প্রশ্ন
আস সালামু আলাইকুম,
আমাদের অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ে ৮-৯ জন হিন্দু মালিক শরীক হয়েছে(মোট ফ্ল্যাট ৫৬টা,৪০জনের বেশি মুসলমান মালিক)।ফ্ল্যাট এর জন্য যে টাকা পরিশোধ করা হয়েছে, তার মধ্যে থেকে কিছু অংশ common-space,নামাযের জায়গা ইত্যাদির জন্য গেছে,নিয়ম অনুসারে ফ্ল্যাট এর দামের সাথে ঐসব জায়গার মূল্যও যোগ হয়। অর্থাৎ নামাযের জায়গার জন্য মুসলমান এর সঙ্গে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক হিন্দু এর টাকাও শরীক হয়েছে।
যদিও “হিন্দুরা কোন আপত্তি করেনি,হয়ত এদের রোজগার হালাল(!!)” এই যুক্তিতে অনেকে বলতেছেন অসুবিধা নাই। কিন্তু আমার জানামতে, নামাযের জায়গায় কাফের-মুশরিকদের টাকা শামিল হলে ইবাদত হবেনা, অন্তত কোন মুসলিম দেশে।
প্রশ্নঃ এই অবস্থায় নামায-ঘরে নামায আদায় করলে তা হবে কিনা? আর না হলে এই অবস্থার সমাধানের উপায় কি?
270, Elephant Road,Dhaka
উত্তর
السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
যেহেতু উক্ত স্থানটি শরয়ী মসজিদ নয়। বরং কেবলি নামায পড়ার জন্য নির্ধারিত একটি ঘর। তাই এতে মসজিদের হুকুম আরোপ করা যাবে না।
আর মসজিদ ও নামায পড়ার স্থানের জন্য বিধর্মীদের থেকেও চাঁদাও নেয়া জায়েজ আছে কয়েকটি শর্তে। যেমন-
১- এরকম দান তাদের বিশ্বাস অনুপাতে পূণ্যের কাজ হতে হবে।
২- পরবর্তীতে অর্থ ফিরিয়ে নেয়ার জন্য চেষ্টা ফিকির করবে না এ নিশ্চয়তা থাকতে হবে।
৩- অর্থদানের পর মসজিদে নিজের কর্তৃত্ব স্থাপনের চেষ্টা না করার নিশ্চয়তা না করতে হবে।
৪- অর্থদানের পর মসজিদটি তার দানের টাকায় বলে মুসলমানদের ঠাট্টা-অপমান করার মানসিকতা না থাকতে হবে।
উপরোক্ত শর্ত পাওয়া গেলে বিধর্মীদের চাঁদা নেয়া স্থানে নামায পড়াতে কোন সমস্যা নেই।
যেহেতু উক্ত নামায ঘরের ক্ষেত্রে বিধর্মী ভাইয়েরা স্বতস্ফুর্তভাবেই টাকা প্রদান করেছে। সেই সাথে এতে তারা কোন প্রকার আধিপত্ব বিস্তার করার সম্ভাবনা নেই, [বা যদি সম্ভাবনা না থাকে] তাই এতে আপনাদের নামায পড়াতে কোন সমস্যা নেই।
তাই নামায ঘরে আদায় না করে উক্ত স্থানে এসে জামাতে আদায় করাই উচিত।
وَجُمْلَةُ الْكَلَامِ فِي وَصَايَا أَهْلِ الذِّمَّةِ أَنَّهَا لَا تَخْلُو إمَّا إنْ كَانَ الْمُوصَى بِهِ أَمْرًا، هُوَ قُرْبَةٌ عِنْدَنَا وَعِنْدَهُمْ، أَوْ كَانَ أَمْرًا هُوَ قُرْبَةٌ عِنْدَنَا لَا عِنْدَهُمْ وَأَمَّا إنْ كَانَ أَمْرًا هُوَ قُرْبَةٌ عِنْدَهُمْ لَا عِنْدَنَا.
فَإِنْ كَانَ الْمُوصَى بِهِ شَيْئًا هُوَ قُرْبَةٌ عِنْدَنَا وَعِنْدَهُمْ بِإِنْ أَوْصَى بِثُلُثِ مَالِهِ أَنْ يَتَصَدَّقَ بِهِ عَلَى فُقَرَاءِ الْمُسْلِمِينَ أَوْ عَلَى فُقَرَاءِ أَهْلِ الذِّمَّةِ، أَوْ بِعِتْقِ الرِّقَابِ، أَوْ بِعِمَارَةِ الْمَسْجِدِ الْأَقْصَى وَنَحْوِ ذَلِكَ جَازَ فِي قَوْلِهِمْ جَمِيعًا؛ لِأَنَّ هَذَا مِمَّا يَتَقَرَّبُ بِهِ الْمُسْلِمُونَ وَأَهْلُ الذِّمَّةِ. (بدائع الصنائع، مكتبة زكريا- كتاب الوصايا، وصايا اهل الذمة-6/439، الفتاوى الهندية، كتاب الوصايا، الباب الثامن فى وصية الذمى والحربى-6/132، رد المحتار، كتاب الوقف، مطلب قد يثبت الوقف بالضرورة-6/524
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তালীমুল ইসলাম ইনষ্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।