প্রশ্নঃ
মিথ্যা কথা বলে বেচা কেনা করলে এর বিধান কি?? ফিকহি রেফারেন্স জানিয়ে উপকৃত করার অনুরোধ করছি।
From: Rafiqul Islam [email protected]
بسم الله الرحمن الرحيم
উত্তর:
প্রিয় ভাই! মিথ্যা খুবই জঘণ্য একটি পাপ। কবিরা গুনাহ। মিথ্যা বলে ক্রয় বিক্রয় করা মারাত্মক গুনাহ। হাদীসে নবীজি (ﷺ) বলেছেনঃ, আব্দুর রহমান ইবনে আবু বাকরা তার পিতা আবু বাকরা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ তোমাদের আমি সবচেয়ে বড় কবীরা গুনাহ সম্পর্কে অবহিত করব কি? সাহাবীরা বললেনঃ অবশ্যই ইয়া রাসূলাল্লাহ। তিনি বললেনঃ আল্লাহর সঙ্গে শরীক করা, পিতা-মাতার নাফরমানী করা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া কিংবা বলেছেন মিথ্যা কথা বলা। আবু বাকরা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এতবার কথাটি বলতে থাকলেন যে, আমরা ভাবতে লাগলাম, তিনি যদি চুপ করতেন। সুনানে তিরমিজি, হাদীস নং: ২৩০১।
বেচাকেনা, ক্রয় বিক্রয় মূলত বরকতের জন্য করা হয়। মিথ্যা বলার দ্বারা ব্যবসার বরকত নষ্ট হয়ে যায়। তাই মিথ্যা বলে লাভবান হওয়ার চেয়ে সত্য বলে বাহ্যিক ক্ষতিগ্রস্থ হওয়াও উত্তম।
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” التَّاجِرُ الصَّدُوقُ الأَمِينُ مَعَ النَّبِيِّينَ وَالصِّدِّيقِينَ وَالشُّهَدَاءِ
আবু সাঈদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ী নবী, সিদ্দীক ও শহীদগণের সঙ্গে থাকবে। (সুনানে তিরমিজি , হাদীস নং ১২০৯)
অন্য বর্ণনায় আসছে,
রিফাআ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি একবার নবী (ﷺ)–এর সঙ্গে ‘‘মুসল্লা’’–এর দিকে গেলেন। নবী (ﷺ) দেখলেন, লোকেরা বেচা–কেনা করছে। তখন তিনি বললেন, হে ব্যবসায়ীগণ, তারা সকলেই রাসূলূল্লাহ্ (ﷺ)–এর প্রতি সাড়া দিল এবং তাদের ঘাড় ও চোখ তুলে তাঁর দিকে তাকাল। তিনি বললেন, ব্যবসায়ীদের কিয়ামতের দিন ফাজির ও পাপীরূপে উত্থিত করা হবে। তবে সে ব্যতীত, যে আল্লাহকে ভয় করেছে, নেক আমল করেছে এবং সত্য অবলম্বন করেছে। (সুনানে তিরমিজি, হাদীস নং ১২১০)।
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
رِجَالٌ ۙ لَّا تُلۡہِیۡہِمۡ تِجَارَۃٌ وَّلَا بَیۡعٌ عَنۡ ذِکۡرِ اللّٰہِ وَاِقَامِ الصَّلٰوۃِ وَاِیۡتَآءِ الزَّکٰوۃِ ۪ۙ یَخَافُوۡنَ یَوۡمًا تَتَقَلَّبُ فِیۡہِ الۡقُلُوۡبُ وَالۡاَبۡصَارُ ٭ۙ
এমন লোক, যাদেরকে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বেচাকেনা আল্লাহর স্মরণ, নামায কায়েম ও যাকাত আদায় থেকে গাফেল করতে পারে না। তারা ভয় করে সেই দিনকে, যে দিন অন্তর ও দৃষ্টি ওলট-পালট হয়ে যাবে। .(সূরা নুর ৩৭ নং আয়াত। )
অন্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
یٰۤاَیُّہَا الَّذِیۡنَ اٰمَنُوۡا لَا تَاۡکُلُوۡۤا اَمۡوَالَکُمۡ بَیۡنَکُمۡ بِالۡبَاطِلِ اِلَّاۤ اَنۡ تَکُوۡنَ تِجَارَۃً عَنۡ تَرَاضٍ مِّنۡکُمۡ ۟ وَلَا تَقۡتُلُوۡۤا اَنۡفُسَکُمۡ ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ بِکُمۡ رَحِیۡمًا হে মুমিনগণ! তোমরা পরস্পরে একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না, তবে পারস্পরিক সন্তুষ্টিক্রমে কোন ব্যবসায় করা হলে (তা জায়েয)। এবং তোমরা নিজেরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই, আল্লাহ তোমাদের প্রতি পরম দয়ালু। (সূরা নিসা, আয়াত ২৯।) সততার সাথে ব্যবসা করুণ। ইনশাআল্লাহ আল্লাহ তা‘আলা আপনার হালাল ব্যবসায় বারাকাত দান করবেন।
المنهاج شرح صحيح مسلم: (69/1، ط: دار إحياء التراث العربي)
وَأَمَّا الْكَذِبُ فَهُوَ عِنْدَ الْمُتَكَلِّمِينَ مِنْ أَصْحَابِنَا الْإِخْبَارُ عَنِ الشَّيْءِ عَلَى خِلَافِ مَا هُوَ عَمْدًا كَانَ أَوْ سَهْوًا هَذَا مَذْهَبُ أَهْلِ السُّنَّةِ
الدر المختار مع رد المحتار: (باب خيار العيب، 47/5، ط: دار الفكر)
لا يحل كتمان العيب في مبيع أو ثمن؛ لأن الغش حرام (قوله؛ لأن الغش حرام) ذكر في البحر أو الباب بعد ذلك عن البزازية عن الفتاوى: إذا باع سلعة معيبة، عليه البيان وإن لم يبين قال بعض مشايخنا يفسق وترد شهادته
والله أعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
মুহা. শাহাদাত হুসাইন , ছাগলনাইয়া, ফেনী।
সাবেক শিক্ষার্থী: ইফতা বিভাগ
তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
সত্যায়নে
মুফতী লুৎফুর রহমান ফরায়েজী দা.বা.
পরিচালক– তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
আহলে হক্ব বাংলা মিডিয়া সার্ভিস Ahle Haq Media
