প্রশ্ন
নাম ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক
আস্সালামু আলাইকুম হুজুর,
আমি অনেকদিন ধরে একটা বিষয় নিয়ে মানসিক অশান্তিতে আছি। দয়া করে আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলে উপকৃত হতাম। ক্ষমা করবেন প্রশ্নগুলো পরোক্ষভাবে করছি।
১
স্বামী স্ত্রীর ঝগড়ার সময় স্ত্রী যদি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে এতে স্বামী ভয়ে,এবং স্ত্রীকে ভয় দেখানোর জন্য বলে আমি থাকবোনা তোমার বাবাকে আসতে বলো, এখানে এই কথা দ্বারা স্বামীর মনে সাথে সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ করার বা তালাক দেওয়ার নিয়ত না থাকে।
এবং থাকবোনা কথাটা যে কেনায়াবাচক শব্দ স্বামীর জানা না থাকে। অর্থাৎ স্বামীর ধারণায় এটা একটা সাধরণ ভবিষ্যৎবাচক শব্দ, এটা কেনায়া জানলে হয়তো সে এই কথা উচ্চারণই করতনা, এতে কি কোনো সমস্যা হবে?
২
স্বামী স্ত্রীর মাঝে মনোলিন্য হলো যদি স্বামী তার সন্তানের দিক তাকিয়ে বলে এর জন্য কষ্ট হয়, এবং তখন স্বামীর বোন প্রশ্ন করে কেন? তখন স্বামী যদি তার বোনের প্রশ্নের উত্তরে বলে এ সম্পর্কটা টিকবেনা।এখানে স্বামীর নিয়ত ছিলনা । মোট কথা স্বামীর তালাকের নিয়ত ছিলনা।বরং ভবিষ্যতের আশংকা ছিলো হয়তোবা ।এতে সমস্যা হবে?
৩
স্বামীর মাকে নিয়ে যদি দুইজনের মধ্যে ঝামেলা হয়। স্বামী মনে মনে হয়তবা ভবিষ্যতের তালাকের কল্পনা করে হয়তবা কল্পনায় ভাবে স্ত্রী আলাদা থাকে এবং ভাবে তার এক বছরের ছোট ছেলে বড় হয়ে তার বাড়িতে এসেছে (ভবিষ্যতে এসছে)।কল্পনার মধ্যে ছেলেকে দেখে অন্য কেউ প্রশ্ন করে তোমাদের মধ্যে কি(স্বামী স্ত্রীর মধ্যে) হলো? এতটুকু সব কল্পনার ঘটনা।
কল্পনার প্রশ্নের উত্তরে যদি মুখে উচ্চারণ করে বলে পারিনি এখানে পারিনি বলতে ( মায়ের কষ্ট সহ্য করতে পারিনি)। এখানেও স্বামীর নিয়ত না থাকে । তাহলে কি কোনো সমস্যা হবে?
৪
স্ত্রীকে নিয়ে যদি পরিবারের অন্য কোনো সদস্য স্বামীর কাছে বারবার নানা ধরনের অভিযোগ দেয়। তখন স্বামী যদি অতিষ্ঠ হয়ে তার পরিবারের ঐ সদস্যকে বলে, আমি কি করব । তুমি কি চাও আমি তাকে তালাক দিয়ে দেই? এভাবে বল্লে কি কোনো সমস্যা হবে? এখানেও নিয়ত না থাকে।
৫
হুজুর এই এ বিষয়গুলো(১-৪নং প্রশ্ন) নিয়ে এখন বার বার মনের মধ্য কল্পনায় তালাকের বিষয়ে খারাপ ভাবনা আসে, এভাবে একদিন কল্পনার সময় মুখ দিয়ে কি কথা একটা উচ্চারণ করতে গিয়ে অর্ধেক উচ্চারণ করে থেমে যায়। শব্দ গুলো সে স্পষ্ট মনে করতে পারেনা।
হয়তবা এমন কিছু – “আমি পাপি/, জুলুম করেছি/ আল্লাহ ভালো জানেন–। ”এগুলোই যে তাও নিশ্চিত না। ### (((হজুর এ বিষয়টাই( ৫ নং) মূল ওয়াস ওয়াসার কারণ। এটা নিয়ে গুগুল ও ইউটিউবে নানা প্রশ্ন করা হয়। স্বামী প্রশ্ন করে।
যেমন: মনে মনে তালাকের চিন্তা আসলে বা মনে মনে কল্পনায় তালাক হয়েছে ভাবলে। আর মুখে উচ্চারণ করে“ আমি পাপি/, জুলুম করেছি/ আল্লাহ ভালো জানেন, (পারিনি / আল্লাহর সিদ্ধান্তই বড় সিদ্ধান্ত হুজুর এই দুইটা কথার মধ্যে পারিনি শব্দটা ৩ নং প্রশ্নের ৫ নং এ এটা নাই, আর আল্লাহর সিদ্ধান্তই বড় সিদ্ধান্ত এইটা ৫নং প্রশ্নেও নাই কিন্তু প্রশ্ন করার সময় হয়তবা ওয়াসওয়াসার কারণে এই গুলো সহ লিখে।) প্রশ্ন করা। আবার একই কথা দিয়ে প্রশ্ন করে এভাবে, মনে মনের কল্পনা যদি মুখে উচ্চারিত কথা গুলোর মাধ্যমে প্রকাশ পায় অথবা মুখে উচ্চারিত কথা গুলো যদি মনের চিন্তাকে প্রকাশ করলে বা সাপোর্ট করলে কি সমস্যা হয়/হব? আবার যে প্রশ্নগুলো করেছে সে প্রশ্নগুলো নিয়ে ওয়াসওয়াসার সৃষ্টি হলে,আবার এভাবে প্রশ্ন করা হলে যেমন:“মনে মনে তালাকের চিন্তা আসলে বা“ মনে মনে কল্পনায় তালাক হয়েছে ” এভাবে প্রশ্ন করলে কি সমস্যা হয়”।)))
এই কথা গুলো সব ওয়াসওয়াসর কারণে যে প্রশ্ন করা হয় তার অন্তর্ভুক্ত। প্রশ্নগুলোর জন্য কি কোনো সমস্যা হবে।
(নাম ঠিকানা প্রকাশে অনিচ্ছুক) দয়া করে উত্তর দিয়ে উপকৃত করবেন। জাজাকাল্লাহ খাইরান।
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
উপরোক্ত বিবরণ অনুপাতে আপনার স্ত্রীর উপর কোন তালাক পতিত হয়নি। তাই পেরেশান হবার কিছু নেই।
منها شك هل طلق أم لا لم يقع (الأشباه-108، جديد-196)
عدم الشك من الزوج فى الطلاق وهو شرط الحكم بوقوع الطلاق حتى لو شك فيه لا يحكم بوقوعه (بدائعل الصنائع، كتاب الطلاق، فصل فى الرسالة-3\126، جديد-3\199)
يشترط بالاتفاق القصد فى الطلاق، وهو إرادة التلفظ به ولو لم ينو فلا يقع طلاق فقيه يكره ولا طلاق حاك عن نفسه أو غيره لأنه لام يقصد معناه، بل قصد التعليم والحكاية، (الفقه الاسلام وادلته، كتاب الطلاق، باب شروط الطلاق-7/368)
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
ইমেইল– [email protected]