প্রশ্ন
সালাতুল হাজত বলতে কি কোন নামাজ আছে? থাকলে নিয়মটা জানাবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
নিজের বা কারো জন্য যে কোন জায়েজ প্রয়োজন পূর্ণ হবার জন্য যে নামায পড়া হয় সেটাকেই সালাতুল হাজত বা প্রয়োজন পূর্ণতার নামায” বলা হয়।
নিজের বা অন্য কারো কোন জায়েজ প্রয়োজন পূর্ণ হবার জন্য ভালো করে অযু করে দুই রাকাত নামায পড়বে। তারপর হামদ সানা ও দরূদ পাঠের পর হাজতের জন্য হাদীসে বর্ণিত দুআটি পড়বে।
নিচের হাদীসে বিস্তারিত উদ্ধৃত হয়েছে:
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أَوْفَى، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم “ مَنْ كَانَتْ لَهُ إِلَى اللَّهِ حَاجَةٌ أَوْ إِلَى أَحَدٍ مِنْ بَنِي آدَمَ فَلْيَتَوَضَّأْ وَلْيُحْسِنِ الْوُضُوءَ ثُمَّ لْيُصَلِّ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ لْيُثْنِ عَلَى اللَّهِ وَلْيُصَلِّ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ لْيَقُلْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
আবদুল্লাহ ইবনু আবী আওফা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তির আল্লাহ তা’আলার কাছে অথবা কোন আদম সন্তানের কাছে কোন প্রয়োজন রয়েছে সে যেন প্রথমে উত্তমরূপে ওযু করে, তারপর দুই রাকাআত নামায আদায় করে, তারপর আল্লাহ তা’আলার প্রশংসা করে এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি দরূদ ও সালাম পাঠ করে, তারপর এ দু’আ পাঠ করেঃ
لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْحَلِيمُ الْكَرِيمُ سُبْحَانَ اللَّهِ رَبِّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ أَسْأَلُكَ مُوجِبَاتِ رَحْمَتِكَ وَعَزَائِمَ مَغْفِرَتِكَ وَالْغَنِيمَةَ مِنْ كُلِّ بِرٍّ وَالسَّلاَمَةَ مِنْ كُلِّ إِثْمٍ لاَ تَدَعْ لِي ذَنْبًا إِلاَّ غَفَرْتَهُ وَلاَ هَمًّا إِلاَّ فَرَّجْتَهُ وَلاَ حَاجَةً هِيَ لَكَ رِضًا إِلاَّ قَضَيْتَهَا يَا أَرْحَمَ الرَّاحِمِينَ
অর্থাৎ “আল্লাহ ছাড়া কোন ইলাহ নেই, তিনি ধৈর্যশীল ও মহামহিম। মহান আরশের মালিক আল্লাহ তা’আলা খুবই পবিত্র। সকল প্রশংসা সারা বিশ্বের প্রতিপালক আল্লাহ তা’আলার জন্য। (হে আল্লাহ!) আমি তোমার নিকট তোমার রহমত লাভের উপায়সমূহ, তোমার ক্ষমা লাভের কঠিন ওয়াদা, প্রত্যেক ভাল কাজের ঐশ্বর্য এবং সকল খারাপ কাজ হতে নিরাপত্তা চাইছি। হে মহা অনুগ্রহকারী! আমার প্রতিটি অপরাধ ক্ষমা কর, আমার প্রতিটি দুশ্চিন্তা দূর করে দাও এবং যে প্রয়োজন ও চাহিদা তোমার সন্তোষ লাভের কারণ হয় তা পরিপূর্ণ করে দাও।”[সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-৪৭৯]
এটাই হাদীস সম্মত সালাতুল হাজতের নামায ও দুআ। বাকি মাশায়েখদের অভিজ্ঞতায় সালাতুল হাজত এর একটি পদ্ধতি এমনো পাওয়া যায় যে, ইশার নামাযের পর চার রাকাত নামায আদায় করা।
যে চার রাকাতের প্রথম রাকাতে সূরা ফাতিহা একবার এবং আয়াতুল কুরসী তিনবার পড়বে। আর বাকি তিন রাকাতে সূরা ফাতিহার সাথে সূরা ইখলাস ও সূরা ফালাক ও নাস একবার করে পড়বে।
মাশায়েখগণ বলেন: আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে, এভাবে নামায পড়ে আমাদের প্রয়োজন পূর্ণ হতে দেখেছি।
وأما فى التجنيس وغيره فذكر أنها أربع ركعات بعد العشاء، وإن فى الحديث المرفوع يقرأ فى الأولى الفاتحة مرة وآية الكرسى ثلاثا، وفى كل من الثلاثة الباقية يقرأ الفاتحة والإخلاص والمعوذتين مرة مرة، كن له مثلهم من ليلة القدر، قال مشائخنا: صلينا هذه الصلاة فقضيت حوائجنا الخ (رد المحتار، زكريا-2/473)
তবে প্রথম পদ্ধতিটিই হাদীস সম্মত। দ্বিতীয়টির পক্ষে হাদীসে দলীল পাওয়া যায় না।
والله اعلم بالصواب
উত্তর লিখনে
লুৎফুর রহমান ফরায়েজী
পরিচালক-তা’লীমুল ইসলাম ইনস্টিটিউট এন্ড রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা– জামিয়া ইসলামিয়া দারুল হক লালবাগ ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: জামিয়াতুস সুন্নাহ কামরাঙ্গিরচর, ঢাকা।
উস্তাজুল ইফতা: কাসিমুল উলুম আলইসলামিয়া, সালেহপুর আমীনবাজার ঢাকা।
পরিচালক: শুকুন্দী ঝালখালী তা’লীমুস সুন্নাহ দারুল উলুম মাদরাসা, মনোহরদী নরসিংদী।
শাইখুল হাদীস: জামিয়া ইসলামিয়া আরাবিয়া, সনমানিয়া, কাপাসিয়া, গাজীপুর।
ইমেইল– [email protected]