত্র।-সহীহ মুসলিম হাদীস : ২১১৪ মৃদু আওয়াজের ঘণ্টি-ঘুঙুরের যদি এই অবস্থা হয় তাহলে আধুনিক সুরেলা বাদ্যযন্ত্রের বিধান কী হবে তা খুব সহজেই বুঝা যায়।

গাইরুল্লাহকে সেজদা করা হারাম

عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ، قَالَ: إِنَّهُ أَتَى الشَّامَ، فَرَأَى النَّصَارَى. فَذَكَرَ مَعْنَاهُ إِلَّا أَنَّهُ قَالَ: فَقُلْتُ: لِأَيِّ شَيْءٍ تَصْنَعُونَ هَذَا؟ قَالُوا: هَذَا كَانَ تَحِيَّةَ الْأَنْبِيَاءِ قَبْلَنَا، فَقُلْتُ: نَحْنُ أَحَقُّ أَنْ نَصْنَعَ هَذَا بِنَبِيِّنَا. فَقَالَ: نَبِيُّ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّهُمْ كَذَبُوا عَلَى أَنْبِيَائِهِمْ كَمَا حَرَّفُوا (2) كِتَابَهُمْ، إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ أَبْدَلَنَا خَيْرًا مِنْ ذَلِكَ السَّلَامَ تَحِيَّةَ أَهْلِ الْجَنَّةِ “

হযরত মুআজ বিন জাবাল রাঃ থেতে বর্ণিত। তিনি সিরিয়া গেলে সেখানকার খৃষ্টান অধিবাসী কর্তৃক পোপ ও পাদ্রীদেরকে সেজদা করতে দেখলেন। হযরত মুআজ রাঃ বলেন, আমি তাদেরকে বললামঃ তোমরা কেন এমন কর? তারা উত্তরে বলল, এটাতো আমাদের পূর্ববর্তী নবীদের অভিবাদন [ভক্তি ও সম্মান প্রকাশের মাধ্যম] ছিল। আমি [মুআজ] বললাম, তাহলে আমরা স্বীয় নবীকে এর প্রকারের ভক্তি প্রকাশের অধিক অধিকার রাখি। [সিরিয়া হতে প্রত্যাবর্তনের পর হযরত মুআজ রাঃ রাসূল সাঃ এর নিকট তাঁকে সেজদা করার অনুমতি চাইলে] তিনি ইরশাদ করেন, এরা [খৃষ্টানরা] স্বীয় নবীদের উপর মিথ্যারোপ করছে [যে তাদের অভিবাদন সেজদা ছিল।]। যেমন ওরা নিজেদের আসমানী কিতাবে বিকৃতি সাধন করেছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা তাদের মনগড়া অভিবাদনের চাইতে অতি উত্তম অভিবাদন সালাম আমাদের দান করেছেন। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৯৪০৪, আলমুজামুল কাবীর, হাদীস নং-৭২৯৪, মুস্তাদরাক আলাস সাহিহাইন, হাদীস নং-৭৩২৫}

دَّثَنِي جُنْدَبٌ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَبْلَ أَنْ يَمُوتَ بِخَمْسٍ، وَهُوَ يَقُولُ: ……أَلَا وَإِنَّ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ كَانُوا يَتَّخِذُونَ قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ وَصَالِحِيهِمْ مَسَاجِدَ، أَلَا فَلَا تَتَّخِذُوا الْقُبُورَ مَسَاجِدَ، إِنِّي أَنْهَاكُمْ عَنْ ذَلِكَ

হযরত জুনদুব রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ মৃত্যুর পূর্বে পাঁচটি বিষয় বলেছিলেন, [এর মাঝে]…… বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তী কত উম্মত স্বীয় নবী ও বুজুর্গদের কবরকে সেজদার স্থান বানিয়েছে। সাবধান! তোমরা কবরকে সেজদার স্থান বানিও না। আমি তোমাদের তা হতে বারণ করছি। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৩২}

عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَسَارٍ؛ أَنَّ [ص:241] رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ: «اللَّهُمَّ لاَ تَجْعَلْ قَبْرِي وَثَناً يُعْبَدُ. اشْتَدَّ غَضَبُ اللهِ عَلَى قَوْمٍ اتَّخَذُوا قُبُورَ أَنْبِيَائِهِمْ مَسَاجِدَ

হযরত আতা বিন ইয়াসার রাঃ থেকে বর্ণিত। নিশ্চয় রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, হে আল্লাহ! আমার কবরকে প্রতিমার ন্যায় ইবাদতের বস্তু বানিও না। আল্লাহর গজব সেসব লোকের উপর কঠোর আকার ধারণ করেছে, যারা তাদের নবীদের কবরকে সেজদার স্থল বানিয়েছে। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৫৭০, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৭৩৫৮}

কবর ঘিরে উরস করা হারাম

عن أبى هريرة قال قال رسول الله -صلى الله عليه وسلم- « لا تجعلوا بيوتكم قبورا ولا تجعلوا قبرى عيدا وصلوا على فإن صلاتكم تبلغنى حيث كنتم (سنن ابى داود-كتاب المناسك، باب زيارة القبور، رقم الحديث-2044

“তোমরা স্বীয় ঘরকে কবর বানিয়োনা। (অর্থাৎ কবরের ন্যায় ইবাদত-নামায, তেলাওয়াত ও যিকির ইত্যাদি বিহীন করনা।) এবং আমার কবরে উৎসব করোনা।(অর্থাৎ বার্ষিক, মাসিক বা সাপ্তাহিক কোন আসরের আয়োজন করনা। তবে হ্যাঁ আমার উপর দুরূদ পাঠ কর। নিশ্চয় তোমরা যেখানেই থাক না কেন তোমাদের দরূদ আমার নিকট পৌঁছে থাকে।(আল্লাহ তায়ালার ফেরেশতারা পৌঁছিয়ে দেন।)” (সুনানে আবু দাউদ: হাদিস নং-২০৪৪/৪০)

এখানে লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে- রাসূলে সাঃ নিজ রওযা মুবারকে উৎসব (উরস) পালন করতে বারণ করেছেন। তাহলে অন্য কে আর এমন আছে যার কবরে তা বৈধ হবে?

হাদিসের বিখ্যাত ব্যাখ্যাকার আল্লামা মুনাভী রহঃ এই হাদিসের ব্যাক্ষা করতে গিয়ে বলেন-

قال المناوي ويؤخذ منه أن اجتماع العامة في بعض أضرحة الأولياء في يوم أو شهر مخصوص من السنة ويقولون هذا يوم مولد الشيخ ويأكلون ويشربون وربما يرقصون فيه منهي عنه شرعا وعلى ولي الشرع ردعهم على ذلك وإنكاره عليهم وإبطاله (عون المعبود-كتاب المناسك باب زيارة القبور-6/23)

“এ হাদিস থেকে বুঝা যায় যে, সাধারণ মানুষ যারা বছরের কোন নির্দিষ্ট মাসে বা দিনে (উরসের নামে) ওলীদের মাযারে একত্রিত হয় এবং বলে-আজ পীর সাহেবের জন্ম বার্ষিকী (মৃত্যু বার্ষিকী), সেখানে তারা পানাহারেরও আয়োজন করে, আবার নাচ গানেরও ব্যবস্থা করে থাকে, এ সবগুলিই শরীয়ত পরিপন্থী ও গর্হিত কাজ। এ সব কাজ প্রশাসনের প্রতিরোধ করা জরুরী। (আউনুল মা’বুদ-৬/২৩)

মাজারে বাতি প্রজ্বলন ও কবরকে সেজদা করা হারাম

عن ابن عباس قال : لعن رسول الله صلى الله عليه و سلم زائرات القبور والمتخذين عليها المساجد والسرج (سنن الترمذى- أبواب الصلاة عن رسول الله صلى الله عليه و سلم ، باب ما جاء في كراهية أن يتخذ على القبر مسجدا-2/136)

“হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত যে, আল্লাহর নবী সাঃ অভিশম্পাত করেছেন (বেপর্দা) কবর যিয়ারতকারীনী মহিলাদের উপর, এবং সেসব লোকদের উপর যারা কবরকে মসজিদ বানায়(কবরকে সেজদা করে) এবং সেখানে বাতি প্রজ্জ্বলিত করে। (জামি তিরমীযী-২/১৩৬)

মাজারে মান্নত করা হারাম

আল্লাহ ছাড়া কারো নামে মান্নত বা কুরবানী করা যায়না। কারণ মান্নত ও কুরবানী হচ্ছে ইবাদত। আর ইবাদত আল্লাহ ছাড়া কারা জন্য করা জায়েজ নয়। মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

قُلْ إِنَّ صَلاَتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (162) لاَ شَرِيكَ لَهُ وَبِذَلِكَ أُمِرْتُ وَأَنَاْ أَوَّلُ الْمُسْلِمِينَ (163) (سورة الأنعام-162-163)

“আপনি বলুনঃ আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও আমার মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্যই। তাঁর কোন অংশিদার নেই। আমি তা-ই করতে আদিষ্ট হয়েছি এবং প্রথম আনুগত্যশীল। (সূরা আনআম-১৬২-১৬৩)

সূরা কাউসারে মহান রাব্বুর আলামীন বলেন- فَصَلِّ لِرَبِّكَ وَانْحَرْ (২)( অতএব আপনার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন এবং কুরবানী করুন। (সূরা কাউসার-২)

 

আশা করি পরিস্কার হয়ে গেছে মূলত সুরেশ্বরীসহ ভান্ডারী, ফরীদপুরী, দেওয়ানবাগীরা আসলে পীর নয়, মানুষের ঈমান ধ্বংসকারী শয়তান।

এদের সংশ্রব থেকে দূরে থাকা প্রতিটি মুমিন মুসলিমের জন্য আবশ্যক। এদের মাজারে উরসে গমণ, বা এদের মুরীদ হওয়া মানেই মহামূল্যবান ঈমানকে আস্তাকুরে নিক্ষিপ্ত করে দেয়া। তাই খুব সাবধান থাকতে হবে।

আল্লাহ তাআলা ভন্ড পীরদের ভন্ডামী থেকে এ দেশের সাধারণ মুসলমানদের দ্বীন ও ঈমানকে হিফাযত করুন। আমীন।

والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী

পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।

উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া কাসিমুল উলুম সালেহপুর, আমীনবাজার ঢাকা।

ইমেইল- [email protected]

0Shares

আরও জানুন

ইমামের সামনের সুতরা কি মাসবূক মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট?

প্রশ্ন ইমামের সুতরা মুসল্লিদের জন্য যথেষ্ট কি না? এবং ইমামের সুতরা মসবুক ব্যাক্তির জন্য যথেষ্ট …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *